ফেলবেন না কুমড়োর বীজ, করোনাকালে এর গুরুত্ব আছে
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:২৩ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০২০ শনিবার আপডেট: ০৫:২৮ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০২০ শনিবার
করোনাকালে আরও বেশি করে রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে বলছেন চিকিৎসকরা। অধিক হারে শাকসবজি খেতে বলছেন তারা। তবে এমন একটি সবজি রয়েছে, যেটির বীজ ফেলে দেন অনেকে। কিন্তু পুষ্টিবিদরা বলছেন, খাবারে সেটি থাকলে ম্যাজিকের মতো কাজ করে।
কুমড়ো খেতে চান না অনেকে। আবার খেলেও এর বীজ ফেলে দেন। এখানেই যত সর্বনাশ ঘটে। কারণ, এতে রয়েছে শরীরের অপরিহার্য চর্বি। ওমেগা থ্রি ফ্যাটি অ্যাসিডের অন্যতম উৎস এটি। দেহে যা এমনি তৈরি হয় না। তাই খাওয়ার মাধ্যমে এ বীজ শরীরে প্রবেশ করাতে হবে।
প্রতিদিন কুমড়োর বীজ খেলে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া ঠিক থাকে। এটি ভিটামিন বি, ম্যাগনেসিয়াম, আয়রন সমৃদ্ধ। এসব উপাদান রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে। প্রদাহ কমাতে এবং স্থূলতা রুখতেও সাহায্য করে।
কুমড়োয় প্রচুর পরিমাণে পথ্য ফাইবার থাকে। এর মাত্র ১০০ গ্রাম বীজে তা বিদ্যমান ১৮ গ্রাম। একজন মানুষের দৈনিক চাহিদার ৭২ শতাংশ পূরণ করে এটি।
কোলনের ভালো ব্যাকটেরিয়ায় খাদ্যের জোগান দেয় ফাইবার। অণুজীবের ভারসাম্য বজায় রাখে এটি। সংক্রমণ রোগেরও উপশম করে এ বীজ।
ভালো ও খারাপ কোলেস্টেরল তৈরি হয় লিভারে। দুটিই ধমনীর প্রাচীরে উৎপন্ন। ফলে ব্লকেজ হয়ে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে। খারাপ কোলেস্টেরল সরিয়ে ভালোটি তৈরিতে ভূমিকা রাখে কুমড়োর বীজ। দুইয়ের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করে এটি।
এতে থাকে পিইউএফএ ও লিপোফিলিক অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। তাই তা স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী। এ বীজ র্যাডিক্যাল ধ্বংস করে।
উদ্ধৃতিসমূহ
ভারতীয় পুষ্টিবিদ সোমা চক্রবর্তী বলেন, অক্সিডেশনের মাধ্যমে দেহকোষের প্রোটিন ও ডিএনএ এবং সেল মেমব্রেনের ইলেকট্রন ‘চুরি’ করে র্যাডিক্যাল। এর মোকাবেলা করে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট।
দেশটির মেডিসিন চিকিৎসক অরিন্দম বিশ্বাস বলেন, কুমড়োর বীজে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট থাকে। স্বাভাবিকভাবেই রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পায়। বিশেষ করে ঠাণ্ডা লাগা, জ্বর হওয়া, ক্লান্ত হয়ে পড়ার হাত থেকে রক্ষা করে।
এ সবজির বীজে থাকে সেরোটনিন। এটি একধরনের নিউরোকেমিক্যাল। একে বলা হয় প্রাকৃতিক ঘুমের ওষুধ। তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে ওষুধের পরিবর্তে এটি খেতে পারেন। এছাড়া আর্থারাইটিসের ব্যথায় এর তেল মালিশ করলে উপকার পাওয়া যায়।
এতে প্রচুর পরিমাণে জিঙ্ক থাকে। সেটি প্রস্টেটের সমস্যা দূরে রাখে। ইনসুলিনের কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণেও অবদান রয়েছে কুমড়োর বীজের। কারণ, এটি অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে।
আরেকটি কারণে এর গুরুত্ব আছে। এতে রয়েছে কিউকারবিটিন। এছাড়া ভিটামিন সি থাকার কারণে চুলের বৃদ্ধি হয়।
যেভাবে খাবেন
সোমা চক্রবর্তী বলেন-কম ক্যালরি, ভরপুর পুষ্টিতে ভরা কুমড়োর বীজ ফেলে দেবেন না। বরং এটি বেটে রান্নায় ব্যবহার করুন। ছিটিয়ে দিন সালাদে কিংবা স্যুপেও। তবে এ বীজ অল্প সেঁকে স্ন্যাক্স হিসেবে খেতে পারলে সবচেয়ে ভালো।