অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

২৭ দিন পর দাপ্তরিক কাজ করলেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন

শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৬:৪৬ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রোববার   আপডেট: ০৬:৫৫ পিএম, ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২২ রোববার

শাবিপ্রবিতে ২৭ দিন পর দাপ্তরিক কাজ করলেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন

শাবিপ্রবিতে ২৭ দিন পর দাপ্তরিক কাজ করলেন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন

সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ ২৭ দিন পর আবার দাপ্তরিক কাজ শুরু করেছেন। রবিবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) নিজ কার্যালয়ে এসে কাজ শুরু করেন উপাচার্য।

বিষয়টি নিশ্চিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মো. ইশফাকুল হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, সকাল থেকে উপাচার্য নানা দাপ্তরিক কাজ তদারক করছেন। বিকেলের দিকে কয়েকটি বৈঠকে অংশ নেওয়ার কথা তার।

এর আগে গত শুক্রবার সন্ধ্যা সাতটায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে বৈঠকে অংশ নিতে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন ২৫ দিন পর আধা ঘণ্টার জন্য কার্যালয়ে এলেও কোনো দাপ্তরিক কাজ করেননি। সে বৈঠকে শিক্ষামন্ত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা কাটিয়ে দ্রুত স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করতে উপাচার্যকে নির্দেশনা দেন।

গত ১৩ জানুয়ারি শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অসদাচরণসহ বিভিন্ন অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন কয়েক শ ছাত্রী। ১৬ জানুয়ারি দাবি আদায়ের লক্ষ্যে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন শিক্ষার্থীরা। পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা করে। তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। পরে এই আন্দোলন উপাচার্যের পদত্যাগের এক দফা দাবিতে রূপ নেয়।

প্রথম ছয় দিনে দাবি পূরণ না হওয়ায় গত ১৯ জানুয়ারি বেলা তিনটা থেকে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। ২৬ জানুয়ারি সকালে অনশনস্থলে গিয়ে লেখক ও বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মুহম্মদ জাফর ইকবাল শিক্ষার্থীদের অনশন ভাঙান। তবে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন অব্যাহত রাখেন। এ অবস্থায় শুক্রবার শিক্ষামন্ত্রী সিলেটে এসে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে প্রায় সোয়া তিন ঘণ্টা বৈঠক করেন।

বৈঠকে শিক্ষার্থীরা উপাচার্যের পদত্যাগসহ পাঁচ দফা দাবি ও আট দফা প্রস্তাবনা শিক্ষামন্ত্রীর কাছে উপস্থাপন করেন। বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি গণমাধ্যমকর্মীদের জানান, উপাচার্যের পদত্যাগের দাবির বিষয়টি তিনি আচার্যকে জানাবেন। বাকি দাবিগুলো দ্রুত পূরণে তিনি চেষ্টা করবেন। বৈঠক শেষে শিক্ষামন্ত্রী শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে গিয়ে উপাচার্যসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তাদের নিয়ে বৈঠক করেন।

পরে গতকাল শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা সংবাদ সম্মেলন করে উপাচার্যের পদত্যাগসহ বিভিন্ন দাবি পূরণে শিক্ষামন্ত্রীর আশ্বাস পাওয়ায় চলমান আন্দোলন কর্মসূচি আপাতত প্রত্যাহারের ঘোষণা দেন। এদিন সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর গত ১৬ জানুয়ারি পুলিশের গুলি ও লাঠিপেটার ঘটনাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ অভিহিত করে ২৮ দিন পর দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দেন উপাচার্য।

শাহজালাল বিশ্ববিদ্যায়ের শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সকাল ১০টার দিকে উপাচার্যের কাছে সাত দফা দাবিতে স্মারকলিপি পেশ করেছেন। 

স্মারকলিপিতে অতি দ্রুত ক্যাম্পাস খুলে দেওয়া; দ্রুত অনলাইন ও অফলাইনে একাডেমিক কার্যক্রম শুরু করা; ১৬ জানুয়ারি পুলিশি হামলায় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসা ব্যয় বহন করা; হলের ডাইনিং ও ক্যানটিন খুলে দেওয়া; ডাইনিং, ক্যানটিন ও ক্যাফেটেরিয়ার খাবারের গুণগত মান বৃদ্ধি ও দাম কমানো; পর্যাপ্ত আধুনিক ফুডকোর্টের ব্যবস্থা করা; নির্মাণাধীন ফুডকোর্টের কাজ শেষ করা, দেয়াললিখন মোছাসহ ক্যাম্পাসের স্বাভাবিক সৌন্দর্য বৃদ্ধির বিষয়ে দাবি জানানো