জলবায়ু পরিবর্তন: ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে গাছেদের বীজ ছড়ানো
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৩:৪৩ পিএম, ১৭ জানুয়ারি ২০২২ সোমবার
বড় বড় গাছগুলোর বীজ যদি এর তলায় পড়ে, তাহলে সে বীজ থেকে ভালো কিছুর জন্ম হয় না। কারণ, বীজ থেকে চারা তৈরি হলেও, সে চারা মা গাছের কারণে কোনো আলো পায় না, ফলে তার টিকে থাকাটাই অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।
সেজন্য গাছ বংশবৃদ্ধির জন্য নিজের মতো করে নানা উপায় বের করে নিয়েছে। এর একটি হচ্ছে বীজের ছড়িয়ে দেওয়া। তার জন্যও আবার নানাভাবে বিবর্তিত হয়েছে গাছ।
যেমন কিছু গাছের বীজ বাতাসে উড়ে অনেক দূরে গিয়ে পড়ে। সে বীজগুলো ওভাবেই তৈরি হয় যাতে এগুলো বাতাসে সহজে উড়তে পারে। আবার কিছু গাছের ফল ফেটে যায়, তখন বীজগুলো ছিটকে গিয়ে দূরে পড়ে।
তবে গাছের সব প্রজাতির মধ্যে অর্ধেকের বেশি বীজ ছড়ানোর জন্য নির্ভর করে বন্যপ্রাণীর ওপর। এ পদ্ধতিতে গাছের ফলমূল খেয়ে পাখি ও জন্তুরা তা বিষ্ঠার মাধ্যমে নানা জায়গায় ছড়িয়ে দেয়।
ট্রপিক্যাল রেইনফরেস্টে প্রায় ৯০ শতাংশের বেশি গাছের প্রজাতির বীজ ছড়ানোর কাজটি করে প্রাণীরা। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট নানা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ও মানবসৃষ্ট নানা কারণে বর্তমানে পৃথিবীর অনেক প্রজাতিই হারিয়ে যাচ্ছে। এগুলোর মধ্যে আছে বিভিন্ন জীবজন্তু। ফলে গাছের বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্রে এটি সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে ভবিষ্যতে।
গাছের বীজ যদি না ছড়ায় তাহলে এগুলো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের মধ্যে আটকে যাবে। ফলে ধীরে ধীরে গাছগুলো মরে যাবে। এভাবে চলতে থাকলে কোনো কোনো গাছের পুরো প্রজাতিই ক্রমশ বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আর তাতে গাছ থেকে পাওয়া বিভিন্ন সরাসরি সেবা থেকে মানুষ যেমন বঞ্চিত হবে, তেমনিভাবে কার্বন সংরক্ষণের ঘাটতিও বাড়বে।
অনেক প্রাণী বিলুপ্ত হয়ে যাওয়ার কারণে গাছেদের অনেক প্রজাতি নির্দিষ্ট অঞ্চলে আটকে গেছে। এছাড়া আধুনিত যুগে বিভিন্ন আধুনিক স্থাপনা যেমন রাস্তা, ফার্ম ইত্যাদির কারণে প্রাণীদের চলাচলের পথও বর্তমানে সংকুচিত হয়ে গেছে। এভাবেই জলবায়ু পরিবর্তন সবদিক থেকেই আমাদের পৃথিবীটাকে আষ্টেপৃষ্ঠে চেপে ধরেছে।
ফিজ ডট অর্গ অবলম্বনে