অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচন পদ্ধতি এতো জটিল কেন?

সাতরং ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৭:১০ পিএম, ২ নভেম্বর ২০২০ সোমবার   আপডেট: ১১:২৭ পিএম, ২ নভেম্বর ২০২০ সোমবার

যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট সরাসরি জনগণের ভোটে নির্বাচিত হতে পারেন না। যুক্তরাষ্ট্র গণতান্ত্রিক দেশ হলেও, এই দেশটির নির্বাচন অন্য গণতান্ত্রিক দেশগুলোর মতো নয়। এতে পপুলার ভোট বা জনগণ সরাসরি পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন না।

জনগণ মূলত ভোট দিয়ে  ইলেকটোরাল কলেজ বা নির্বাচকমণ্ডলীকে নির্বাচিত করে। যদিও ব্যালটপেপারে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীর নাম লেখা থাকে। আর ইলেকটোরাল কলেজ বা নির্বাচকমণ্ডলী প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে থাকেন। 

নির্বাচনের এই জটিল প্রক্রিয়াটি জানার পর স্বভাবতই মনে আসতে পারে, খামোখা ইলেকটোরাল কলেজ বা নির্বাচকমণ্ডলীদের দিয়ে পরোক্ষ নির্বাচন করার কারণ কি? গণতান্ত্রিক দেশে যেখানে জনরায়ই শেষ কথা হওয়ার কথা। 

এর কারণ, অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষের দিকে যখন যুক্তরাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা হয়, তখন দেশটির বিশাল আকার ও বিভিন্ন প্রান্তের মধ্যে যোগাযোগ কঠিন হওয়ার কারণে জাতীয়ভাবে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন আয়োজন করা প্রায় অসম্ভব ছিলো।

তখনও যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় পরিচয় ঠিক মতো গড়ে ওঠেনি অঙ্গরাজ্যগুলোও তাদের নিজেদের অধিকারের ব্যাপারে ছিলো অনেক বেশি সোচ্চার। রাজনৈতিক দলগুলোকে সন্দেহের চোখে দেখা হতো এবং পপুলার ভোটকে (সরাসরি ভোট) মানুষ ভয় পেতো।

সংবিধান প্রণেতারা ১৭৮৭ সালে সংবিধান রচনার সময় কংগ্রেস এবং জনগণের সরাসরি ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দুটো ধারণাই বাতিল করে দেন।

তাদের যুক্তি ছিল পপুলার ভোটে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হলে লোকেরা তাদের স্থানীয় প্রার্থীকে ভোট দেবে এবং তার ফলে বড় রাজ্যগুলো আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করবে।

ছোট ছোট রাজ্যগুলো এই ইলেকটোরাল কলেজ পদ্ধতিকে সমর্থন করে কারণ এর ফলে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাদের ভূমিকাও গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হয়।

দক্ষিণাঞ্চলীয় রাজ্যগুলো এই পদ্ধতির পক্ষ নেয় কারণ সেসময় এসব রাজ্যে দাসের সংখ্যা ছিলো অনেক। দাসদের ভোটাধিকার না থাকা সত্ত্বেও আদমশুমারিতে তাদের গণনা করা হতো।

এছাড়াও সংবিধান রচয়িতারা চাননি যে রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বসে শুধু আইন প্রণেতারা দেশের প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করুক। তাই জাতীয় নির্বাচনে ছোটবড় সব রাজ্যের মতামতের প্রতিফলন ঘটাতেই এই ইলেকটোরাল কলেজ। অতীতে বেশ কয়েকবার এই পদ্ধতি বাতিলের চেষ্টা হলেও তা আদতে সম্ভব হয়নি।