অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

পৃথিবী বড় হচ্ছে না ছোট?

সাই-টেক ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৪:৩৬ পিএম, ৩ জানুয়ারি ২০২২ সোমবার  

পৃথিবী এর চারপাশের সোলার সিস্টেম থেকে নিয়মিত বিভিন্ন উপাদান যেমন গ্রহণ করছে, তেমনিভাবে এটি থেকেও অনেক উপাদান সৌরজগতে স্থানান্তরিত হচ্ছে। তাহলে প্রশ্ন  হলো পৃথিবীর আকৃতি কী বড় হচ্ছে না ছোট হচ্ছে?

নাসা’র ল্যাংলি রিসার্চ সেন্টারে এ ধরনের বিষয় নিয়ে গবষণা করেন গিলিয়াম গ্রনফ। তার মতে, যেহেতু পৃথিবী থেকে অনেক উপাদান মহাশূন্যে নিয়মিত বের হয়ে যাচ্ছে, তার মানে হচ্ছে আমাদের পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল ক্রমশ সংকুচিত হচ্ছে। তবে তার পরিমাণ আহামরি কিছু নয়, তা তিনি নিশ্চিত করেছেন।

মহাকাশে গ্রহগুলো তৈরি হয় দীর্ঘ সময় নিয়ে। শূন্যে উড়তে থাকা ধূলিকণাগুলো যখন একে অপরের সাথে সংঘর্ষে পতিত হয়, তখন এগুলো একত্রিত হয়ে বড় পিণ্ডে পরিণত হয়। এভাবে ধুলা জমে জমে পৃথিবীর মতো গ্রহ সৃষ্ট হয়েছে।

পৃথিবী তৈরি হয়েছে প্রায় ৪৫০ কোটি বছর আগে। কিন্তু তারপরেই কিন্তু পৃথিবীর বুকে মহাশূন্যের ধূলি জমা থেমে যায়নি। বিভিন্ন ধূমকেতু ও উল্কাপিণ্ড নিয়মিতভাবে এখনো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করে। এগুলোই পরে পৃথিবীর সাথে যুক্ত হয়ে যায়।

কিন্তু একবার কোনো গ্রহ তৈরি হয়ে গেলে ওই গ্রহের ভেতরে আরেকটি নতুন প্রক্রিয়া শুরু হয়। সেটি হলো গ্রহটি উপাদান গ্রহণের পাশাপাশি নিজে থেকে বিভিন্ন উপাদান শূন্যে পাচার করতেও থাকে। যেমন, আমাদের গ্রহের বায়ুমণ্ডল থেকে অক্সিজেন, হাইড্রোজেন, ও হিলিয়ামের কণাগুলো নিয়মিতই শূন্যে চলে যায়।

তাহলে এই যুগপৎ গ্রহণ ও ত্যাগের ফলে পৃথিবীর মোট ভরের কী পরির্তন ঘটছে? আসলে বিজ্ঞানীদের কাছে এর পরিষ্কার কোনো উত্তর নেই। তারা কেবল এগুলো অনুমান করতে পারেন।

উল্কাপিণ্ড পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা দেখেছেন প্রতিবছর প্রায় ১৬ হাজার ৫০০ টনের মতো উল্কা পৃথিবীতে প্রবেশ করে। অন্যদিকে স্যাটেলাইট থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী বিজ্ঞানীদের অনুমান, ৮২ হাজার ৭০০ টনের মতো উপাদান পৃথিবী ছেড়ে প্রতি বছর শূন্যে মিলিয়ে যায়।

এর থেকে যা মনে হয়, পৃথিবী প্রায় ৬৬ হাজার টনের মতো ভর হারাচ্ছে বছরপ্রতি । আপাতদৃষ্টিতে এটি বিশাল মনে হলেও পুরো গ্রহকে বিবেচনায় নিলে এর পরিমাণ খুবই কম। আর এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে পৃথিবী ধ্বংস হতে সময় লাগবে প্রায় ৫০০ কোটি বছর। সুতরাং, পৃথিবী ও মহাশূন্যের ‘দেয়া-নেয়া’ নিয়ে এখনো বিশেষ চিন্তা করার প্রয়োজন নেই।

এছাড়া মহাসমুদ্র ও আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলকে ভরাট করতে সাহায্য করে। তাই দাতা হওয়ার কারণে পৃথিবীর ধ্বংস হতে ১৫.৪ ট্রিলিয়ন বছর লেগে যাবে। কিন্তু এতকিছু নিয়ে ভাবার আগেই পৃথিবী বসবাস-অযোগ্য হয়ে যাবে সূর্যের বিবর্তনের কারণে। সে সম্পর্কে জানতে চাইলে পড়তে পারেন নিচের লেখাটি।

আরও পড়ুন: সূর্যের সমাপ্তি কবে?

লাইভ সায়েন্স অবলম্বনে।