অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

যুদ্ধক্ষেত্রে কুকুর ব্যবহারের ইতিহাস

সাতরং ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৬:৫২ পিএম, ৩১ ডিসেম্বর ২০২১ শুক্রবার   আপডেট: ০১:১৬ এএম, ১ জানুয়ারি ২০২২ শনিবার

মার্সি ডগ

মার্সি ডগ

মার্সি ডগ। যুদ্ধক্ষেত্রে এ কুকুরগুলোকে ব্যবহার করা হতো বিভিন্ন কাজে। তবে মার্সি ডগের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল রণক্ষেত্র থেকে আহত সৈন্যদের খুঁজে বের করা। তাদেরকে মরার আগে একটু 'আরাম' দেওয়ার কাজটাও ছিল এ কুকুরগুলোর কাঁধে।

মার্সি ডগের পাশাপাশি রেড ক্রস ডগ, অ্যাম্বুলেন্স ডগ, ক্যাজুয়ালিটি ডগ ইত্যাদি বলেও ডাকা হতো এগুলোকে। জার্মানরা প্রথম মহাযুদ্ধের সময় যুদ্ধক্ষেত্রে কুকুর ব্যবহার করা শুরু করে। প্রয়োজনে পিঠে করে রসদও সরবরাহ করতো কুকুরগুলো।

কখনো কখনো দরকার পড়লে গ্যাস মাস্ক পরানো হতো কুকুরগুলোকে। পিঠে ওষুধপত্র বাঁধা থাকতো অনেকগুলোর। কোনো আহত সৈনিককে দেখলে তার ইউনিফর্মের একটু ছিঁড়ে মুখে করে ক্যাম্পে ফিরে আসতো। অন্যদের জানিয়ে দিতো সেই আহত ব্যক্তির খবর। যুদ্ধক্ষেত্রে হঠাৎ কুকুর দেখলে পতিত সৈনিকের মনে একটু আশার সঞ্চার হতো।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় মার্সি ডগের ভূমিকা ছিল অনন্যসাধারণ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধেও তাদের রণাঙ্গনে দেখা গেছে। কোরীয় যুদ্ধেও মার্সি ডগ ব্যবহার করেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। ভিয়েতনাম যুদ্ধে টানেল খুঁজে বের করা, ইরাক যুদ্ধে রাস্তায় পেতে রাখা বোমা শনাক্ত; আধুনিক যুদ্ধক্ষেত্রেও এভাবেই অবদান রেখেছে কুকুর।

যখন কুকুরগুলো বুঝতে পারতো কোনো আহত সৈন্যকে আর বাঁচানো সম্ভব নয়, তখন চুপচাপ ওই হতভাগ্যের পাশে বসে থাকতে। ওই সৈনিককে তখন আর একা মরতে হতো না। জীবনের শেষ মুহূর্তে কুকুরের মতো বন্ধুবৎসল, প্রভুভক্ত প্রাণীর সান্নিধ্যটুকু পেতেন তারা।

প্রথম বিশ্বযুদ্ধে দুই পক্ষই প্রায় ৫০ হাজার কুকুর ব্যবহার করেছিল। এগুলোর মধ্যে ছিল রিচার্ড'স আয়ারডেইলস, জার্মান শেপার্ড, ডোবারম্যান পিনশার্স, বক্সার্স ইত্যাদি। এদের নামও ছিল ভিন্ন ভিন্ন। আহত ও নিহতের মধ্যে পার্থক্য খুঁজতে এসব কুকুরের জুড়ি ছিল না।

এমনও দেখা গিয়েছে, যেসব নির্জীব শরীরকে অন্যরা মৃত বলে ধরে নিয়েছে, কুকুরের পীড়াপীড়িতে সেসব শরীর ক্যাম্পে এনে পরীক্ষা করার পর দেখা গেছে সেগুলোতে আসলেই তখনো প্রাণ টিকে আছে।

কিছু কিছু কুকুরের ক্ষমতা ছিল আসন্ন বিপদের আগে সৈন্যদের সতর্ক করে দেওয়ার। এই কুকুরগুলো অচিন্তনীয় পরিশ্রমও করতো। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে প্রায় সাত হাজার মার্সি ডগ যুদ্ধক্ষেত্রে প্রাণ হারিয়েছিল।