শিশুদের যক্ষ্মা সচেতনতায় পুতুল নাটক
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০১:৩১ পিএম, ৮ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার
শিশুরা যক্ষ্মায় ভুগলেও বিষয়টি এখনও ভীষণভাবে উপেক্ষিত। তাই শিশুদের মধ্যে এই রোগের লক্ষণ ও উপসর্গ সম্পর্কে অভিভাবকসহ সাধারণ মানুষের মাঝে সচেতনতা বাড়ানো এবং শিশুদের যক্ষ্মা পরীক্ষার বিষয়ে উদ্বুদ্ধকরণ ও যক্ষ্মা রোগীকে চিকিৎসার আওতায় নেওয়ার প্রয়োজনীয়তার বিষয়গুলোতে আলোকপাত করতে সচেতনতামূলক কর্মসূচি হাতে নেয়া হয়েছে। যক্ষ্মা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির অধীনে আইসিডিডিআর,বি পরিচালিত ইউএসএআইডি’স অ্যালায়েন্স ফর কমব্যাটিং টিবি ইন বাংলাদেশ (এসিটিবি) কার্যক্রম রাজশাহী জেলায় পুতুল নাটক ও ঐতিহ্যবাহী গম্ভীরা গানের মাধ্যমে শিশুদের যক্ষ্মা বিষয়ক জনসচেতনতামূলক প্রচারণা শুরু করেছে।
‘যক্ষ্মা হলে নেইকো ভয়, সবাই মিলে করবো জয়’ এই স্লোগান নিয়ে ক্যাম্পেইনটি রাজশাহী সদর, উপজেলা ও গ্রাম পর্যায়ে বিশেষভাবে সজ্জিত গাড়ির মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ নাটক প্রদর্শনী করবে। গম্ভীরা গানের জনপ্রিয় চরিত্র নানা এবং নাতনির যক্ষ্মা নিয়ে মজার খুনসুঁটির মাধ্যমে পুতুল নাটকটি শুরু হবে। এছাড়াও পুতুল তৈরির কর্মশালা এবং পুতুল নাটকের মাঝে নানা-নাতনি জুটির গান থাকবে। প্রয়োজনীয় কোভিড-১৯ স্বাস্থ্যবিধি মেনে রাজশাহী জেলার সদর ও উপজেলাভিত্তিক ৩২টি স্থানে পুতুল নাটকের আয়োজন করা হবে। যক্ষ্মা বিষয়ক বিভিন্ন ভ্রান্ত ধারণা/স্টিগমা ও যক্ষ্মা নির্মূলে নানা প্রতিবন্ধকতা দূর করার উদ্দেশ্যে উক্ত এলাকাসমূহের গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ এই কার্যক্রমের সাথে যুক্ত থাকবেন।
যক্ষ্মার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রতিবেদন ২০২১ অনুয়ায়ী বাংলাদেশে মোট যক্ষ্মা রোগীর ১০% শিশু, যার মধ্যে ২০২০ সালে বাংলাদেশ মাত্র ৪% সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছে, যাদের বয়স ০ থেকে ১৪ বছর। শিশুরা সাধারণত প্রাপ্তবয়স্ক যক্ষ্মা রোগীর মাধ্যমে আক্রান্ত হয়। এ রোগ শিশুদের মাঝে নীরবে বিস্তার লাভ করে ও অগোচরেই থেকে যায়, যা পরবর্তীতে মরণঘাতী ব্যাধি হিসেবে প্রকাশ পায়। প্রচলিত ভুল ধারণা/স্টিগমার কারণে যক্ষ্মা রোগে আক্রান্তের বিষয়টি গোপন করা, বিশেষ করে শিশুদের যক্ষ্মার বিষয়টি অবহেলা করা যক্ষ্মা পরিস্থিতিকে আরো খারাপের দিকে নিয়ে যাচ্ছে। যক্ষ্মার লক্ষণগুলো কীভাবে সনাক্ত করা যায়, কোথায় যক্ষ্মার চিকিৎসা পাওয়া যায়- এসব বিষয়ে প্রচার-প্রচারণা যক্ষ্মা নির্মূলে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
শিশুদের যক্ষ্মা বিষয়ে আমাদের সচেতনতা এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ তাদের যক্ষ্মা থেকে রক্ষা করতে পারে। প্রাপ্তবয়স্ক কিংবা শিশু যেই হোক না কেন, অবশ্যই নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যে যক্ষ্মার চিকিৎসা দ্রুততর সময়ের মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে। শিশুদের যক্ষ্মা নির্ণয় এবং চিকিৎসার ক্ষেত্রে জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ের সভার বেধে দেয়া লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমাদের হাতে আর মাত্র ১২ মাস সময় আছে। যক্ষ্মা আক্রান্ত ব্যক্তির চিকিৎসা নিশ্চিত করা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক তেমনি এই রোগের মূল কারণ উদঘাটন, বিশেষ করে শিশুদের যক্ষ্মার কারণ খুঁজে বের করাসহ একে মোকাবেলা করা বাংলাদেশে যক্ষ্মা নির্মূলের মূল চাবিকাঠি।