ছায়াপথে ৩ মিলিয়ন বাসযোগ্য পৃথিবী!
সাতরং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:৪৭ এএম, ৬ নভেম্বর ২০২০ শুক্রবার আপডেট: ০৯:৪৯ এএম, ৬ নভেম্বর ২০২০ শুক্রবার
ছায়াপথে ৩ মিলিয়ন বাসযোগ্য পৃথিবী!
এক দশক আগে মহাকাশ বিজ্ঞানীরা দার্শনিক, বিজ্ঞানী, ধর্মজাজক, জ্যোতিঃশাস্রজ্ঞ, আধ্যাত্মবাদিদের অতি পুরাতন এক প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে শুরু করেছিলেন- পৃথিবীর মতো বসবাসযোগ্য আর ক'টি গ্রহ এই জ্যোতির্মণ্ডলে রয়েছে? কিংবা আদৌ কি আছে? পৃথিবী থেকে কত দূরে তার অবস্থান?
২০০৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের নভোযান কেপলার সেইসব প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে মহাকাশে বিচরণ শুরু করে এবং সাতে তিন বছরের মিশন আকাশ ছায়াপথের দেড় লক্ষ তারকারাজির ওপর নিবিড় পর্যবেক্ষণ-পরীক্ষণ চালায়। কেপলার দেখতে পায় আকাশে তারাদের যে মিটিমিটি আমরা দেখি এই ধরাতলে দাঁড়িয়ে তার কারণ সূর্যের বিপরীতে একটি তারকার সামনে দিয়ে আরেকটি তারকার ছুটে যাওয়ার সময়ে এ অতি সামান্য সময়টি লেগে যায় তখন সেই তারার আলো ঢাকা পড়ে এই তারকার ছায়ায়। পরক্ষণেই তা আবার জ্বলজ্বলে হয়ে ওঠে।
কিন্তু কেপলারের মূল উদ্দেশ্য ছিলো পৃথিবীর মতো বাসযোগ্য কোন গ্রহ কিংবা বিশ্ব মহাকাশে আর আছে কি না তা জানা। আর যখন মিশন শেষ করে ততদিনে কেপলারের কাছে অন্তত ৪০০০ তারকার তালিকা, যা হলেও হতে পারে পৃথিবীর মতোই কিছু এবং সেখানে থাকলেও থাকতে পারে প্রাণের অস্তিত্ব, কিংবা না থাকলেও ধরে নেওয়া যায়- সেখানে প্রাণিকূলের বসবাস সম্ভব।
এসবের কোনোটিতে প্রাণের অস্তিত্ব রয়েছে এমন কোনো চিহ্ন এ পর্যন্ত কেউ জানতে পারেনি। তবে কেপলারের পাঠানো তথ্য, উপাত্ত আর চিত্রগুলো নিয়ে নিবিড় পর্যালোচনা করেন ৪৪ জন জোতির্বিজ্ঞানীর একটি দল। যার নেতৃত্ব দেন নাসার স্টিভ ব্রাইসন। এই বিজ্ঞানীরা কিছু সুনির্দিষ্ট উত্তর বের করেছেন সেই অতি পুরাতন প্রশ্নের- পৃথিবীর মতো আর কি কিছু রয়েছে মহাকাশে যেখানটা বসবাসযোগ্য? নিউইয়র্ক টাইমস একটি খবরে জানাচ্ছে, নাসার বিজ্ঞানীদের এই গবেষণা প্রতিবেদন অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নালে প্রকাশের অপেক্ষায় রয়েছে।
কেপলারের উদ্দেশ্য ছিলো মহাকাশে সূর্যের মতো তারকাগুলোকে খু্ঁজে তার চারিপাশে পৃথিবীর মতো আকারের কোনো কিছু ঘুর্ণায়মান থাকলে সেগুলো নির্দিষ্ট করা। ওই ঘুর্ণায়মান অবজেক্টটি কতটা দূরে? সূর্য থেকে পৃথিবী যেমন দূরত্বে তেমন কোনো দূরত্বে কি?, হলে সেটা কি এমন কোনো দূরত্ব যেখানে আলো ও তাপ পৌঁছাবে কিন্ত পানি তরল থাকবে, জমাট বেঁধে যাবে না? এগুলোই ছিলো কেপলারের তথ্য সংগ্রহে বিবেচনায় নেওয়ার মাপকাঠী।
সে সব বিবেচনায় কেপলার যে ৪০০০ তারকার তালিকা নিয়ে আসে সেগুলো পর্যবেক্ষণ করে তার ৯০ শতাংশের মধ্যেই বিষয়গুলোর উপস্থিতি দেখতে পান নাসার বিজ্ঞানীরা। তারা দেখেন এই তারাগুলোর উজ্জ্বলতার মাত্রা পৃথিবীর মতোই। এবং এগুলোতেও রয়েছে বড় বড় পাথর। যা হয়তো বসবাসের যোগ্য বলেই বিবেচনা করা যেতে পারে।
নাসার হিসাব মতে ১০০ বিলিয়ন তারকা রয়েছে আমাদের ছায়াপথে। এর মধ্য ৪ বিলয়নই আকারে আমাদের সৌরজগতের মধ্যমনি সূর্যের মতো। এতগুলো তারকার ৭ শতাংশও যদি হয় বসবাসের যোগ্য- তাহলে আমাদের এই একটি ছায়াপথেই রয়েছে ৩ মিলয়ন বসবাসযোগ্য পৃথিবী।