কোভ্যাক্সের আওতায় সবচেয়ে বেশি টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ: ইউনিসেফ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ১১:১২ পিএম, ৩১ মে ২০২২ মঙ্গলবার আপডেট: ১১:৫৭ পিএম, ৩১ মে ২০২২ মঙ্গলবার
ফাইল ছবি
গত এক বছরে ইউনিসেফ বাংলাদেশে কোভ্যাক্সের আওতায় ১৯ কোটির বেশি ডোজ কোভিড-১৯ টিকা সরবরাহ করেছে। এখন পর্যন্ত কোভ্যাক্সের আওতায় সবচেয়ে বেশি টিকা পেয়েছে বাংলাদেশ।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের টিকা পৌঁছে দেওয়ার এক বছর পূর্তির দিনে বাংলাদেশ কোভ্যাক্সের আওতায় কোভিড-১৯ টিকা প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিশ্বে প্রথম স্থানটি ধরে রেখেছে। আজ ইউনিসেফ-এর এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।
ইউনিসেফ জানায়, কোভ্যাক্স হচ্ছে এপিডেমিক প্রিপেয়ার্ডনেস ইনোভেশন, ভ্যাকসিন অ্যালায়েন্স-গাভি ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার নেতৃত্বাধীন একটি বৈশ্বিক উদ্যোগ, যার আওতায় টিকা পৌঁছে দেওয়ার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে ইউনিসেফ।
বাংলাদেশ এখন পর্যন্ত যত টিকা পেয়েছে তার ৬২ শতাংশেরও বেশি পেয়েছে কোভ্যাক্সের মাধ্যমে উল্লেখ করে সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, কোভ্যাক্সের লক্ষ্য হলো বিশ্বব্যাপী সবাই যাতে সমতার ভিত্তিতে কোভিড-১৯ টিকা পায় তা নিশ্চিত করা।
ইউনিসেফ জানায়, বাংলাদেশে ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে কোভিড-১৯ টিকাদান দেওয়া শুরু হয়। ইউনিসেফ বাংলাদেশে প্রথম কোভ্যাক্সের টিকা সরবরাহ করে ২০২১ সালের ১ জুন। এমন এক সময়ে এই টিকা সরবরাহ করা হয় যখন বাংলাদেশের মাত্র ৪ শতাংশ জনগোষ্ঠী সম্পূর্ণরুপে টিকা পেয়েছিল। এক বছর পর সরকার, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও অন্যান্য অংশীদারের মধ্যে একটি শক্তিশালী অংশীদারিত্বের কল্যাণে বাংলাদেশ বিস্ময়করভাবে ১১ কোটি ৭০ লাখ মানুষকে পুরোপুরি দুই ডোজ টিকা দিতে সক্ষম হয়েছে, যা দেশটির মোট জনসংখ্যার ৬৯ শতাংশ।
ইউনিসেফ আরও জানায়, কোল্ড চেইন এবং আল্ট্রা-কোল্ড চেইন ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা, গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ পৌঁছে দেওয়া, চাহিদা তৈরি করা, উপাত্ত ব্যবস্থাপনায় সহায়তা প্রদান এবং টিকাদানের জন্য সক্ষমতা বাড়ানোর মাধ্যমেও ইউনিসেফ সরকারের কোভিড-১৯ মোকাবিলা কার্যক্রমে সহায়তা দিয়েছে। এই বিনিয়োগগুলো কোভিড-১৯ সংকটের পর সামনের বছরগুলোতেও বাংলাদেশের মানুষকে অব্যাহতভাবে সেবা দিয়ে যাবে। এগুলো শিশুদের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ, যারা হাম ও পোলিওর মতো প্রাণঘাতী রোগ প্রতিরোধে টিকা নিয়েছে।
বাংলাদেশে ইউনিসেফের প্রতিনিধি মি. শেলডন ইয়েট বলেন, “রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি এবং টিকার ন্যায়ভিত্তিক সরবরাহ বজায় থাকলে কী অর্জন করা যেতে পারে বাংলাদেশের কোভিড-১৯ টিকা গ্রহণ এবং টিকাদান অব্যাহত রাখার সক্ষমতাই তার বড় প্রমাণ। দ্রুততার সঙ্গে এবং নিরাপদে দেশের প্রতিটি জায়গায় লাখ লাখ মানুষের টিকা প্রয়োগ অসম্ভবের চেয়ে কম কিছু নয়।”
জুনে কোভিড-১৯ টিকার বুস্টার ডোজ প্রদানের একটি ক্যাম্পেইন পরিকল্পনা করা হয়েছে।
বাংলাদেশে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিনিধি ডা. বারদান জং রানা বলেন, ‘জনগোষ্ঠীর ৬৯ শতাংশকে ইতোমধ্যে পুরো মাত্রায় টিকাদান সম্পন্ন করা বাংলাদেশ ২০২২ সালের জুনের মধ্যে ৭০ শতাংশ জনগোষ্ঠীকে টিকাদানের যে বৈশ্বিক টার্গেট নিয়েছে তা অর্জনের খুব কাছাকাছি অবস্থান করছে।’ কোভ্যাক্সের সহায়তা ছাড়া এই সাফল্য সম্ভব হতো না উল্লেখ করে তিনি আরও বলেন, ‘টিকাদানের চলমান গতি আমাদের বৈশ্বিক জরুরি স্বাস্থ্য অবস্থা হিসেবে কোভিড-১৯ এর সমাপ্তি দেখার প্রেরণা যোগায়। আসুন আমরা এটাও ভুলে যেন না যাই যে, মহামারীটি সর্বত্র শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত কোথাও শেষ হবে না।’