অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

২৮ ঘণ্টা পর শাবিপ্রবি উপাচার্যের বাসভবনে বিদ্যুৎ সংযোগ সচল

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট, শাবিপ্রবি

প্রকাশিত: ১০:৪৫ এএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার   আপডেট: ১১:২৩ এএম, ২৫ জানুয়ারি ২০২২ মঙ্গলবার

বিচ্ছিন্ন করার প্রায় ২৮ ঘণ্টা পর শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমদের বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ সচল করেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। 

সোমবার (২৪ জানুয়ারি) রাত ১২টার দিকে তারা সংযোগ চালু করে দেন। বিষয়টি মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপ কমিশনার (গণমাধ্যম) বিএম আশরাফ উল্ল্যাহ তাহের নিশ্চিত করেছেন।   

এর আগে রবিবার রাত পৌনে আটটার দিকে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা ওই বাসভবনের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। একই লাইনে কর্মচারীদের বাসার লাইন থাকায় সেগুলোরও সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।   

এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী অ্যাসোসিয়েশনের নেতারা অনুরোধ করেন সংযোগ চালু করে দিতে। তাদের বাসায় অসুস্থ রোগী ও শিশুদের সমস্যার কথা জানালে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বিদ্যুৎ সংযোগটি চালু করে দেন।   

আন্দোলনরত শিক্ষার্থী মোহামিনুল বাশার রাজ বলেন, উপচার্যের বাসভবনের পেছনে অর্ধশতাধিক কর্মচারীর বাসা রয়েছে। তাদের বিভিন্ন সমস্যার কথা জানালে আমরা বিদ্যুৎ সংযোগ চালু করে দিয়েছি।  

এর আগে রবিবার সন্ধ্যা থেকে উপাচার্যের বাসভবনে প্রবেশের মূল ফটকের সামনে অবস্থান নেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।সন্ধ্যা থেকে এখন পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও গণমাধ্যমকর্মী ছাড়া উপাচার্যের বাসভবনের ভেতরে আর কাউকে ঢুকতে দিচ্ছেন না তারা। 

সোমবার অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন আহমেদের বাসভবনে তার জন্য খাবার ও ওষুধ নিয়ে যেতে দেননি আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা। সোমবার সন্ধ্যায় শিক্ষকরা উপাচার্য ও তার পরিবারের জন্য প্রয়োজনীয় খাবার, পানি ও ওষুধ নিয়ে মূল ফটকে প্রবেশ করতে চাইলে শিক্ষার্থীরা ফিরিয়ে দেন। এ সময় শিক্ষকদের সঙ্গে তাদের বাগবিতণ্ডা হয়। 

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রলীগ ছাত্রীদের আন্দোলনে হামলা চালায়।  

পরের দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ।

শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন। ওই হামলার প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন স্থানে বিক্ষোভ করছে শিক্ষার্থী এবং বিভিন্ন নাগরিক ও রাজনৈতিক সংগঠন।

এর মধ্যে  শিক্ষার্থীরা শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনিকে তাদের দাবি লিখিতভাবে দেবেন বলে জানিয়েছেন। তবে শিক্ষার্থীরা জানান, তাদের মূল দাবি উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগ। এই দাবি না মানা পর্যন্ত তারা আন্দোলন থেকে সরবেন না।

শনিবার রাতে ঢাকায় নিজ বাসভবনে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলন করেন শিক্ষামন্ত্রী।

তিনি জানান, প্রয়োজনে তার প্রতিনিধিদল শাবিতে গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করতে প্রস্তুত। শিক্ষার্থীরা যখন কথা বলতে রাজি হবে, তখনই প্রতিনিধি যেতে পারবে। পারিবারিক কারণে এখন তিনি সিলেটে যেতে পারছেন না।
এরপর শিক্ষার্থীদের সঙ্গে গভীর রাতে ভার্চুয়ালি বৈঠক করেছেন শিক্ষামন্ত্রী।

বৈঠকে উপাচার্যের পদত্যাগের বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না এলেও দাবিগুলো লিখিতভাবে জমা দেয়ার পরামর্শ দেন তিনি। দীপু মনি আশ্বস্ত করেন, লিখিত দাবি পেলে সেগুলো সমাধানে উদ্যোগ নেবে সরকার।