অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

শাবিপ্রবিতে উপাচার্য মুক্ত, পুলিশ-শিক্ষার্থী সংঘর্ষে আহত ২০

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, সিলেট

প্রকাশিত: ০৬:৪০ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০২২ রোববার   আপডেট: ০৬:৫৮ পিএম, ১৬ জানুয়ারি ২০২২ রোববার

সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (শাবিপ্রবি) আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়েছে। বিক্ষোভকারীদের হটিয়ে উপাচার্যকে মুক্ত করেছে পুলিশ। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধক্ষ্য, পুলিশ ও শিক্ষার্থীসহ অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

রবিবার (১৬ জানুয়ারি) বিকাল সাড়ে ৫টার দিকে আইসিটি ভবনের সামনে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। শিক্ষার্থীরাও ইট-পাটকেল ছুড়তে শুরু করে। এক পর্যায়ে পুলিশ সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করলে শুরু হয় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।

এর মধ্যেই সন্ধ্যা ৬টার দিকে আইসিটি ভবনের গেটের তালা ভেঙে পুলিশ ভেতরে গিয়ে উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদকে বের করে তার বাসভবনের দিকে নিয়ে যায়।কিছুক্ষণ পর অ্যাম্বুলেন্সে করে আহত কয়েকজনকে নিয়ে যেতে দেখা যায়।

আইসিটি ভবনে রবিবার বেলা ৩টা ১০ মিনিটে অবরুদ্ধ হন উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদ। ভবনের বাইরে অবস্থান নিয়ে প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগসহ তিন দফা দাবি আদায়ে স্লোগান দেন বেগম সিরাজুন্নেসা হলের ছাত্রীরা। তাদের সঙ্গে যোগ দেন সহপাঠীরাও।

বেলা তিনটার দিকে আন্দোলরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী উপদেশ ও নির্দেশনা পরিচালক জহির উদ্দিন ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি তুলশি কুমার দাস। তারা দাবি পূরণের বিষয়ে সময় চাইলে ছাত্রীরা তা প্রত্যাখান করেন।

এরপর নিজ কার্যালয় থেকে বের হয়ে বাসভবনের দিকে যাচ্ছিলেন উপাচার্য। সে সময় তার সঙ্গে কথা বলতে এগিয়ে যায় ছাত্রীরা। এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে তাকে ঘেরাও করে স্লোগান দিতে থাকেন তারা। এক পর্যায়ে ছাত্রীদের ধাওয়ায় উপাচার্য আইসিটি ভবনে গিয়ে অবস্থান নেন।

বিকাল ৪টার দিকে সেখানে পুলিশ সদস্যরা অবস্থান নিলে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। তারা ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন’ বলে স্লোগান দিতে থাকেন।

এ ঘটনার পর কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলাম ও অন্য শিক্ষকরা গিয়ে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার চেষ্টা করেন। উত্তেজনা বাড়তে থাকলে পুলিশ লাঠিচার্জ শুরু করে। এরপর শুরু হয় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া।

তিন দফা দাবি আদায়ে চতুর্থ দিনের মতো চলছে সিরাজুন্নেসা হলের ছাত্রীদের এই আন্দোলন। শনিবার মধ্যরাতে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়ে রবিবার সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে অবস্থান নেয় তারা।

তাদের দাবির মধ্যে আছে, সিরাজুন্নেসা হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদ লিজা ও সহকারী প্রাধ্যক্ষদের পদত্যাগ, অবিলম্বে হলের যাবতীয় অব্যবস্থাপনা দূর করে সুস্থ-স্বাভাবিক পরিবেশ নিশ্চিত করা এবং ছাত্রীবান্ধব ও দায়িত্বশীল প্রাধ্যক্ষ কমিটি নিয়োগ দেয়া।

শুক্রবার উপাচার্যের সঙ্গে দেখা করে দাবি মেনে নেওয়ার জন্য শনিবার সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দেয় ছাত্রীরা। এরপর শনিবার সন্ধ্যা থেকে মধ্যরাত অবধি চলে সড়ক অবরোধ ও বিক্ষোভ।