ফুসফুস ক্যান্সার: অধূমপায়ীরাও সমান ঝুঁকিতে
স্বাস্থ্য ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:০১ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০২০ সোমবার আপডেট: ০২:৪৪ পিএম, ৯ নভেম্বর ২০২০ সোমবার
পৃথিবীতে এখন ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্তের হার অনেক বেশি। এই ক্যান্সারের কারণ হিসেবে প্রধানত দায়ী করা হয় ধূমপানকে। তাই ধূমপান ছেড়ে দেয়া বা কমিয়ে দেয়াকে ফুসফুস ক্যান্সারের সম্ভাব্য ঝুঁকি কমানোর সেরা উপায় হিসেবে বিবেচনা করেন বিশেষজ্ঞরা।
তবে কেবল ধূমপায়ীরাই এই রোগের ঝুঁকিতে আছেন এমনটা নয়, বরং অধূমপায়ীরাও সমান ঝুঁকিতে আছেন।
ভারতের বিখ্যাত ফরটিস হাসাপাতালের রেডিয়েশন অনকোলজির সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আশু অভিষেক বলেন, ‘আমাদের কাছে ফুসফুস ক্যান্সারের যত রোগী আসে তার মধ্যে ২৫ শতাংশই অধূমপায়ী। হয় তারা জীবনে ধূমপান করেননি অথবা ১০০ এর কম সিগারেট খেয়েছেন। যা থেকে বোঝা যায় অধূমপায়ীদের ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও অনেক বেশি।’
ডা. অভিষেক এর পেছনে কিছু কারণও উল্লেখ করেছেন।
পরোক্ষ ধুমপান
অধূমপায়ী ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে প্রধান কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় পরোক্ষ ধূমপানকে। অর্থাৎ কেউ ধূমপান করলে তার পাশে থাকা অধূমপায়ীও বাতাস থেকে নিকোটিন ও বিষাক্ত পদার্থ গ্রহণ করেন। ডা. অভিষেক বলেন, ক্যান্সারের এক্সপোজার সিগারেট, সিগারেট বা হুকা পোড়ানোর সময় নির্গত ধোঁয়া থেকেই হতে পারে।
বায়ু দূষণ
বিশেষ করে শীতকালে বৃষ্টি না হওয়ায় শহরের বাসিন্দারা বায়ু দূষণে বেশি ভোগেন। অনেক সময় বাতাসে প্রতি নিশ্বাসে ২.৫ একিউআই (বায়ুর মান পরিমাপের একক) গ্রহণ করে মানুষ। ডা. আশিক জানান, এমন সময় বায়ুতে বিপুল পরিমান ইন্ড্রাস্ট্রিয়াল বর্জ্য, গাড়ির জ্বালানির পোড়া ধোঁয়া থাকে। অনেক গবেষণায় দেখা যায় দিনে কেউ যদি ৯০০ থেকে ১ হাজার একিউআই গ্রহণ করেন তবে তা একদিনে ৪০-৪৫ টি সিগারেট খাওয়ার সমান।
পেশাগত ঝুঁকি
কিছু পেশায় মানুষকে বিষাক্ত রাসায়নিক দ্রব্য ও গ্যাস নিয়ে কাজ করতে হয়। যেমন রঙমিস্ত্রি, রাসায়নিক কারখানা, গ্লাস কারখানা, প্রিন্টিং কারখানার শ্রমিক। তাদের পেশাগত কারণেই বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সারের ঝুঁকি দিনদিন বাড়তে পারে। তারমাঝে ফুসফুস ক্যান্সার অন্যতম।
জিনগত প্রবণতা
স্তন ক্যান্সারের মতো না হলেও, নির্দিষ্ট কিছু জিনের পরিবর্তনের ফলে ভাইবোনদের বা পরিবারের ভবিষ্যত প্রজন্মের মাঝে ফুসফুস ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে, এই জিনগত প্রভাব প্রকাশ নাও হতে পারে আবার কারও সত্যিই ফুসফুস ক্যান্সার হতে পারে।
শেষে অবশ্য কিছুটা আশার বানীও শুনিয়েছেন ডা. অভিষেক। তিনি জানান, অধূমপায়ীদের ক্যান্সার চরমমাত্রায় পৌঁছাতে কিছুটা সময় লাগে। আর তাদের সুস্থ হওয়ার প্রবণতাও বেশি।