নর্ড স্ট্রিম ২ কী? ইউক্রেন সংকটে এর যোগ কোথায়? শেষ পর্ব
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:৪৩ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার আপডেট: ০২:৪৮ পিএম, ২৯ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার
আগের পর্বে নর্ড স্ট্রিম ২-এর সাধারণ তথ্য জানানো হয়েছে। এ পর্বে জেনে নেওয়া যাক এই গ্যাস পাইপালাইনের সাথে ইউক্রেন সংকটের সংযোগ কীরকম।
আরও পড়ুন: নর্ড স্ট্রিম ২ কী? কেন এটি নিয়ে এত বিতর্ক? পর্ব ১
নর্ড স্ট্রিম ২-কে বলা হচ্ছে বর্তমান সংকটে পশ্চিমাদের সবচেয়ে বড় পাশার দান। তারা এর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে রাশিয়াকে চাপের মুখে রাখতে পারে যদি রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণের চেষ্টা করে।
যুক্তরাজ্যের ডিফেন্স সেক্রেটারি বেন ওয়ালেস এই পাইপলাইনকে পশ্চিমাদের জন্য লেভারেজ হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি এটিকে পুরো দৃশ্যপটে পার্থক্য তৈরি করে দেওয়ার মতো ক্ষমতাশালী একটি উপাদান হিসেবে মনে করেন।
রাশিয়ার জন্য এই পাইপলাইন গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি দিয়ে যদি তারা ইউরোপে গ্যাস পাঠাতে পারে তাহলে তাদের আর ইউক্রেনকে বড় অঙ্কের ট্রানজিট ফি দিতে হবে না।
যদি পাইপলাইনের ওপর পশ্চিমা বা ইউরোপীয় নিষেধাজ্ঞা আসে তাহলে তা যে বার্তা দেবে তা হলো ইউরোপকে আর গ্যাসের জন্য রাশিয়ার ওপর নির্ভর করতে হবে না। এটি রাশিয়ার জন্য একটি বড় ধাক্কা হবে।
যদি নর্ড স্ট্রিম ২ না চালু হয়?
যদি সত্যিই পশ্চিমা শক্তি ও ইইউ নর্ড স্ট্রিম ২-এর ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়, তাহলে তার জন্য যে কেবল রাশিয়ার ক্ষতি হবে তা নয়, ইউরোপকেও এর জন্য বিশেষ মূল্য চোকাতে হবে।
এ মুহূর্তে ইউরোপের দেশগুলোতে জ্বালানির দাম অনেক বেড়ে গেছে। এছাড়া রাশিয়া থেকে স্মরণকালের সবচেয়ে কম সাপ্লাই পাচ্ছে তারা।
জার্মানির সবচেয়ে বেশি রাশিয়ান গ্যাসের প্রয়োজন। দেশটির আড়াই কোটির ওপরের ঘরবাড়ি রাশিয়া থেকে আগত গ্যাসে উষ্ণ থাকে।।
এছাড়া জার্মানির নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের পথে এগিয়ে যাওয়ার গতি সচল রাখতেও রাশিয়ান গ্যাসের নিরবচ্ছিন্ন সরবরাহ প্রয়োজন।
জার্মান অর্থমন্ত্রী রবার্ট হাবেক বলেই দিয়েছেন, যেকোনো ধরনের নিষেধাজ্ঞাতেই জার্মানির অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
এ মুহূর্তে রাশিয়া যদি ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে যাওয়া পাইপলাইনগুলোতে গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দেয়, তাহলে ইউরোপের অবস্থা আরও বেশি করুণ হবে।
ইউরোপের কিছু দেশ যেমন জার্মানি চাইলে অন্য দেশ (নরওয়ে, নেদারল্যান্ডস, ব্রিটেন, ডেনমার্ক) থেকে গ্যাস আনতে পারে।
কিন্তু নেদারল্যান্ডস ইতোমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে তারা ইউরোপে সর্বোচ্চ পরিমাণে গ্যাস সরবরাহ করছে, তাদের পক্ষে রাশিয়ার বন্ধ করা সরবরাহের প্রতিস্থাপক হওয়া সম্ভব নয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ইউরোপের জন্য পৃথিবীর অন্যান্য গ্যাস-সমৃদ্ধ দেশসমূহের সাথে আলোচনা চালাচ্ছে।
কিন্তু প্রাকৃতিক গ্যাসের স্থানান্তরের ব্যাপারটি এখানে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হিসেবে দেখা দিচ্ছে।
সমাপ্ত।
তথ্যসূত্র: বিবিসি