অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

অবশেষে নিয়োগপত্র পেলেন ৩৬ হাজার শিক্ষক

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৮:৩৩ পিএম, ৩১ জানুয়ারি ২০২২ সোমবার  

সারা দেশে সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩৬ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন

সারা দেশে সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩৬ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগ পেয়েছেন

সারা দেশে সরকারি বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ৩৬ হাজারের বেশি শিক্ষক অবশেষে নিয়োগপত্র পেয়েছেন। সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় শূন্যপদে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে গত দুই বছর আগে বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশন থেকে সুপারিশ করা হয়। পরে তাদের পুলিশ ভেরিফিকেশনের নামে দুই বছর সময়ক্ষেপণ করা হয়।

শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সোমবার (৩১ জানুয়ারি) রাজধানীতে একটি ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে সরকারি মাধ্যমিক ও বেসরকারি স্কুলে ৫ জন করে শিক্ষকের হাতে নিয়োগপত্র তুলে দেয়া হয়। বাকিরা ভার্চুয়াল মাধ্যমে তাদের নিয়োগপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। অনুষ্ঠানটি হয় রাজধানীর আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটে।

যেসব প্রার্থী ভি রোল ফরম পাঠাননি তাদের আগামী ৭ ফেব্রুয়ারির মধ্যে এনটিআরসিএ অফিসে সরাসরি অথবা রেজিস্টার্ড ডাকযোগে জমা দেয়ার অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যথায় তাদের প্রাথমিক নির্বাচন বাতিল করা হবে বলে জানানো হয়েছে।

সেখানে জানানো হয়, সংশ্লিষ্ট প্রার্থী ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান আইডি এবং পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে সুপারিশপত্র ডাউনলোড করবেন। সুপারিশপত্রে উল্লেখ করা তারিখের মধ্যে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে যোগদান করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব আবু বক্কর সিদ্দীক, মাদ্রাসা ও কারিগরি বিভাগের সচিব আমিনুল ইসলাম খান।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘মানসম্মত শিক্ষার বড় একটি ধাপ হচ্ছে স্বচ্ছভাবে শিক্ষক নিয়োগ দেয়া। আমরা এবার সরকারি বেসরকারি স্কুলে সম্পূর্ণ স্বচ্ছভাবে শিক্ষক নিয়োগ দিতে সক্ষম হয়েছি।

‘একটা সময় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান তাদের ইচ্ছামতো শিক্ষক নিয়োগ দিত। সেটি নিয়ে নানা ধরনের অভিযোগ পাওয়া যেত,সেখান থেকে আমরা বেরিয়ে এসেছি।’

মন্ত্রী জানান, দুই বছর আগে সরকারি কর্ম কমিশন- পিএসসি থেকে ২ হাজার ১৫৫ জনকে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করা হলেও ২ হাজার ৬৫ জনের পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট পাওয়ায় তাদের নিয়োগপত্র দেয়া হচ্ছে। অন্যদিকে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের জন্য নিয়োগপত্র পেয়েছেন ৩৪ হাজার ৭৩ জন।

এ নিয়োগের মাধ্যমে সারাদেশের শিক্ষকের শূন্য পদগুলোর অধিকাংশ পূরণ হবে বলে মনে করেন দীপু মনি। জানান, এর পরেও কোথাও শূন্যপদ থাকলে নতুন বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হবে।

মন্ত্রী জানান, নিয়োগ পাওয়া শিক্ষকদের পুলিশ ভেরিফিকেশন কাজ শেষ না হওয়ায় তাদেরকে শর্তসাপেক্ষে নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। সরকারি রিপোর্টে তাদের বিরুদ্ধে গুরুতর কোনো অভিযোগের প্রমাণ পাওয়া গেলে তাকে বাদ দেয়া হবে।

নানা জটিলতার কারণে যারা নিয়োগ বঞ্চিত হয়েছে তাদের অন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শূন্য পদে নিয়োগ দেয়া হবে বলেও আশ্বস্ত করেন দীপু মনি।

শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমরা শিক্ষার মানে পরিবর্তন আনতে যাচ্ছি। নতুন কারিকুলাম প্রণয়ন করতে যাচ্ছি। সেখানে শিক্ষকরা সবচেয়ে বড় ভূমিকা পালন করবেন। কারণ শিক্ষার্থীদের এই পুরো প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে নিয়ে যাবেন শিক্ষকরা। কাজেই মানসম্পন্ন শিক্ষা প্রদানের জন্য যোগ্য শিক্ষক প্রয়োজন।’

তিনি বলেন, ‘আপনারাই (শিক্ষক) ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ গড়ার জন্য শিক্ষার্থীদের তৈরি করবেন। শিক্ষার্থীদের আপনারা সফট স্কিল শেখাবেন সেগুলো সম্পর্কে আপনাদেরও স্বচ্ছ ধারণা থাকতে হবে। শিক্ষকদেরও প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে।’

মন্ত্রী বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের সুনাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে শিক্ষকদের সুপরামর্শ প্রয়োজন। সে কারণেও তাদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন আছে। আজ যারা নিয়োগ পাচ্ছেন, তারা নানা ধরনের প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে যাবেন। কর্মজীবনে সফল হতে হলে একদম প্রথম থেকেই যত ধরনের প্রশিক্ষণ নেয়া সম্ভব, তা নিতে হবে।’

শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ‘করোনা পরিস্থিতির মধ্যে সকল কার্যক্রম বিপর্যয়ের মধ্যে থাকলেও শিক্ষক নিয়োগ প্রক্রিয়া অব্যাহত ছিল। সেই সুবাদে আজকে সারা দেশে একসঙ্গে সরকারি-বেসরকারি ৩৬ হাজার শিক্ষক নিয়োগ দেয়া সম্ভব হচ্ছে।’

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তা, স্কুল শিক্ষক নিয়োগ প্রদানকারী এনটিআরসিএর কর্মকর্তারাও এ সময় উপস্থিত ছিলেন।