ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন পূরণ হলো ঝুমার
ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট, নান্দাইল (ময়মনসিংহ)
প্রকাশিত: ০২:৫৯ পিএম, ১১ এপ্রিল ২০২২ সোমবার
ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করা। তার সেই অদম্য ইচ্ছা আজ পূরণ হতে চলেছে। ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় মেধাক্রমে ৭৩.০৫ স্কোর পেয়ে মানিকগঞ্জের কর্ণেল মালেক মেডিকেল কলেজে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন ময়মনসিংহের নান্দাইলের মেধাবী ছাত্রী আইরিন আক্তার ঝুমা। এমবিবিএস ভর্তি পরীক্ষায় উত্তীর্ণের ফলাফল ঘোষণার পর
আইরিন আক্তার ঝুমার পরিবার,নিজ গ্রাম কুতুবপুর ও নানার বাড়ি বীরকামট খালী গ্রামজুড়ে বইছে খুশির ব’ন্যা।
ঝুমা উপজেলার মোয়াজ্জেমপুর ইউনিয়নের কুতুবপুর গ্রামের মো.আব্দুল হান্নান ও হাদিসা দম্পতির মেয়ে।তিন মেয়ে সন্তানের মধ্যে ঝুমা সবার ছোট।ছোটবেলা থেকেই নানার বাড়ি বীরবেতাগৈর ইউনিয়নের বীরকামট খালী
গ্রামেই বড় হয়েছেন আইরিন আক্তার ঝুমা।
অদম্য ইচ্ছাশক্তিই সফলতার পথ দেখিয়েছে ঝুমাকে।শিক্ষাজীবন জুড়েই আর্থিক দুশ্চিন্তা থাকলেও ক্ষুদে ব্যবসায়ী পিতার দৃঢ় মনোবল এবং মায়ের অদম্য চাওয়া তাকে সাহস যুগিয়েছে।মেধার জোরে সব বাধা জয় করে মেডিকেলে পড়ার সুযোগ পেয়েছেন তিনি।
ঝুমা ছোটবেলা থেকেই অ’ত্যন্ত মেধাবী। প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা,জেএসসি, এসএসসি ও এইচ.এস সি পরীক্ষায় গোল্ডেন এ প্লাস ও বৃত্তি পেয়ে সাফল্যের সাথে উর্ত্তীণ হয়েছেন।
মেধাকে কেউ আটকাতে পারে না তার উজ্জল দৃষ্টান্ত হল আইরিন আক্তার ঝুমা। মেডিকেলে ভর্তির সুযোগ পাওয়ায় গর্বিত তার বিদ্যাপীঠ, শিক্ষক ও এলাকার লোকজন।
স্থানীয় বীরকামট খালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে ২০১৩ সালে পিএসসি, বীরকামট খালী জে.বি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ২০১৬ সালে জেএসসি,২০১৯ সালে এসএসসি এবং ময়মনসিংহ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ থেকে ২০২১ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ঝুমা।
জে.বি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আব্দুল হাকিম বলেন,তাসলিমা ছোটবেলা থেকেই মেধাবী। সে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা, জেএসসি,এসএসসি ও এইচ.এস সি পরীক্ষায় বৃত্তিসহ গোল্ডেন এ প্লাস পেয়ে সাফল্যের সাথে উর্ত্তীণ হয়েছে।
তিন বোনের মধ্যে তাসলিমার বড় বোন নাজমীন আক্তারা হুমা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে মাস্টার্স করেছেন।তিনি ৪১তম বিসিএস পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।মেঝোবোন নাসরিন আক্তার রিমা সমাজবিজ্ঞানে অনার্স করেছেন।
পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম ব্যক্তি ঝুমার পিতা একজন ব্যাবসায়ী। রাজধানী ঢাকায় সাপ্লাইয়ের ব্যবসা করেন তিনি। কষ্টে উপার্জিত অর্থে কোনরকম চলে তার সংসার। বহু কষ্ট করে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা করিয়েছেন তিনি।
ঝুমার পিতা আব্দুল হান্নান ও মা হাদিসা আক্তার বলেন,আল্লাহর অশেষ রহমত ও শিক্ষকদের সহযোগীতায় আমাদের সন্তান ভাল ফল করতে পেরেছে।পাশাপাশি ঝুমার নান-নানী আর্থিকভাবে অনেক সহযোগীতা করেছেন। এ জন্যে মহান আল্লাহর কাছে শোকরিয়া আদায় করছি।
ফল প্রকাশের পর থেকেই আত্মীয়-স্বজন থেকে শুরু করে শিক্ষক,সহপাঠী ও এলাকাবাসীর শুভেচ্ছায় সিক্ত হচ্ছেন আইরিন আক্তার ঝুমা। এতে আপ্লুত তার বাবা-মা। ঝুমার মা হাদিসা আক্তার বলেন,আমার মেয়ে মানবিক চিকিৎসক হোক,এটিই আমার চাওয়া।
মেধাবী আইরিন আক্তার ঝুমা বলেন,এই সাফল্যের পেছনে সবচেয়ে বড় অবদান আমার মায়ের। আমি ছোট থেকেই মানুষের সেবা করার লক্ষ্য নিয়ে লেখাপড়া করে চলেছি। মহান আল্লাহ আমার সেই ইচ্ছা পূরণ করেছেন। আমি যেন সফলতার সাথে মেডিকেলে লেখাপড়া শেষ করে চিকিৎসা সেবার মাধ্যমে মানুষের কল্যাণে কাজ করতে পারি এবং বাবা-মায়ের আশা পূরণ করতে পারি সে জন্য সকলের নিকট দোয়া কামনা করছি।