সায়েন্স ফিকশনের কিলার রোবট এখন বাস্তব ও ভয়ংকর
সাতরং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:৪৬ পিএম, ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ শনিবার
একটি কমব্যাট রোবোটিক ভেহিকল
টার্মিনেটর বা রোবোকপের মতো কিলার রোবট একসময় সিনেমার দুনিয়া মাত করলেও বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার সাথে সাথে এখন এগুলো বাস্তবে পরিণত হয়েছে। পৃথিবীর অনেক দেশ এ ধরনের প্রযুক্তি ইতোমধ্যে তৈরি করেছে, তারা এগুলোর উত্তরোত্তর উন্নতি সাধন করার চেষ্টায় রত। অনেক দেশ কিলার রোবট তৈরি করার চেষ্টায় প্রায় সফল হওয়ার পথে।
এ রোবটগুলো কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দ্বারা ঠিক করে কোনো টার্গেটের ওপর আক্রমণ করবে কিনা। এগুলো যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠালে মানুষের আর নিজের জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করার প্রয়োজন নেই। দূর থেকেই এগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করা যায় দরকারমাফিক। পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় এ মারণাস্ত্রগুলো দিনে দিনে পৃথিবীর শান্তিপ্রিয় মানুষদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠছে।
স্বয়ংক্রিয়ভাবে আক্রমণ করতে সক্ষম এ রোবটগুলো হতে পারে ড্রোন, রাইফেল, বোমা, সাঁজোয়া যান ইত্যাদি। এগুলোর পোশাকি নাম লিথাল অটোনমাস উইপনস সিস্টেম। এগুলো এখনো সরাসরি যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহার করা না গেলেও কিছু কিছু প্রোটোটাইপ যুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে।
যুদ্ধবিদ্যার ক্ষেত্রে কিলার রোবট আবিষ্কারকে সাড়াজাগানিয়া হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কারণ ঠিক যেভাবে বারুদ ও নিউক্লিয়ার বোমা যুদ্ধক্ষেত্রের অনেক হিসাবনিকাশ পাল্টে দিয়েছিল, তেমনিভাবে কিলার রোবটগুলোও ভবিষ্যতে বর্তমানে প্রচলিত যুদ্ধকৌশলের খোলনলচে বদলে দিতে পারে।
পৃথিবীর ১২৫টি দেশের মধ্যে কনভেনশন অন সার্টেইন কনভেনশনাল উইপনস (সিসিডব্লিউ) নামের একটি চুক্তি রয়েছে। এ চুক্তি অনুযায়ী যুদ্ধক্ষেত্রে মারাত্মক ক্ষতিসাধন করে এমন অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহার করা যাবে না। এ অস্ত্রগুলোর মধ্যে আছে ল্যান্ডমাইন, বুবি ট্র্যাপ, ইনসেনডিয়ারি উইপন (পোড়ানোর মাধ্যমে ক্ষতিসাধন করে), চোখ অন্ধ করে দেওয়া লেজার অস্ত্র ইত্যাদি। সিসিডব্লিউ’র দেশগুলো এখন চাইছে তারা কিলার রোবট অস্ত্রের ব্যবহারও সীমিত করবে।
কিন্তু তাদের এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মতো শক্তিশালী দেশসমূহ। কারণ এ দেশগুলোর কাছে কার্যকরী ও শক্তিশালী স্বয়ংক্রিয় রোবট অস্ত্র রয়েছে। এছাড়া তারা ইতোমধ্যে এ প্রযুক্তিতে মোটা অংকের অর্থ বিনিয়োগ করেছে। তাই তাদের নানা বাহানা এগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা নিয়ে।
ভবিষ্যতে হয়তো কিলার রোবটকে দেখা যাবে যুদ্ধের মাঠে। তা-তে হয়তো অনেক সৈন্যের জীবন বাঁচবে। কিন্তু আবেগ-অনুভূতিহীন একপাল রোবটকে ধ্বংসযজ্ঞের জন্য ছেড়ে দিলে তার ফল কী হতে পারে তা এখনো মানবসভ্যতার অজানা। আর এটাই বিশেষ চিন্তার বিষয়।
দ্য সিয়াটল টাইমস অবলম্বনে।