শাবিপ্রবি ভিসির পদত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আচার্যের
শাবিপ্রবি করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৮:০৬ পিএম, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২২ শুক্রবার
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের বিষয়টি আচার্যের কাছে তুলে ধরবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শুক্রবার (১১ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে সিলেট সার্কিট হাউজে বিশ্ববিদ্যালয়টির আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলের সঙ্গে অনুষ্ঠিত বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।
তিনি বলেন, শিক্ষার্থীদের কয়েকটি দাবি মেনে নেওয়া হয়েছে। আচার্য ও রাষ্ট্রপতি যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ দিয়ে থাকেন, তাই তার পদত্যাগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন আচার্য। বিষয়টি আচার্যের কাছে তুলে ধরা হবে।
এর আগে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র শাহরিয়ার আবেদীন বৈঠকে বসার আগে গণমাধ্যমকে তাদের আট দফা দাবির কথা জানান।
সেগুলো হলো উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ, ক্লাস-পরীক্ষা চালু, শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে হওয়া মামলা প্রত্যাহার, আড়াই শতাধিক শিক্ষার্থীর বন্ধ থাকা মোবাইল ব্যাংকিং অ্যাকাউন্ট চালু করা, পুলিশের গুলিতে আহত শিক্ষার্থী সজল কুণ্ডকে এককালীন আর্থিক সহযোগিতা দেয়া ও তার জন্য নবম গ্রেডের চাকরি নিশ্চিত করা, মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হককে ইমেরিটাস অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ দেয়া, সব বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষণা খাতে বাজেট বাড়ানো, পরীক্ষা পদ্ধতিতে কোডিং সিস্টেম কার্যকর করা, শিক্ষক নিয়োগে পিএইচডি এবং ডেমো ক্লাসের ভিত্তিতে নিয়োগ প্রক্রিয়া চালু করা।
শাবি শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের শুরু ১৩ জানুয়ারি। রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজার বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী।
১৬ জানুয়ারি থেকে উপাচার্য ফরিদের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু হয়। একপর্যায়ে শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশন শুরু করেন। ২৬ জানুয়ারি জাফর ইকবালের আশ্বাসে তারা এক সপ্তাহের অনশন ভাঙেন।
সে সময় সরকারের উচ্চপর্যায়ে পৌঁছে দেয়ার জন্য জাফর ইকবালের কাছে তারা পাঁচটি দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো ছিল উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগসহ ছাত্র উপদেষ্টা অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমেদ ও প্রক্টরিয়াল বডির অপসারণ, ক্যাম্পাসের সব আবাসিক হল সচল রাখার বিষয়ে উদ্যোগ, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের অর্থ সাহায্য দেয়া, পাঁচ সাবেক শিক্ষার্থীর জামিন ও অজ্ঞাতনামা শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে করা মামলা প্রত্যাহার এবং অনশনরত শিক্ষার্থী ও উপাচার্যের নির্দেশে পুলিশের হামলায় আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার ভার বহন।
এর মধ্যে সেদিনই জামিন পান গ্রেফতার সাবেক শিক্ষার্থীরা, আহত শিক্ষার্থীদের চিকিৎসার খরচও দেয়া হয় সরকারের পক্ষ থেকে। এরপর গত রবিবার ছাত্র উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক পদ থেকে অধ্যাপক জহির উদ্দিন আহমদকে সরিয়ে দেওয়া হয়। সবশেষ প্রক্টর আলমগীর কবিরকে বৃহস্পতিবার রাতে অব্যাহতি দেয়া হয়।
শিক্ষার্থীদের আশা, উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে অপসারণে মন্ত্রী আশানুরূপ সমাধান দেবেন। প্রায় এক মাস অচলাবস্থার পর আবার স্বাভাবিক হবে শাবির ক্লাস ও পরীক্ষা।