অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

সিলেটে বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত, ডুবে দুইজনের মৃত্যু

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, সিলেট

প্রকাশিত: ০৯:৪২ পিএম, ১৯ মে ২০২২ বৃহস্পতিবার  

জেলার সার্বিক বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তিত রয়েছে। নদনদীর পানি এখনও বিপৎসীমার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। পানিবন্দি রয়েছেন জেলার অন্তত ১২ লাখ মানুষ। এদিকে, কানাইঘাট উপজেলায় বন্যার পানিতে ডুবে নিখোঁজ হওয়া দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সিলেটে বিভিন্ন উপজেলায় থেমে থেমে বৃষ্টি হচ্ছে। এতে দুর্ভোগ বেড়েছে। জেলার ১৩ উপজেলার অন্তত ৭৫টি ইউনিয়ন বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। নগরের পানিবন্দি মানুষ খাবার, বিশুদ্ধ পানি ও শৌচাগার সংকটে বাসা ছেড়ে অন্যত্র আশ্রয় নিচ্ছেন।

জকিগঞ্জ, কানাইঘাট, গোয়াইনঘাট, জৈন্তাপুর, কোম্পানিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ ও বিয়ানীবাজার উপজেলায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। বন্যা কবলিত এলাকাসমূহে দুর্ভোগ চরম আকার ধারণ করছে।

বন্যার্তদের জন্য সরকারি ত্রাণ তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে। জেলা প্রশাসন জানিয়েছে, জেলায় এখন পর্যন্ত ১৪৯ মেট্রিক টন চাল, নগদ ৫ লাখ ৩৪ হাজার টাকা ও ২০ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণ করা হয়েছে। ২৭৪টি আশ্রয় ও ২২০টি গবাদি পশুর জন্য পৃথক আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। প্রয়োজনীয় ঔষধ, খাবার স্যালাইন ও পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট সরবরাহ করা হচ্ছে। পাশাপাশি বেসরকারি উদ্যোগে বন্যাদুর্গত মানুষের জন্য সহযোগিতা অব্যাহত রয়েছে।

এদিকে, জেলার কানাইঘাটে সুরমা নদী ও হাওরে ডুবে নিখোঁজ দুই ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। নিহতরা হলেন উপজেলার লক্ষীপ্রসাদ পূর্ব ইউনিয়নের নক্তিপাড়া গ্রামের ফয়জুর রহমানের পুত্র ব্যবসায়ী হাবিবুর রহমানের (৫০) ও দক্ষিণ বাণীগ্রাম ইউনিয়নের উত্তর বাণীগ্রামের (ছত্রপুর) ছইফ উল্লাহর পুত্র আব্দুল্লাহ (৩৫)। হাবিব গত সোমবার রাত সাড়ে ১০টার দিকে কানাইঘাট উপজেলার মমতাজগঞ্জ বাজারের পাশে সুরমা নদীতে নৌকা ডুবে নিখোঁজ হন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার সুরমা নদীর খুলুরমাটি নামক স্থানে তার লাশ পাওয়া যায়। আর আব্দুল্লাহ গতকাল বুধবার উপজেলার ছত্রপুর গ্রামের একটি বিলে মাছ ধরতে গিয়ে নিখোঁজ হন। আজ স্থানীয় পেকু বিলে তার লাশ পাওয়া যায়।

পানি উন্নয়ন বোর্ড সিলেট জানিয়েছে, উজানের ঢল কিছুটা কমেছে।  বৃহস্পতিবার সুরমা নদীর কানাইঘাট পয়েন্টে ১২ সেন্টিমিটার পানি কমেছে। এখনও বিপৎসীমার ১০৬ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে। সিলেট পয়েন্টে এখনও পানি কমেনি। বিপৎসীমার ৪৭ সেন্টিমিটার উপরে রয়েছে। কুশিয়ারা নদীর অমলশিদ পয়েন্টে বিপৎসীমার ১৭৫ সেন্টিমিটার ও শেওলা পয়েন্টে ৫৮ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।

আবহাওয়া অধিদপ্তর সিলেটের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী জানিয়েছেন, আজ সিলেটে বজ্রসহ প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২১ ও ২২ মে পর্যন্ত সিলেট অঞ্চলে বৃষ্টি হবে। ২৩, ২৪, ২৫ তারিখ বৃষ্টি কমতে পারে। সিলেট ও ভারতের মেঘালয়-আসাম-ত্রিপুরা রাজ্যে বৃষ্টি কমলে সিলেটে বন্যা পরিস্থিতির দ্রুত উন্নতি হতে পারে।