পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইটের সংখ্যা ও তার সমস্যা
সাই-টেক ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৬:৫৫ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০২১ রোববার আপডেট: ০৭:১৭ পিএম, ১৪ নভেম্বর ২০২১ রোববার
স্যাটেলাইট
১৯৫৭ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন প্রথমবারের মতো মানবনির্মিত স্যাটেলাইট পাঠায় পৃথিবীর কক্ষপথে। তারপর থেকে মহাকাশের পথে স্যাটেলাইটের যাত্রা অব্যাহত থাকে। কিন্তু বর্তমান সময়ে এসে পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইটের পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে গিয়েছে, আর তা দিনে দিনে একপ্রকার সমস্যা হিসেবেই উদ্ভূত হচ্ছে আমাদের গ্রহের জন্য।
১৯৫০-এর দশকের পর থেকে প্রতি বছর ১০-৬০টির মতো স্যাটেলাইট মহাকাশে পাড়ি জমাত। এমনটা চলছির ২০১০ পর্যন্ত। কিন্তু ২০১০-এর পর থেকে স্যাটেলাইট প্রযুক্তির উন্নতির কারণে কক্ষপথে স্যাটেলাইট পাঠানোর পরিমাণও খুব দ্রুতগতিতে বাড়তে থাকে। ২০২০ সালে পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথে ১৩০০ ও ২০২১ সালে এখন পর্যন্ত ১৪০০-এর বেশি স্যাটেলাইট পাঠানো হয়েছে।
পৃথিবীর নিম্ন কক্ষপথের দৈর্ঘ্য ভূপৃষ্ঠ থেকে ২০০০ কিলোমিটার। আগামী দশকগুলোতে এই অঞ্চলে স্যাটেলাইটের সংখ্যা সূচকীয় হারে বাড়বে বলে আশঙ্কা করেছেন বিশেষজ্ঞরা। এর কারণ হচ্ছে, আগে স্যাটেলাইট-মহাকাশ এসব ব্যাপার নিয়ে কেবল বিভিন্ন রাষ্ট্র কাজ করলেও আজকাল এগুলোর পাশাপাশি বেসরকারি কর্পোরেট সংস্থাগুলোও নিজেদের প্রয়োজনে নিয়মিতই মহাকাশে স্যাটেলাইট পাঠাচ্ছে। স্পেইসএক্স-এর মতো বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এ কাজে প্রাযুক্তিক সহায়তা দিচ্ছে।
এতে করে ক্ষতি হচ্ছে মহাকাশের। স্যাটেলাইটগুলোর ভাঙা টুকরো মহাকাশে জঞ্জাল তৈরি করেছে। এই ভাঙা স্যাটেলাইটগুলো অন্য স্যাটেলাইট, ও স্পেইসক্রাফটকে ক্ষতিগ্রস্ত করার সম্ভবনা রাখে। যেমন ২০২১ সালের জুন মাসে আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনের গায়ে স্যাটেলাইটের ভাঙা অংশের আঘাতে একটি গর্ত তৈরি হয়। তবে সৌভাগ্যক্রমে এতে বিশেষ কোনো ক্ষতি হয়নি।
কেসলার সিনড্রম বলে আরেকটা আশঙ্কার কথা এখানে উল্লেখ করতেই হয়। এভাবে যদি পৃথিবীর কক্ষপথে স্যাটেলাইটের জঞ্জালে পরিপূর্ণ হয় যায়, তাহলে ভবিষ্যতে পৃথিবী থেকে কোনো রকেট মহাকাশে পাঠানো সম্ভব হবে না। এই সম্ভাবনাকে কেসলার সিনড্রম বলা হয় এবং অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন, এতে করে মানুষের অন্য গ্রহে বাস করতে যাওয়ার লক্ষ্য বিশেষভাবে বাধাগ্রস্ত হবে।