ইতিহাস গড়তে প্রস্তুত নাসার জেইমস ওয়েব স্পেইস টেলিস্কোপ
সাই-টেক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:১৪ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ শনিবার আপডেট: ০৭:২৫ পিএম, ২৫ ডিসেম্বর ২০২১ শনিবার
জেইমস ওয়েব স্পেইস টেলিস্কোপ
আজ ২৫ ডিসেম্বর, বড়দিন। এ দিনটিকেই বেছে নেওয়া হয়েছে নাসা'র জেইমস ওয়েব স্পেইস টেলিস্কোপকে (জেডব্লিউএসটি) মহাশূন্যে পাঠানোর জন্য।
এর আগে ১৮ ডিসেম্বর এটি মহাকাশে পাঠানোর জন্য দিনক্ষণ ঠিক করা হলেও তা পিছিয়ে যায়। ২৫ ডিসেম্বরকে অবশেষে বেছে নেওয়া হয় টেলিস্কোপ লঞ্চ-এর জন্য। বাংলাদেশ সময় শনিবার সন্ধ্যা ৬টা বেজে ২০ মিনিটে উৎক্ষেপণ করা হবে টেলিস্কোপটি।
টেলিস্কোপটি তৈরি করতে ১০ বিলয়ন ডলার খরচ করতে হয়েছে নাসাকে। ইউরোপিয়ান আরিয়ান রকেটের সাহায্যে এটিকে ফ্রেঞ্চ গিয়ানা থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে। এখন পর্যন্ত তৈরি করা বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী মহাকাশবীক্ষণ যন্ত্র এই টেলিস্কোপ। এটি ব্যবহার করে মহাকাশে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কিনা সে সম্পর্কে নতুন তথ্য পাবেন বিজ্ঞানীরা। খবর বিবিসি'র।
মহাকাশে উৎক্ষেপণের জন্য এই টেলিস্কোপটিকে রকেটে করে ২৭ মিনিট ঊর্ধ্বমুখে গমন করতে হবে। এরপর এটি নিজে থেকেই এর বিভিন্ন অংশের ভাঁজ খুলে নিজের কাজ শুরু করবে। পুরো ব্যাপারটি যেমন উত্তেজনাকর, তেমনি একটু ভুল হলেই এই আশ্চর্য যন্ত্র নিমেষেই ধ্বংস হয়ে যেতে পারে।
এই টেলিস্কোপ নির্মাণকে একুশ শতকের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা হিসেবে অভিহিত করা হয়। এটি পরিকল্পনা, নকশা, ও তৈরি করতে ৩০ বছর সময় লেগেছে।
মহাকাশে বর্তমানে অবস্থিত হাবল টেলিস্কোপ-এর প্রতিস্থাপক হিসেবে কাজ করবে জেইমস ওয়েব টেলিস্কোপ। ৩১ বছর ধরে মহাকাশ পর্যবেক্ষণ করছে হাবল, কিন্তু এটির কার্যক্ষমতা প্রায় শেষের দিকে। হাবলের চেয়ে শক্তিশালী জেডব্লিউএসটি মহাকাশের আরও গভীরে অনুসন্ধান চালাতে পারবে। সময়ের হিসেবে আরও অনেক সুদূর অতীতের খবর নিতে পারবে এটি।
সিএনএন-এর প্রতিবেদ অনুযায়ী, টেলিস্কোপে ব্যবহৃত আয়নাটি আগের যেকোনো টেলিস্কোপের তুলনায় আকারে অনেক বড়। এটি সাড়ে ছয় মিটার পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। এর ফলে এই আয়নার সাহায্যে টেলিস্কোপটি আরও বেশি আলো সংগ্রহ করতে পারবে। আর যত বেশি আলো পাওয়া যাবে, টেলিস্কোপের পর্যবেক্ষণক্ষমতা তত বেশি বাড়বে।
এছাড়া টেলিস্কোপটিতে ষড়ভুজাকৃতির ১৮টি সোনার পাতে মোড়ানো অংশ রয়েছে। এগুলোর প্রতিটির ব্যাস ৪.৩ মিটার করে। টেলিস্কোপটির আকৃতি বড় হওয়ায় এটিকে কয়েক ভাগে ভাগ করে বানানো হয়েছে।
এর আগে প্রযুক্তিগত সীমাবদ্ধতার কারণে যেসব কাজ করা যেত না, এবার জেইমস ওয়েব সেগুলোই করে দেখাবে। এসব কাজের মধ্যে আছে আরও দূরের বস্তু পর্যবেক্ষণ ও সেগুলোর পরিচয় নিশ্চিতকরা, মহাকাশে গ্রহ-নক্ষত্র সৃষ্টির প্রাথমিক অবস্থায় কী ঘটেছিল সেসব পর্যবেক্ষণ, সুপারম্যাসিভ ব্ল্যাকহোল পর্যবেক্ষণ ইত্যাদি।