ইতিহাসের কয়েকটি ভয়ংকরতম সুনামি
সাতরং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৩২ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার আপডেট: ০৬:৩৫ পিএম, ২২ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার
গত শনিবার (১৫ জানুয়ারি) পলিনেশিয়ার দ্বীপদেশ টোঙ্গায় সমুদ্রের তলদেশে অগ্ন্যুৎপাতের পর ৪৯ ফিট উচ্চতার সুনামি শুরু হয়। এ প্রাকৃতিক দুর্যোগে প্রায় তিন জন মারা যান, এবং দেশটির অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
এ সুনামিতে বেশি প্রাণহানি না ঘটলেও ইতিহাসে অনেকগুলো সুনামিতেই মানুষের তীব্র করুণ পরিণতি হয়েছিল।
এ লেখায় জেনে নেওয়া যাক ইতিহাসের পাতায় ঠাঁই করে নেওয়া বিশ্বের কয়েকটি ভয়ংকর সুনামির কথা।
সুন্দা প্রণালী সুনামি, ২০১৮
ইন্দোনেশিয়ার সুন্দা প্রণালীতে ২০১৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর এ সুনামি তৈরি হয়।
এর আগে ১৮৮৩ ও ২০০৪ সালে সুন্দা প্রণালীতে সুনামি ঘটে। তারপরও ২০১৮ সালের সুনামি শুরু হওয়ার আগে কাউকে সতর্ক করা হয়নি।
এ সুনামিতে ৩৭৩ জন মানুষ মারা যান এবং কয়েক শ' মানুষ নিখোঁজ হন। এছাড়া ২০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হন।
তোহোকু ভূমিকম্প ও সুনামি, ২০১১
২০১১ সালের মার্চের ১১ তারিখে ঘটা এ ভূমিকম্প ও তৎপরবর্তী সুনামি জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়ঙ্কর দুর্যোগগুলোর একটি।
নয় মাত্রার ভূমিকম্প ঘটার পরে ১৩২ ফুট পর্যন্ত উঁচু হয়ে সুনামির আঘাত হানে। এতে সাড়ে ১৫ হাজার মানুষ মারা যান এবং চার লক্ষ ৫০ হাজারের মতো মানুষ বাস্তুচ্যুত হন। এবং বলা বাহুল্য এ সুনামির ফলে সৃষ্ট অবকাঠামোগত ধ্বংস ইতিহাসের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ধ্বংসযজ্ঞগুলোর একটি।
ভালদিভিয়া ভূমিকম্প ও সুনামি, ১৯৬০
চিলি দক্ষিণ উপকূলে ১৯৬০ সালের ২২ মে আঘাত হানে এ সুনামি ইতিহাসের সবচেয়ে শক্তিশালী ভূমিকম্পের ফলে সৃষ্টি হয় প্রায় ৮০ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস। ওই ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল ৯.৫ ম্যাগনিটিউড।
এ সুনামিতে মারা যান ১৬৫৫ জন মানুষ, আহত হন তিন হাজার মানুষ এবং প্রায় ২০ লাখ মানুষ ঘরছাড়া হন।
মেসিনা ভূমিকম্প ও সুনামি, ১৯০৮
১৯০৮ সালের ডিসেম্বর ২৮ তারিখ ইতালি দক্ষিণাঞ্চলে এ সুনামি আঘাত হানে। ৭.৫ মাত্রার ভূমিকম্পের পর সুনামিতে মেসিনা সহ অন্যান্য উপকূলীয় শহর প্রায় ধ্বংস হয়ে যায়।
সুনামির আঘাতে প্রায় আশি হাজার মানুষ তাদের প্রাণ হারান। কয়েক হাজার মানুষ পালাতে বাধ্য হয়। ২০১৯ সালে করা এক গবেষণায় জানা গেছে ভূমধ্যসাগরের ঘটা একটি ভূমিকম্পের কারণে এ সুনামিটির সৃষ্টি হয়েছিল।
ভারত মহাসাগরের সুনামি, ২০০৪
২০০৪ সালের ২৬ ডিসেম্বর সকালে ৯.১ মাত্রার একটি ভূমিকম্প ভারত মহাসাগরে অনুভূত হয়। তা থেকে সৃষ্টি হয় এই সুনামি যা একাধিক দেশের ওপর আঘাত হানে।
সুনামিটি প্রথমে ইন্দোনেশিয়া পরে থাইল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকাসহ আরও ১১টি দেশে আঘাত হানে। এ সুনামির কোনো কোনো ঢেউ-এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১০০ ফুট ছিল এবং এটির আঘাতে মারা যায় প্রায় দুই লাখ ৩০ হাজার মানুষ, যা সুনামির ইতিহাসে প্রাণহানির সংখ্যার দিক থেকে সর্বোচ্চ।
এক্সপ্রেস ইউকে অবলম্বনে।