যশোরে হত্যায় মামলায় একজনের ফাঁসি
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, যশোর
প্রকাশিত: ১২:৪৯ এএম, ৩ জুন ২০২২ শুক্রবার
জেলা সদর উপজেলার সালতা গ্রামের মিনারুল হত্যা মামলায় ওসমানপুর গ্রামের হাফিজুর রহমানের মৃত্যুদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার যশোরের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ ইখতিয়ারুল ইসলাম মল্লিক এ আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পিপি এম. ইদ্রিস আলী। মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামি হাফিজুর রহমান ওসমানপুর গ্রামের চান্দালী মোল্লার ছেলে। নিহত মিনারুল সালতা গ্রামের মৃত সদর আলী মোল্লার ছেলে।
আদালত সূত্র জানায়, দন্ডপ্রাপ্ত হাফিজুর রহমানের ছোট ভাই আব্দুল মান্নানের বন্ধু ছিলেন নিহত মিনারুল। মান্নান বাড়িতে দর্জির কাজ করতেন। মিনারুল দর্জির কাজ শেখার জন্য মান্নানের বাড়িতে যেতেন। এ যাতায়াতের ফলে হাফিজুরের প্রথম স্ত্রী সাবিনার সাথে তার পরকীয়ার সম্পর্ক গড়ে উঠে, যা শারীরিক সম্পর্কে গড়ায়। বিষয়টি একদিন হাফিজুর দেখে ফেলেন। ঘটনার দিন হাফিজুরের কাছে ক্ষমা চান মিনারুল। হাফিজুর এ বিষয়টি আর কাউকে বলেননি। কিন্তু মনের দুঃখে তার স্ত্রী সাবিনাকে তালাক দেন এবং পরে ডলি নামে আরেকজনকে বিয়ে করে সংসার শুরু করেন। এরপর নিহত মিনারুল তার গ্রামের বিলকিস নামে আরো এক নারীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলেন। এ ঘটনায় দায়ের করা মামলায় মিনারুল হাজতবাসও করেন। এ সব ঘটনায় হাফিজুরের আরো বেশি ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। তিনি মিনারুলকে তখন থেকেই হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরবর্তীকে হাফিজুর আরো বেশি করে মিনারুলের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলে।
২০১৯ সালের ১৪ আগস্ট রাতে প্রথমে মিনারুলের বাড়ির পাশের একটি বাগানে গিয়ে ধারালো অস্ত্র রেখে আসেন হাফিজুর। রাত ১০টার দিকে ফের হাফিজুর তার বাড়িতে যান। এ সময় মিনারুলকে ইশারায় ডেকে বাড়ির পাশে ওই বাগানে নিয়ে যান। এরপর ওই দা দিয়ে হাফিজুর তাকে কুপিয়ে হত্যা করে চলে যান।
এ ঘটনায় মিনারুলের বড় ভাই আক্তারুজ্জামান অজ্ঞাত আসামি করে কোতোয়ালি থানায় মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করেন পিবিআই এসআই জিয়াউর রহমান। পিবিআই মিনারুলের ঘটনার নয় দিনের মাথায় আটক এবং হত্যায় ব্যবহৃত দা উদ্ধার করেন। ২৫ আগস্ট আদালতে সোপর্দ করলে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করে জবানবন্দি দেন। সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গৌতম মল্লিক তার জবানবন্দি গ্রহণ শেষে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। সেই থেকেই হাফিজুর কারাগারে আটক রয়েছেন। একই বছরের ৭ ডিসেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আদালতে চার্জশিট জমা দেন। একপর্যায় ২৩ জন স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার আসামির উপস্থিতিতে আদালত এ মামলার রায় ঘোষণা করেন।