অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

ইস্পাহানির পিটস্টপে ভ্যাট জালিয়াতি, ভ্যাট গোয়েন্দার মামলা

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৭:৪২ পিএম, ৩ নভেম্বর ২০২০ মঙ্গলবার   আপডেট: ০১:২৩ এএম, ৫ নভেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার

চট্টগ্রামের ইস্পাহানি গ্রুপের ৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ভ্যাট ফাঁকির কারণে মামলা দায়ের করেছে ভ্যাট গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। এছাড়া প্রতিষ্ঠানটি ১৮ কোটি ২৭ লাখ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপন করেছে। যার মাধ্যমে ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে প্রায় দেড় কোটি টাকা।

ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।  

প্রতিষ্ঠান চারটি হচ্ছে

  • - দি এভিনিউ হোটেল এন্ড স্যুটস, 
  • - পিটস্টপ সুইটস এন্ড বেকারি,
  • - পিটস্টপ শো-রুম এবং 
  • - পিটস্টপ সুপার ষ্টোর। 

ভ্যাট গোয়েন্দার অনুসন্ধানে এই ৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রায় ১৮ কোটি ২৭ লাখ টাকার গোপন বিক্রির তথ্য উদঘাটন করা হয়। এর মাধ্যমে ইস্পাহানি গ্রুপের ৪টি প্রতিষ্ঠান সুদসহ প্রায় ১ কোটি ৫০ লাখ টাকার ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। 

ভ্যাট ফাঁকির অভিযোগে ৪টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে এমনটা নিশ্চিত করে সূত্র জানায়, ভ্যাট ফাঁকির সুনির্দিষ্ট অভিযোগের ভিত্তিতে গত ৭ সেপ্টেম্বর ভ্যাট গোয়েন্দার একটি দল প্রতিষ্ঠানগুলোতে অভিযান চালায়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ভ্যাট গোয়েন্দার উপ-পরিচালক তানভীর আহমেদ ও সহকারী পরিচালক মো. মহিউদ্দীন। 

বিষয়টিতে কথা হয় ভ্যাট গোয়েন্দার মহাপরিচালক ড. মইনুল খানের সঙ্গে। তিনি বলেন,  প্রতিষ্ঠানগুলো ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে যার কারণে ইতোমধ্যে মামলা দায়ের করা হয়েছে।ভ্যাট আইন অনুযায়ী এই মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এই জালিয়াতির ন্যায় নির্ণয়নের জন্য চট্টগ্রাম ভ্যাট কমিশনারেটে পাঠানো হবে বলেও জানান তিনি।  

ভ্যাট গোয়েন্দা সূত্রে জানা যায়, দি এভিনিউ হোটেল এন্ড স্যুটস ২০১৫-১৬ ও ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য দেখিয়েছে ৮৭ লাখ ৭২ হাজার ১৪৬ টাকা। কিন্তু অভিযানে জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে প্রকৃত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ১ কোটি ২৯ লাখ ৯৩হাজার ৮১৪ টাকা। এক্ষেত্রে  ৪২ লাখ ২১ হাজার ৬৬৮ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৬ লাখ ৩৩ হাজার ২৫০ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এছাড়া এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে ৪ লাখ ৯৯ হাজার ৫৬৯ টাকা সুদ প্রযোজ্য হয়েছে।

পিটস্টপ সুইটস এন্ড বেকারি ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৯-২০ অর্থবছরে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য দেখিয়েছে ১২ কোটি ৫৪ লাখ৬৯ হাজার ৯৪৬ টাকা। কিন্তু জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ১২ কোটি ৯৭ লাখ ২৩ হাজার ৩০৭ টাকা। এক্ষেত্রে ৪২ লাখ ৫৩ হাজার ৩৬১  টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৬ লাখ ৩৮ হাজার ৪ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে সুদ ৭ লাখ ২১ হাজার ১২৬ টাকা।

পিটস্টপ শো-রুম ২০১৩-১৪ থেকে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য দেখায় ৬ কোটি ৭ লাখ ৬ হাজার ২৫৯ টাকা। আর জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে প্রকৃত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ১৬ কোটি ৪৫ লাখ ২৪ হাজার ৫১৫ টাকা।  এতে দেখা যায়, ১০ কোটি ৩৮ লাখ ১৮ হাজার ২৫৬ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৪৪ লাখ ৩২ হাজার ৪২১ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। একইভাবে, এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে  ৪ লাখ ৭১ হাজার ৯১৪ টাকা সুদ আদায়যোগ্য হয়েছে।

পিটস্টপ সুপার স্টোরেও একই ধরনের জালিয়াতি ধরা পড়েছে। এতে ২০১৮ সালের জানুয়ারি হতে চলতি বছরের আগস্ট পর্যন্ত সময়ে দাখিলপত্রে বিক্রয়মূল্য ১ কোটি ৮১ লাখ ৯৬ হাজার ১৪৫ টাকা দেখানো হয়েছে। কিন্তু জব্দকৃত কম্পিউটার থেকে প্রকৃত বিক্রয়মূল্য পাওয়া যায় ৮ কোটি ৮৫ লাখ ৭৪ হাজার ২৩৮ টাকা। এক্ষেত্রে ৭ কোটি ৩ লাখ ৭৮ হাজার ৯৩ টাকার বিক্রয় তথ্য গোপনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি ৩২ লাখ ৭৫ হাজার ১০১ টাকা ভ্যাট ফাঁকি দিয়েছে। আর এই ভ্যাট যথাসময়ে পরিশোধ না করায় ভ্যাট আইন অনুযায়ী মাসিক ২% হারে সুদ ৬ লাখ ১৪ হাজার ৭৯ টাকা আদায়যোগ্য হবে।