অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

হুয়াওয়ের সিডস ফর দ্যা ফিউচার বাংলাদেশ উদ্বোধন

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৪:৪৭ পিএম, ১৮ এপ্রিল ২০২২ সোমবার  

শীর্ষস্থানীয় আইসিটি অবকাঠামো প্রদানকারী হুয়াওয়ের ফ্ল্যাগশিপ প্রোগ্রাম ‘সিডস ফর দ্যা ফিউচার ২০২২, বাংলাদেশ’ -এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, এমপি।

গতকাল হোটেল আমারি ঢাকা-এর ইডেন গ্র্যান্ড বলরুমে অনুষ্ঠানটি উদ্বোধন করেন শিক্ষা উপমন্ত্রী। আইসিটি বিষয়ে আগ্রহী দেশের সকল শিক্ষার্থীদের আরও আগ্রহী করে তুলতে এবং এই শিল্পখাত সম্পর্কে সম্যক ধারণা দিতে বাংলাদেশে ২০১৪ সাল থেকে প্রতি বছর হুয়াওয়ে এই প্রোগ্রামটি আয়োজন করে থাকে।

 অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী, এমপি-এর পাশাপাশি হুয়াওয়ে বাংলাদেশ (টেকনোলজিস) লিমিটেডের সিইও প্যান জুনফেং এবং হুয়াওয়ে বাংলাদেশের বোর্ড মেম্বার জেসন লি জংশেং, অনেক বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ, হুয়াওয়ের অন্যান্য উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা, ইন্ডাস্ট্রি স্টেকহোল্ডার এবং অংশগ্রহণকারীরাও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

এপ্রিলের শুরুতে এই প্রোগ্রামটির নিবন্ধন প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে এবং ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে কয়েকটি রোডশো অনুষ্ঠিত হয়েছে। এই বছর নয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এই প্রোগ্রামে অংশ নিচ্ছে এবং সর্বশেষ বিজয়ীরা পরবর্তী পর্যায়ে বিভিন্ন দেশের অন্যান্য বিজয়ীদের সাথে গ্লোবাল প্ল্যাটফর্মে অংশগ্রহণ করবে। এর মাঝে তারা হুয়াওয়ের একটি গ্লোবাল ট্রেনিংয়েও অংশগ্রহণ করবে।

উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে শিক্ষা উপমন্ত্রী এমপি মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, “আমাদের এখানে অনেক দেশের অনেক প্রযুক্তি কোম্পানি আছে যারা বাংলাদেশে ব্যবসা করছে। কিন্তু খুব কম প্রতিষ্ঠানই শুধুমাত্র সেই ব্যবসার তাগাদা থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের তরুণদের, আমাদের পরবর্তী প্রজন্মকে দক্ষ হতে সহায়তা করছে। হুয়াওয়ে এক্ষেত্রে অন্যদের থেকে আলদা হয়ে তরুণদের উন্নয়নে কাজ করে যাচ্ছে। তাই আমি হুয়াওয়েকে ধন্যবাদ জানাতে চাই।”

তিনি আরও বলেন, “অন্য আর একটি বিষয় হল, এই সিডস ফর দ্যা ফিউচার প্রোগ্রাম শুধুমাত্র স্টেম (STEM) নয়, নন-স্টেম (Non-STEM) শিক্ষার্থীদের নিয়েও কাজ করে। এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ; কারণ প্রায়ই আমরা দেখতে পাই যে নন-স্টেম (Non-STEM) শিক্ষার্থীরাও দারুণ সব উদ্ভাবনী ধারণা নিয়ে আসে। আর আমরা এখন বিশ্বব্যাপী যে প্রযুক্তি উদ্যোক্তাদের দেখতে পাই তাদের অনেকেই সামাজিক বিজ্ঞান থেকে পড়াশোনা করে এসেছেন।”

হুয়াওয়ের সিইও প্যান জুনফেং বলেছেন, “তরুণদের জ্ঞান আহরণ এবং চিন্তা-চেতনা বিকাশের জন্য প্ল্যাটফর্ম তৈরির লক্ষ্যে হুয়াওয়ে বিভিন্ন প্রোগ্রামের আয়োজন করে আসছে। ‘সিডস ফর দ্যা ফিউচার’ এমন একটি প্রোগ্রাম যেখানে অংশগ্রহণকারীরা সরাসরি বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে ইন্ডাস্ট্রির কাজ সম্পর্কে জানতে পারে এবং তাদের নিজস্ব দক্ষতা যাচাই করতে পারে। ডিজিটাল বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়নে ‘সিডস ফর দ্য ফিউচার’-এর মতো প্রোগ্রাম অনেক গুরুত্ব বহন করে; এবং আমরা অনেক খুশি যে এমন একটি প্রোগ্রাম আমরা এদেশের জন্য নিয়ে আসতে পেরেছি।”

রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স এন্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের বিভাগীয় প্রধান, প্রফেসর ডক্টর মোঃ আল মামুন বলেন, “শিক্ষার্থীদের মেধার এই পরিচর্যা অব্যাহত রাখাটা জরুরী। সিডস ফর দ্যা ফিউচারের মতো প্রোগ্রামের শিক্ষার্থীদের ঠিক সেই জায়গাটায় সাহায্য করছে।”

আহসানুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অফ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ডক্টর মুহাম্মদ ফজলে এলাহী বলেন, “আমি হুয়াওয়েকে ব্যক্তিগতভাবে আমার কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই। এবং বিভিন্নভাবে তরুণদের মেধার বিকাশ ও ক্ষমতায়নের সুযোগ তৈরি করে এমন একটি প্রোগ্রামের আয়োজন করার জন্য তাদের অভিনন্দন জানাই। এই প্রোগ্রামটি শিক্ষার্থীদের কেবল তাদের সম্ভাবনাগুলো খুঁজে নিতেই সাহায্য করবে না বরং ভবিষ্যতের উপযুক্ত আইসিটি দক্ষতা এবং গুণাবলী বিকাশের সঠিক পথে রাখতে সাহায্য করবে। আমাদের শিক্ষার্থীদের অগ্রগতির জন্য তৈরি এই প্রোগ্রামের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে ধন্যবাদ জানাই।”

এই বছর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট), চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট), খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট), রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (রুয়েট), ইসলামিক ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি (আইইউটি), ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি, ইস্ট-ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি (ইডব্লিউইউ) এবং আহসানুল্লাহ ইউনিভার্সিটি অব সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি (এইউএসটি) প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করছে।

উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে একটি ভালো আইসিটি ইকোসিস্টেম গড়ে তুলতে এবং দেশকে ডিজিটাল রূপান্তরের সুফল পেতে বিভিন্ন উপায়ে অবদান রাখছে হুয়াওয়ে। ২০০৮ সালে থাইল্যান্ডের চালু করার মধ্য দিয়ে বিশ্বব্যাপী ‘সিডস ফর দ্যা ফিউচার’ প্রোগ্রামের যাত্রা শুরু করে হুয়াওয়ে। এখন পর্যন্ত, এই প্রোগ্রামটি বিশ্বব্যাপী ১৩৭টি দেশে বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বিশ্বের প্রায় ১২,০০০ শিক্ষার্থী এবং ৫০০ -এরও বেশি বিশ্ববিদ্যালয় এই উদ্যোগের মাধ্যমে উপকৃত হয়েছে।