অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

মার্কিন নির্বাচন কেন মঙ্গলবারেই হয়?

সাতরং ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৯:৪৪ পিএম, ২ নভেম্বর ২০২০ সোমবার   আপডেট: ০১:২২ এএম, ৫ নভেম্বর ২০২০ বৃহস্পতিবার

সেই ১৮৪৫ সাল থেকে নভেম্বরের প্রথম মঙ্গলবার মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোট গ্রহণ হয়ে আসছে। কিন্তু মঙ্গলবার কেন?

যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের প্রথম ৬৯ বছর নির্বাচনের জন্য কোনো আলাদা দিন নির্দিষ্ট ছিল না। অঙ্গরাজ্যগুলো যার যার পছন্দমতো এবং সুবিধাজনক দিনে ভোট গ্রহণ করত। এর ফলে যে বিশৃঙ্খলা দেখা দিত, তা ঠেকাতে ১৮৪৫ সালে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় নভেম্বরের প্রথম মঙ্গলবার সারাদেশে একসঙ্গে ভোট গ্রহণ করা হবে। 

কিন্তু মঙ্গলবার কেন? অন্যদিনগুলোতে কি সমস্যা? 
এই নিয়ম চালুর সময়টাতে যুক্তরাষ্ট্র ছিল কৃষিপ্রধান দেশ। ভোটারদের একটি বড় অংশ ছিল কৃষক। অন্য পেশার মানুষদের মতো ঘোড়ায় টানা গাড়িতে করে কাছের ভোটকেন্দ্রে যেতে অনেক সময় লেগে যেত কৃষকদেরও। আর শনিবার ছিল ফসলের মাঠে কাজের দিন। তাই শনিবার বাতিল।

এরপর আসে রোববারের কথা। ভোটের দিন রোববার নির্ধারণ করা হোক, এমন এক প্রস্তাব তাৎক্ষণিকভাবে বাতিল হয়। কারণ, সেদিন সবাই গির্জায় যায় সাপ্তাহিক প্রার্থনায় অংশ নিতে। 

সোমবারের কথাও ভাবা হয়,  কিন্তু সেটাও ধোপে টেকেনি। কারণ সপ্তাহের এটি প্রথম কর্মদিবস, ব্যস্ততা থাকবে এটাই স্বাভাবিক। 

আর বুধবার ছিল সে সময় যুক্তরাষ্ট্রের সাপ্তাহিক বাজারের দিন। মাঝখানে বাকি রইল মঙ্গলবার। এ কারণেই মঙ্গলবারকে ভোটের দিন হিসেবে বেছে নেওয়া হয়।

তবে মঙ্গলবার নিয়মিত কাজের দিন হওয়ায় ইচ্ছা থাকলেও অনেকে ভোট দিতে পারেন না। ইতিহাস এবং পূর্ব জরিপ বলছে, যুক্তরাষ্ট্রে অধিকাংশ সময় ৫০ শতাংশ বা তার চেয়েও কম মানুষ ভোটে অংশ নেন বা আগাম ভোট দেন। তবে এবারের নির্বাচনে ৫০টি অঙ্গরাজ্যের ৪৩ শতাংশ ভোটার আগাম ভোট দেওয়ায় আগের সব রেকর্ড ভেঙে গেছে। কোনো কোনো অঙ্গরাজ্যে অর্ধেকের বেশি ভোট পড়েছে ব্যালটবাক্সে।

আর মাস হিসেবে নভেম্বরকে বেছে নেওয়ার কারণ, সে সময় নভেম্বর মাস শুরু হতে হতে, যুক্তরাষ্ট্রে ফসল কাটা শেষ হয়ে যেত। নভেম্বর শেষ হতেই শীত নামতো জাঁকিয়ে। তাই তো নভেম্বরকে ভোটের উপযুক্ত সময় হিসেবে বেছে নেওয়া হয়।

যুক্তরাষ্ট্রে আরও বেশিসংখ্যক মানুষকে ভোটে উৎসাহিত করতে শনি বা রোববার অর্থাৎ সপ্তাহান্তে এই ভোট গ্রহণ করা হোক, এই মর্মে একটি প্রস্তাব একবার কংগ্রেসের বিবেচনায় ছিল। তবে সে প্রশ্নে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কোনো তাগাদা কোনো পক্ষেরই পরবর্তীতে আর দেখা যায়নি।