পিঁপড়েখেকোর জ্বালায় অস্থির শহরবাসী
সাতরং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৯:২৫ পিএম, ২০ নভেম্বর ২০২১ শনিবার
আর্মাডিলো
জেসন বুলার্ডের কাঁধের বন্দুক খুব দ্রুত হাতে চলে এল। বন্দুকের নল সামনের কোনো বস্তুর দিকে তাক করা। 'পেলাম বোধহয় আরেকটা', বলতে বলতে এগিয়ে গেলেন। নাহ, হতাশই হতে হলো, জিনিসটা স্রেফ একটা পাথরের টুকরা।
নর্থ ক্যারোলাইনা স্যাফায়ার শহরের মানুষদের দশা এখন এমন। তারা সবার মধ্যে এখন শিকারের তাড়না। খুঁজে খুঁজে আর্মাডিলো মারার চেষ্টা করছেন তারা। এ প্রাণীর উৎপাতে তাদের টিকে থাকা দায় হয়েছে আজকাল।
আর্মাডিলো আমেরিকার একটি স্থানীয় জীব। সিংগুলাটা পর্বের এ প্রাণীটির দেখতে ছোট। এর গায়ে কচ্ছপের মতো বেশ শক্তপোক্ত খোলস। স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে কেবল আর্মাডিলোর শরীরে এমন শক্ত খোলসের দেখা মেলে। এদের প্রিয় খাবার পিঁপড়া ও উইপোকা। অন্যান্য পোকামাকড়ও তাদের খাবারের তালিকায় রয়েছে। খাবার সংগ্রহ করতে নাকের ওপর ভরসা করে তারা।
আমেরিকার দক্ষিণাঞ্চলেই মূলত এই প্রাণীটির আবাসস্থল। কিন্তু সম্প্রতি এটি দেশটির উত্তরের রাজ্যগুলোতেও ছড়িয়ে পড়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এভাবে বাসস্থান পরিবর্তন করছে আর্মাডিলো। আর তাতেই নাস্তানাবুদ হয়ে গেছেন স্যাফায়ারবাসীর মতো আরও অনেক শহরের মানুষ।
বুলার্ড নিজেই এখন পর্যন্ত ১৫টি আর্মাডিলো শিকার করেছেন। গত দুসপ্তাহেই আটটিকে নিকেশ করেছেন তিনি। লোকেদের বাড়িঘরের উঠান বা বাগানে খাবার খুঁজতে গিয়ে সেসব তছনছ করে ফেলছে আর্মাডিলোরা। আর তাই তাদের কাছ থেকে রক্ষা পেতে মরিয়া স্যাফায়ার ও আশেপাশের লোকজন। সেজন্য তারা বুলার্ডকে অনুমতি দিয়েছেন রাতবিরেতে তাদের বাড়ির আঙিনায় ঢুকে আর্মাডিলো খোঁজার জন্য। বাউন্টি হান্টার বুলার্ড এখন একটা আর্মাডিলো মারতে পারলে একেবারে একশ ডলার পকেটে পুরেন।
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে এভাবে বাধ্য হয়ে দক্ষিণ আমেরিকার স্থানীয় এ প্রাণী এখন উত্তর ও উত্তর-পূর্ব আমেরিকাতেও পৌঁছে গিয়েছে। এসব অঞ্চলে শীতের জোর আগের চেয়ে কমে গেছে (অবশ্যই জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে)। আর্মাডিলো ঠাণ্ডা পরিবেশে থাকতে অপছন্দ করে। তাই উত্তরের রাজ্যগুলো এখন প্রাণীটির আদর্শ আবাসস্থল হয়ে উঠেছে।
দ্য গার্ডিয়ান অবলম্বনে