আমেরিকার গণতন্ত্র হুমকির মুখে: তথ্যমন্ত্রী
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, চট্টগ্রাম
প্রকাশিত: ০৫:২৩ পিএম, ১৫ ডিসেম্বর ২০২১ বুধবার
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ
যাদের দেশে নির্বাচনের ফলাফলকে ভণ্ডুল করার জন্য সংসদে হামলা হয়, সেখানে ঘেরাও করে পুলিশ অফিসারসহ কয়েকজনকে হত্যা করা হয়, তারা অন্য দেশকে গণতন্ত্রের ছবক দেওয়ার অধিকার রাখে কি না প্রশ্ন রেখেছেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ।
বুধবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী ও মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আলোচনাসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেছেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে কদিন আগে গণতন্ত্র সম্মেলন হয়েছিল, গণতন্ত্র সম্মেলনে পাকিস্তানসহ অনেককে দাওয়াত করা হলো, কিন্তু মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রও আজ হুমকির সম্মুখীন। কারণ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংসদে যেভাবে হামলা ও কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছিল এমন ঘটনা কখনো বাংলাদেশে হয়নি।
হাছান মাহমুদ বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র, তাদের সঙ্গে আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক রয়েছে। জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসবাদ দমনেও তাদের সাথে আমাদের সহযোগিতা রয়েছে। তাই আমাদের বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে অনুরোধ জানাব, যারা এ দেশের স্বাধীনতা চায়নি, এ দেশের উন্নয়ন-সমৃদ্ধি নিয়ে ঈর্ষান্বিত, তাদের কথায় যেন তারা প্রভাবিত ও বিভ্রান্ত না হয়। সেটিই থাকবে আমাদের স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছরে এসে মুজিববর্ষে আমাদের প্রত্যাশা।
তিনি বলেন, আমরা বাংলাদেশ অনেক উন্নত রাষ্ট্রের চেয়েও জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাস দমনে সফলতার সঙ্গে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছি। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশের নিরাপত্তা বাহিনী, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, পুলিশ, র্যাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। আজকে তাদের কয়েকজনের বিরুদ্ধে যেই নিষেধাজ্ঞা এটি আসলে জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদকে উসকে দিচ্ছে, উৎসাহিত করছে।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাছান মাহমুদ বলেন, আজকে বাংলাদেশ বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন পূরণের পথে অদম্য গতিতে এগিয়ে চলেছে। এই অগ্রগতি অনেকের পছন্দ হয় না। আজকে বাংলাদেশ একটি গর্বিত দেশ, স্বাধীনতার পঞ্চাশতম বর্ষে বঙ্গবন্ধুর দেশ রচনা ও শেখ হাসিনার সার্থকতা সেখানে, আজকে পাকিস্তান আমাদের দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে।
তিনি বলেন, যেই পাকিস্তান স্বাধীনতা অর্জনের পর বলেছিল, বোকা বাঙালি চলে গেছে, ভালো হয়েছে। আমাদের খাটো করে তারা অহংকার করেছে, সেই পাকিস্তান সংশয়ে ছিল আদৌ বাংলাদেশ টিকে থাকতে পারবে কি না, সেই পাকিস্তান আজ দীর্ঘশ্বাস ফেলে। সব সূচকে পাকিস্তানকে আমরা পেছনে ফেলেছি।
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশ রচনা করে যাননি, বাংলাদেশকে একটি উন্নত-সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে রূপান্তর করার জন্য চেষ্টা করে গেছেন। কিন্তু তাকে সেই সময় দেওয়া হয়নি। তাকে যখন হত্যা করা হয়, ১৯৭৪-৭৫ সালে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ছিল ৯.৫৪ শতাংশ। আজ পর্যন্ত আমরা সেই রেকর্ড ভাঙতে পারিনি।
তিনি বলেন, পাকিস্তানের প্রথম স্বাধীনতা দিবস ছিল ১৯৪৮ সালের ১৪ আগস্ট। সেই সময় পাকিস্তানের প্রথম স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে ১২ আগস্ট বঙ্গবন্ধু মুজিব একটি বিবৃতি দিয়েছিলেন। সেই বিবৃতিতে তিনি লিখেছিলেন, ১৪ আগস্ট আনন্দ-উল্লাসের দিন নয়।
তিনি বলেন, আমরা যদি বিশ্ব ইতিহাস পড়ি, অনেক যোদ্ধার কথা শুনি, তারা যুদ্ধ করেছে এক সেনাবাহিনীর সঙ্গে আরেক সেনাবাহিনী। কিন্তু সেনাবাহিনীর সঙ্গে জনযুদ্ধ, জনবলের যুদ্ধ, সে রকম যুদ্ধ সংঘটিত করা এবং লাখ লাখ মানুষের রক্তের বিনিময়ে দেশ স্বাধীন করা এটি বিশ্ব ইতিহাসে বিরল। সে জন্য জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান শুধু সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি নয়, তিনি বিশ্ব ইতিহাসেও একজন বিরল নেতা।