যেভাবে জলবায়ু পরিবর্তনের দাম চোকাচ্ছে বাংলাদেশের মানুষ
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ১২:৫৫ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২১ শনিবার আপডেট: ১২:৫৫ পিএম, ১১ ডিসেম্বর ২০২১ শনিবার
এবারের বৈশ্বিক জলবায়ু সম্মেলন কপ২৬-এ বিশ্বনেতারা দরিদ্র দেশগুলোকে কোনো আশা দেখাতে পারেনি। যেখানে জলবায়ু পরিবর্তনের সবচেয়ে বেশি ভুক্তভোগী এ দেশগুলো বিশেষভাবে চেয়েছিল তাদের জন্য ধনী রাষ্ট্রগুলো আলাদা তহবিল গড়ে তুলুক, সেখানে বিশ্ব মোড়লেরা তা সযত্নে এড়িয়ে গেছেন।
কিন্তু কাউকে না কাউকে তো এর মূল্য চোকাতে হবে। ধনীদেশগুলোর আরাম-আয়েস বা শ্রীবৃদ্ধির দাম দেওয়ার জন্য মূলত নিজেদের পকেট থেকে খরচ করছে বাংলাদেশের মতো দরিদ্র দেশগুলো। পরিহাসের বিষয়, যেখানে ধনীরা তাদের কৃতকর্মের জন্য দায়ভার নিয়ে তা শোধরানোর চেষ্টা করবেন, সেখানে তাদের উন্নতির জন্যই অপ্রয়োজনীয় খরচ করতে হচ্ছে দরিদ্র দেশের উপকূলবাসী জনগণকে।
এ খরচের অন্যতম উৎস হলো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবের কারণে সৃষ্ট প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলা। প্রতিবছর বন্যা বা নদীভাঙ্গনের কারণে অসংখ্য বাংলাদেশি তাদের ঘরবাড়ি হারান। তাদেরকে আবার সেগুলো নতুন করে তৈরি করতে হয় পরের বছর আবারও একই দুর্দশায় পড়ার জন্য। এটা কেবল একটা উদাহরণ, এর বাইরে আরও নানা উপায়ে নিয়মিত জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বাড়তি ব্যয় করতে হচ্ছে বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দরিদ্র দেশের মানুষকে।
স্রেফ বাংলাদেশের মানুষেরাই কেবল প্রতি বছর দুই বিলিয়ন মার্কিন ডলার গচ্চা দিচ্ছেন জলবায়ু পরিবর্তনকে মোকাবেলা করতে। টাকার হিসেবে এ অংক ১৭ হাজার ১৪৫ কোটির ঘরে। এর সিংহভাগ তারা ব্যয় করছেন তাদের নিজেদের আয়ের টাকা থেকে। খুব কম পরিমাণেই সরকারি অনুদান বা আন্তর্জাতিক সহায়তা পান তারা। এতে করে এখন আর তাদের নিজস্ব কোনো সঞ্চয় থাকছে না।
এরা সবাই জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলার ক্ষেত্রে চুপচাপ নিজের জায়গা থেকে এভাবে কাজ করে যাচ্ছেন, অথচ তাদের এই অবদানের এখনো অব্দি আন্তর্জাতিকভাবে কোনো প্রকার স্বীকৃতি মেলেনি। তাই অনেকে তাদেরকে অভিহিত করছেন ‘সাইলেন্ট ফাইনান্সিয়ার’ হিসেবে।
কপ২৬ সম্মেলনে ক্ষতিগ্রস্থ দেশগুলোর জন্য প্রস্তাবিত আর্থিক সহায়তা প্রকল্প ‘লস আ্যান্ড ড্যামেজ’ প্রজেক্ট আশার আলো দেখতে পায়নি। এভাবে চলতে থাকলে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো আর কখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারবে না।
থমসন রয়টার্স অবলম্বনে।