অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

সেই মিনুর সন্তানদের জন্য কেএসআরএমের চেক হস্তান্তর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম

প্রকাশিত: ১১:২৩ পিএম, ১০ ফেব্রুয়ারি ২০২২ বৃহস্পতিবার  

অন্যের হয়ে জেল খাটা এবং পরবর্তীতে রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যাওয়া সেই মিনুর হতভাগ্য সন্তানদের ভরণপোষণে অর্থ সহায়তা দিয়েছে দেশের অন্যতম ইস্পাত নির্মাণ শিল্প প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম। জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমানের কাছে পাঁচ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করেন কেএসআরএম-এর গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম। উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) সুমনী আক্তার।

চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মমিনুর রহমান বলেন, কেএসআরএমের এই মহত্ত্ব অনুকরণীয়। মিনুর সন্তানদের তেমন কোনো অভিভাবক নেই। মামা থাকলেও ভরসা রাখা যাচ্ছে না। তাই বিষয়টা নিয়ে আমাদের এগুতে হচ্ছে সতর্কভাবে। আমরা চাই তারা যেন বঞ্চিত না হয় কোনো প্রাপ্যতা থেকে। এই টাকা তাদের নামে ফিক্সড ডিপোজিট করে রাখা হবে।

এডিএম সুমনী আক্তার বলেন এ সময় বলেন, দুই শিশুকে এসওএস শিশু পল্লীতে ভর্তি করানোর প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। সেখানে অনাথ শিশুদের পড়ালেখা ও ভরণপোষণে টাকার প্রয়োজন হয় না। তাই কেএসআরএম থেকে দেওয়া অর্থ ওই শিশুদের নামে ব্যাংকে রাখা হবে। তা ভবিষ্যতে তাদের কাজে আসবে।
 
কেএসআরএমের গণমাধ্যম উপদেষ্টা মিজানুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন গণমাধ্যমে হতভাগ্য মিনু ও তার সন্তানদের দুর্দশা ও ভাগ্য বিড়ম্বনার কথা জেনে প্রতিষ্ঠানের উপ ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহরিয়ার জাহান রাহাত আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন তাদের ভরণপোষণের দায়িত্ব নেওয়ার। সেই হিসেবে জেলা প্রশাসকের কাছে দুই সন্তানের জন্য অনুদানের চেক হস্তাস্তর করা হয়েছে।

জানা যায়, স্বামী পরিত্যক্ত হতভাগ্য মিনু আক্তার তার তিন সন্তানের ভরণপোষণের আশ্বাসে অন্যের হয়ে কারাগারে যান। কথা ছিল অল্পদিনের মধ্যে মুক্তি পাবেন। কিন্তু প্রায় তিন বছর অতিবাহিত হলে বিষয়টি জানাজানি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আইনজীবীসহ কিছু মহানুভব মানুষের প্রচেষ্টায় দীর্ঘ আইনী প্রক্রিয়া শেষে মিনু গত বছরের ১৬ জুন কারাগার থেকে মুক্তি পান। এরমধ্যে মারা যায় মিনুর কন্যাসন্তান জান্নাত। কারামুক্তির ১৩ দিনের মাথায় রহস্যজনক সড়ক দুর্ঘটনায় মারা যান মিনু আক্তারও। ২৮ জুন দিবাগত রাতে চট্টগ্রাম নগরের বায়েজিদ বোস্তামী ফৌজদারহাট সংযোগ সড়কের আরেফিন নগর এলাকায় মিনুকে গাড়ি চাপা দেওয়া হয়। এতে গুরুতর আহত হন তিনি। খবর পেয়ে পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করে। সেখানে ২৯ জুন ভোরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান মিনু। কোনো পরিচয় না পাওয়ায় এক দিন পরে অজ্ঞাত হিসেবে তার লাশ দাফন করে আঞ্জুমান মফিদুল ইসলাম। 

৩ জুলাই রাতে পুলিশ ও পরিবার নিশ্চিত হয় যে অজ্ঞাত হিসেবে দাফন করা লাশটি মিনুর। এরই মধ্যে মিনুর বড় ছেলে অর্থাভাবে কাজ নেয় ষোলশহর চায়ের দোকানে। মিনুর মৃত্যুর পর রহস্যজনকভাবে নিখোঁজ হয় বড় ছেলে ইয়াসিন। বিভিন্ন গণমাধ্যমে বিষয়টি নিয়ে ফলাও করে সংবাদ প্রকাশ হয়। এতে টনক নড়ে প্রশাসনের। পুলিশের তৎপরতায় তার খোঁজ মেলে নারায়নগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জ শিশু কিশোর সংশোধনাগারে।