অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

বিয়াম স্কুল যেন লাল-সবুজ আবেগের আচ্ছাদন

আতিক উল্লাহ

প্রকাশিত: ০৫:০৩ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২১ শুক্রবার   আপডেট: ০৭:৩৯ পিএম, ১৭ ডিসেম্বর ২০২১ শুক্রবার

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চে ছবি তোলেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অতিথিরা।

পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চে ছবি তোলেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অতিথিরা।

বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে রাজধানীর ইস্কাটনে অবস্থিত বিয়াম ল্যাবরেটরি স্কুল ও বিয়াম মডেল স্কুল এন্ড কলেজ সেজেছে লাল-সুবজে। প্রধান ফটক দিয়ে ঢুকতেই চোখ আটকে যায় নিরাপত্তারক্ষীদের উপর। যাদের শরীরে ছিলো না প্রতিদিনকার ইউনিফর্ম। চারজনের দেহই লাল-সুবজের পাঞ্জাবিতে ঢাকা। অর্থাৎ বিজয়ের উচ্ছাস ছুঁয়েছে প্রতিষ্ঠানের প্রতিটি স্তরেই। 

বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপনে পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজন করে উভয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। অনুষ্ঠানের মাঝেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে পাঠ করা হয় শপথ। অনুষ্ঠান ঘিরে শিক্ষক-শিক্ষার্থী থেকে আমন্ত্রিত অতিথিরাও পরেছেন পতাকার রঙের শাড়ি কিংবা পাঞ্জাবি। পুরো স্কুল যেন ছিল লাল-সুবজ আবেগের আচ্ছাদনে। 

অনুষ্ঠানের শুরুতেই শিক্ষার্থীদের কাছে স্বাধীনতার মর্ম, মুক্তিযোদ্ধাদের আত্মত্যাগ, বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও ভবিষ্যৎ করণীয় তুলে ধরেন স্কুলের অধ্যক্ষদয়।

মহান বিজয় দিবসে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের ও জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে জানানো হয় শ্রদ্ধা।

প্রতিষ্ঠানের পরিচালক (শিক্ষা) নূরুন আখতার বলেন, আমরা বইপত্রে হরহামেশা দেশপ্রেম শব্দ পড়ি। তবে এর বাস্তবিক অনুভূতি সম্পূর্ণ আলাদা। সে অনুভূতি যদি নিজের মধ্যে আসে তবে অবশ্যই দেশকে এগিয়ে নেওয়ার ইচ্ছা আসবে। 

পরিচালক (প্রশাসন) মো: শফিকুল ইসলাম বলেন, গত ৫০ বছরে আমরা অর্থনৈতিকভাবে অনেক এগিয়ে গেছি, সময় এসেছে শিক্ষা খাতেও এমন সাফল্য দেখানোর। 

বক্তব্য পর্ব শেষ হতেই শিক্ষার্থীদের মাঝে এক অন্যরকম আনন্দ লক্ষ্য করা যায়। কারণ তখনই ছিল পুরস্কার বিতরণ পর্ব। যেখানে মুক্তিযুদ্ধ, বাংলাদেশের প্রকৃতি নিয়ে রচনা, চিত্রাঙ্কন, গান ও আবৃত্তির জন্য তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয় পুরস্কার।

বিজয়ী শিক্ষার্থীর হাতে পুরস্কার তুলে দিচ্ছেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক (শিক্ষা) নূরুন আখতার।

মুক্তিযুদ্ধ ও বাংলাদেশ শিরোনামে রচনা লেখে প্রথম হয় পঞ্চম শ্রেণী শেষ করা নিহান সরকার রুদ্র। রচনার লেখার জন্য মুক্তিযুদ্ধের বর্ণনা পড়তে গিয়ে লাখো বাঙালির আত্মত্যাগ তাকে নাড়া দেয় এবং দেশপ্রেমে উৎসাহ জোগায় বলে জানায় রুদ্র। সেই সাথে বঙ্গবন্ধুকে আদর্শ মেনে জীবন গঠনের ইচ্ছাও ছিল তার কণ্ঠে। 

পুরস্কার নেওয়ার পর সবাই একসঙ্গে ছবি তুলতে থাকেন। পুরো অডিটোরিয়াম জুড়ে তখন আনন্দের উচ্ছাস আর হইহুল্লোড়। তবে হঠাৎ করে স্ক্রিনে প্রধানমন্ত্রী শপথ পাঠ করানোর আগে জাতীয় সংগীত বেজে উঠতেই পুরো রুমে নামে রাজ্যের নীরবতা। আমন্ত্রিত অতিথি থেকে অভিভাবকদের হাত ধরে আসা শিশুরাও দাঁড়িয়ে কণ্ঠ মেলান আমার সোনার বাংলায়। 

শ্রদ্ধা জানিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির সামনে বিয়াম ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালক ড.এম.মিজানুর রহমানের সঙ্গে পরিচালক শিক্ষা, অধ্যক্ষ ও শিক্ষক মন্ডলি।

প্রধানমন্ত্রীর পুরো বক্তব্য সবাই শুনে যান নীরবে। শপথ বাক্য পাঠ করতেই একইসঙ্গে অসাম্প্রদায়িক চেতনায় সমৃদ্ধ সোনার বাংলা গড়ার শপথ নেন। 

শেষে অনুষ্ঠিত হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। যার শুরুটা হয় ‘সূর্যোদয়ে তুমি, সূর্যাস্তেও তুমি, ও আমার বাংলাদেশ প্রিয় জন্মভূমি’ গান দিয়ে। শিশুতোষ কণ্ঠে গাওয়া গানটি যেন বড়দের মাঝে জাগিয়ে তুলেছিলো দেশপ্রেম, ছোটদের মাঝে বুনেছে দেশের প্রতি ভালোবাসা আর সোনার বাংলা গড়ার অঙ্গিকার।