ল্যাংগুইশিং: মন যখন অকারণে খালি খালি লাগে
লাইফস্টাইল ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:০৬ পিএম, ৩০ জানুয়ারি ২০২২ রোববার
করোনাভাইরাস শুরু হওয়ার পর আমাদের মানসিক অবস্থাও তীব্র একটি পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শারীরিক অসুস্থতার পাশাপাশি এ সময় অনেকেই মানসিকভাবে স্থিতিশীল নেই।
অনেকেই করোনাকালে মানসিক অস্থিরতা, তীব্র উদাসীনতা ও শূন্যতাবোধ করছেন। এটাকে আবার কেউ কেউ ডিপ্রেসন বা বিষণ্নতা ভেবে ভুল করেন।
মনের এ পরিস্থিতিকে ল্যাংগুইশিং (languishing) বলে অভিহিত করা হচ্ছে। ইংরেজি ল্যাংগুইশ শব্দের অর্থ অবসন্ন বা নিস্তেজভাব।
এরকম হলে মানুষের মনে হয় তার জীবনের কোনো উদ্দেশ্য নেই, মন সবসময় নিস্পৃহ হয়ে থাকে। কোনো কাজ করতে আগ্রহ পাওয়া যায় না।
এমনকি ব্যক্তি নিজেই বুঝতে পারেন তার আসলে মন ঠিক খারাপ নয়, কিন্তু মনের ভেতর কোনো শক্তি নেই। এ সময় তারা সারাদিন শুয়ে-বসে, চুপচাপ কাটিয়ে দেন।
ল্যাংগুইশিং কোনো মানসিক অসুস্থতা নয়। তবে এটি শেষপর্যন্ত উদ্বিগ্নতা বা বিষণ্নতায় পর্যবসিত হতে পারে।
২০২০ সালে এপ্রিল থেকে জুন মাসে করা একটি গবেষণায় দেখা গেছে প্যানডেমিকের সময় বিশ্বের ১০ শতাংশ মানুষ ল্যাংগুইশিং-এ ভুগেছেন। গবেষণাটিতে বিশ্বের ৭৮টি দেশের মানুষ অংশ নিয়েছিল।
ল্যাংগুইশিং-এর কারণ ব্যক্তিভেদে ভিন্ন হয়। চাপ, ট্রমা, রুটিনে পরিবর্তন ইত্যাদি কারণে মনের এ পরিস্থিতি হতে পারে।
তবে এটি চিরস্থায়ী কোনো অনুভূতি নয়। একটা সময় পরে মনের অবস্থা স্বাভাবিক হয়ে ফিরে আসে।
গবেষকেরা কিছু উপায় বলে দিয়েছেন ল্যাংগুইশিং দূর করতে। অন্যদের সাথে যোগাযোগ বাড়ানো হতে পারে একটি উপায়। কিছু ছোটখাটো ভালো কাজ যেমন কাউকে এক কাপ চা করে খাওয়ানো, কর্মক্ষেত্রে সহকর্মীকে খানিক সহায়তা করা ইত্যাদি মন ভালো করে দিতে পারে।
নিজের জীবন নিয়ে ভাবাও একটা পদ্ধতি ল্যাংগুইশিং কমানোর। জীবনের ভালো অর্জন-মুহূর্তগুলোর কথা ভাবা, দিনে কম নেতিবাচক চিন্তা করা ইত্যাদি মন খারাপি দূর করার উপায় হতে পারে।
একেবারে কিছু না করার চেয়ে অল্প কিছু করা অনেক ভালো। সেজন্য মন খারাপ নিয়ে চুপচাপ না থেকে তা ভালো করার কাজটি আপনাকেই শুরু করতে হবে। সেটা হোক নিজের মানসিক পরিস্থিতিতে স্বীকার করা বা নিজের অনুভূতি বিষয়ে কোনো বন্ধুকে জানানো। এভাবেই শুরু হোক জীবনের ইতিবাচক উৎকর্ষ সাধনের কাজ।
দ্য কনভার্সেশন অবলম্বনে।