অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

শেষ বলের উত্তেজনায় শেষ পর্যন্ত পাকিস্তানের জয়

স্পোর্টস ডেস্ক

প্রকাশিত: ০৫:৩৪ পিএম, ২২ নভেম্বর ২০২১ সোমবার   আপডেট: ০৫:৫৪ পিএম, ২২ নভেম্বর ২০২১ সোমবার

শেষ ওভারে দরকার ছিল ৮ রান। নিয়মিত বোলারদের কোটা শেষ হওয়ায় বল হাতে নেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ নিজেই। প্রথম তিন বলে দুই উইকেট নিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দেন কাপ্তান। তবে শেষ পর্যন্ত জয়ের বন্দরে নিয়ে জেতে পারেননি দলকে। পরের তিন বলে কাঙ্খিত লক্ষ্য পার করে ফেলে পাকিস্তান। 

প্রথম বল ডট দেয়ার পর দ্বিতীয় বলে ডিপ স্কয়ার লেগে সরফরাজ আহমেদকে নাঈম ইসলামের ক্যাচ বানান মাহমুদউল্লাহ। পরের বলেই নাজমুল হোসেন শান্তর হাতে হায়দার আলী ক্যাচ তুলে দিলে জয়ের স্বপ্ন দেখে বাংলাদেশ। 

শেষ তিন বলে লক্ষ্য থাকে সেই ৮ রানই। চতুর্থ বলেই ছক্কা আদায় করে ম্যাচে সমতা আনেন ইফতেখার আহমেদ। পঞ্চম বলেই তাকে ফিরিয়ে আবারও বাংলাদেশকে ম্যাচে ফেরান মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। শেষ বলে প্রয়োজন ছিল ২ রান, বলটি থেকে বাউন্ডারি আদায় করে পাকিস্তানের জয় নিশ্চিত করেন মোহাম্মদ নাওয়াজ। 

তার আগেই অবশ্য হয়ে গেছে ছোট্ট এক নাটক। শেষ বলটি আম্পায়ারের কাছ থেকে ডিলিভারি করেন রিয়াদ, অস্বস্তিতে পড়ে ডেলিভারি হওয়ার পর উইকেট থেকে সরে যান নাওয়াজ। বলটি গিয়ে নাওয়াজের স্ট্যাম্পও ভেঙে দেয়। স্বাভাবিক নিয়মে এটি আউট হলেও ক্রিকেটিয় চেতনায় তাকে ব্যাটিংয়ের সুযোগ দেন টাইগার কাপ্তান। তবে নিজেও দিয়েছেন জবাব, বল করতে এসেও বালু হাতিয়ে ফিরে যান তিনি। 

টসে জিতে টাইগাররা আগে ব্যাটিং করে মাত্র ১২৫ রানের লক্ষ্য দিলেও তা সহজ হয়নি পাকিস্তানের জন্য। শেষ ১০ ওভারে পাকিস্তানের দরকার ছিল ৭৯ রান।  ৫ উইকেট হাতে রেখে সে লক্ষ্য তাড়া করে সফরকারীরা। দলেটির হয়ে সর্বোচ্চ ৪৫ রান করেন হায়দার আলী। আর ৪০ রান করেন ওপেনার মোহাম্মদ রিয়াজ। বাংলাদেশের হয়ে মাহমুদউল্লাহর তিন উইকেটের পাশাপাশি একটি করে উইকেট নেন অভিষিক্ত শহিদুল ও আমিনুল ইসলাম। 

এদিকে বাংলাদেশের ১২৪ রানের মধ্যে ৪৭ রান এসেছে ওপেনার নাঈম শেখের ব্যাট থেকে। অনেকটা ওয়ানডে স্টাইলে ব্যাট করে একপ্রান্ত আগলে রেখে ৫০ বলে ৪৭ রান করেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।  

একটি জয়ের দেখা পেতে টস জিতে ব্যাট করতে নামা বাংলাদেশ দলের ওপেনিং জুটিতে আরেক দফা এসেছে বদল। সাইফ হাসানের ব্যর্থতায় আজ নাঈমের সাথে ইনিংসের গোড়াপত্তন করেন নাজমুল হোসেন শান্ত। তবে বদলায়নি বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটির ব্যর্থতার গল্প। ইনিংসের দ্বিতীয় ওভারে অভিষিক্ত পাকিস্তানি পেসার শাহনেওয়াজ দাহানির বলে বোল্ড হয়ে শান্ত ফেরেন ৫ রান করে। 

একাদশে ফেরা শামীম হোসেন এদিন ৩ নম্বরে ব্যাট করতে নামেন। এক প্রান্তে ধীর গতির নাঈমকে রেখে অন্যপ্রান্তে আক্রমণাত্মক খেলার চেষ্টা করেছেন এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। জুটিতে যোগ হয় ৩০ রান। কিন্তু পাকিস্তানের একাদশে ফেরা লেগ স্পিনার উসমান কাদেরের করা প্রথম ওভারেই তেড়েফুঁড়ে মারতে গিয়ে শামীম ক্যাচ দেন ডিপ মিড উইকেটে। থামেন ২৩ বলে ২২ রান করে।

শামীমের বিদায়ের পর খোলস ছেড়ে বেরোনোর চেষ্টা করেন নাঈম। নিজের খেলা প্রথম ২১ বলে ১০ রান করা এই ব্যাটার উসমান কাদিরের করা ইনিংসের ১০ম ওভারে হাঁকান একটি করে চার ও ছক্কা। তাকে যোগ্য সঙ্গ দেন সিরিজ জুড়ে ইতিবাচক ব্যাটিং উপহার দেওয়া আফিফ হোসেন। ১২তম ওভারে উসমান কাদিরকে আফিফ হাঁকান ২ ছক্কা। খানিক পরই অবশ্য কাদিরের দ্বিতীয় শিকার হন আফিফ। তার ব্যাট থেকে আসে ২০ রান।

ইনিংসের ১৫তম ওভারে দলীয় স্কোর যখন ৮০ তখন আফিফ আউট হলে ক্রিজে আসেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ। ওপেনিংয়ে নেমে ইনিংসের দশম ওভারে প্রথম বাউন্ডারির স্বাদ পাওয়া নাঈমকে এরপর কিছুটা আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা যায়। তবে ১৯তম ওভারে আক্ষেপ নিয়ে মাঠ ছাড়েন এই তরুণ। ফিফটির পথে হাঁটতে থাকা নাঈম ৪৭ রানে প্যাভিলিয়নের পথ ধরেন। ৫০ বলের ইনিংসটি সাজান সমান ২টি করে চার আর ছয়ের মারে। যেখানে ডট খেলেন ২২টি।

শেষদিকে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ১৪ বলে ১৩ রানের কল্যাণে নির্ধারিত ২০ ওভার শেষে ৭ উইকেট হারিয়ে ১২৪ রানে পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ দল। পাকিস্তানের হয়ে উসমান কাদির ও মোহাম্মদ ওয়াশিম সর্বোচ্চ ২টি উইকেট নেন।