মহাসমুদ্র: জলবায়ু সংকটে সবচেয়ে বড় রক্ষাকবচ
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:১১ পিএম, ১ ডিসেম্বর ২০২১ বুধবার আপডেট: ০৫:০২ পিএম, ১ ডিসেম্বর ২০২১ বুধবার
গত এক যুগে সমুদ্রের অ্যালজি ৩৪ গিগাটনের সমপরিমাণ বৈশ্বিক কার্বন শোষণ করেছে
জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে আপনি নিজের অবস্থান থেকে কিছুটা অবদান রাখতে পারেন। আপনার কিছু সচেতন পদক্ষেপ ও কার্যকলাপ সামগ্রিকভাবে জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিরোধে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। অনেকভাবেই এ অবদান রাখা সম্ভব।
তবে পরিবেশ রক্ষার এ লড়াইয়ে সামিল হতে আমাদের সবার প্রাথমিক অস্ত্র হিসেবে গাছকেই স্মরণে আসে। বেশি বেশি গাছ লাগানোর কথা আমরা প্রায়ই শুনি। কিন্তু গাছের চেয়েও আরেকটি বড় প্রভাবক আছে যেটি জলবায়ু সংকটে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ভূমিকা রাখছে। আর সেটি হলো পৃথিবীর উপসাগর, সাগর, ও মহাসাগরগুলো।
সমুদ্র হচ্ছে বৈশ্বিক জলবায়ুর সবচেয়ে বড় নিয়ন্ত্রক। কারণ, আমাদের পৃথিবীতে যে পরিমাণ কার্বন ডাইঅক্সাইড নিঃসৃত হয়, তার প্রায় বেশিরভাগ পরিমাণ সমুদ্রগুলো নিজেদের মধ্যে শুষে নেয়। এছাড়া পৃথিবীর ৯০ শতাংশ তাপমাত্রাও শোষিত হয় সমুদ্রগুলোর মাধ্যমে।
১৯৯৪ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত পৃথিবীর সমুদ্রগুলো ৩৪ গিগাটনের সমপরিমাণ বৈশ্বিক কার্বন শোষণ করেছে। আর এ কাজটি করেছে সমুদ্রের ভেতর থাকা বিভিন্ন শৈবাল ও জলজ উদ্ভিদগুলো যাদেরকে অ্যালজি বলা হয় (algae)। বিজ্ঞানীরা মত প্রকাশ করেছেন অনেক অনেক গাছ লাগিয়েও হয়তো শেষ পর্যন্ত পৃথিবীকে জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে রক্ষা করা যাবে না, কিন্তু সে কাজটাই করার সক্ষমতা রাখে সমুদ্রের অ্যালজিগুলো।
অ্যালজিগুলো গাছের চেয়ে দ্রুততর সময়ে পৃথিবীকে কার্বনমুক্ত করতে পারবে। এই অ্যালজিকে বিজ্ঞানীরা এখন খাবারে পরিণত তৈরি করার চেষ্টা করছেন। এক্ষেত্রে তারা অ্যালজি থেকে তেল উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করছেন। এছাড়া অ্যালজিকে প্লাস্টিকের বিকল্প হিসেবেও ব্যবহার নিয়ে গবেষণা করা হচ্ছে। এগুলোর বাইরেও অ্যালজি থেকে জৈব জ্বালানি তৈরি করা যায়। অর্থাৎ অ্যালজি ব্যবহার করে আমরা যেমন নিঃসৃত কার্বনের পরিমাণ কমাতে পারি, তেমনিভাবে কার্বন উৎপাদনকারী অনেক বস্তুই অ্যালজি দ্বারা প্রতিস্থাপিত করা সম্ভব। সুতরাং, যদি পৃথিবীকে জলবায়ুর ত্রাস থেকে বাঁচাতেই হয়, তাহলে আমাদের 'ব্রহ্মাস্ত্র' হওয়া উচিত এখানকার যাবতীয় মহাসমুদ্র।
নেচার অবলম্বনে।