অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ড: টি-টোয়েন্টির নতুন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হবে কারা?

প্রকাশিত: ১১:১৩ এএম, ১৪ নভেম্বর ২০২১ রোববার   আপডেট: ১১:৪১ এএম, ১৪ নভেম্বর ২০২১ রোববার

সপ্তম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে মুখোমুখি হচ্ছে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া। আগের ছয় আসরে কোনবারই শিরোপার স্বাদ নিতে পারেনি এই আসরের দুই ফাইনালিস্ট। তাই বলেই দেয়া যায় টি-টোয়েন্টিতে নতুন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন পেতে যাচ্ছে ক্রিকেট। 

দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বাংলাদেশ সময় রাত ৮টায় শুরু হবে নিউজিল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মধ্যকার ফাইনাল।

দ্বিতীয়বারের মত টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনাল খেলতে নামবে অস্ট্রেলিয়া। এর আগে ২০১০ সালে ফাইনালে উঠলেও, শিরোপার স্বাদ নিতে পারেনি অসিরা। ইংল্যান্ডের কাছে ৭ উইকেটে ম্যাচ হারে অস্ট্রেলিয়া। এরপর আর ফাইনালের টিকিট পায়নি অসিরা। সপ্তম আসরে এসে আবার ফাইনালে উঠেছে অস্ট্রেলিয়া।  

সুপার টুয়েলভে ৫ ম্যাচের ৪টিতে জিতে ৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ রানার্স-আপ হয়ে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করে অস্ট্রেলিয়া। সেমিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রতিপক্ষ ছিলো শক্তিশালী পাকিস্তান। বেশিরভাগ সময়ই সেমির ম্যাচে আধিপত্য বিস্তার করে খেলেছে পাকিস্তান। নিজেদের ও অস্ট্রেলিয়া ইনিংসের ১৫ ওভার পর্যন্ত চালকের আসনেই ছিলো পাকিস্তান। কিন্তু ১৬ থেকে ১৯ ওভারের মধ্যে ম্যাচে মোড় ঘুড়িয়ে দেয় অস্ট্রেলিয়ার দুই ব্যাটার মার্কাস স্টয়নিস ও ম্যাথু ওয়েড। শেষ পর্যন্ত ৫ উইকেটের জয়ে ফাইনালে উঠে অসিরা।

এদিকে নিউজিল্যান্ডকে সমীহ করার কথা জানালেও ফাইনাল জিততে আত্মবিশ্বাসী অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ। তিনি বলেন, ‘এটি ফাইনাল ম্যাচ। আর প্রতিপক্ষ হিসেবে নিউজিল্যান্ড অনেক ক্যালকুলেটিভ দল। তারা অনেক পরিকল্পনা নিয়ে খেলতে নামবে। আমাদের সেভাবেই প্রস্তুত থাকতে হবে। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলা করে ফাইনাল জিততে হবে এবং প্রথমবারের মত শিরোপার স্বাদ নিতে হবে।’
নিউজিল্যান্ডকে শক্তিশালী ও পরিকল্পিত দল মনে করেন অস্ট্রেলিয়ার ফিঞ্চও। প্রতিপক্ষের অধিনায়কের সেই মন্তব্যের প্রতিফলন সুপার টুয়েলভ ও সেমিফাইনালে দেখিয়েছে নিউজিল্যান্ড।

অন্যদিকে, সুপার টুয়েলভে পাকিস্তানের কাছে শেষ মুর্হূতে হেরে বসলেও, ম্যাচে নিজেদের সেরাটাই ঢেলে দিয়েছে নিউজিল্যান্ড। ভারতকে নাকানিচুবানি দেয়ার পর, আফগানিস্তান-স্কটল্যান্ড ও নামিবিয়ার বিপক্ষেও জয় তুলে নেয় কিউইরা। ৫ ম্যাচে ৪ জয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপ প্রতিপক্ষ হিসেবে নিউজিল্যান্ড পায় শিরোপার অন্যতম দাবীদার ইংর্ল্যাডকে। ওপেনার ড্যারিল মিচেল ও জেমস নিশামের ব্যাটিং দৃঢ়তায় ইংল্যান্ডকে ৫ উইকেটে হারায় নিউজিল্যান্ড। 
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এবারই প্রথম ফাইনাল খেলছে নিউজিল্যান্ড। আগের ছয় আসরে কিউইদের সর্বোচ্চ সাফল্য ছিলো সেমিফাইনাল। ২০০৭ ও ২০১৬ সালের সেমিতে খেললেও ফাইনালে খেলার সুযোগ এবারই প্রথম হলো নিউজিল্যান্ডের।

কিন্তু প্রথমবারের মত ফাইনালে উঠেই বাজিমাত করতে চায় নিউজিল্যান্ড। দলের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন বলেন, ‘ওয়ানডে বিশ্বকাপে শেষ দুই আসরের ফাইনাল খেলার অভিজ্ঞতা আমাদের আছে। কিন্তু টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে এই প্রথম ফাইনাল খেলছি আমরা। শিরোপা জিতে এই প্রথমকে স্মরনীয় করতে চাই। অস্ট্রেলিয়ার মত দলের বিপক্ষে জিততে হলে, তিন বিভাগেই তাদের চেয়ে ভালো খেলতে হবে। ম্যাচের শুরু থেকেই অসিদের উপর চাপ সৃষ্টি করতে হবে।’

পুরো আসরেই এ পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডের ব্যাটার ও বোলাররা ভাল পারফরমেন্স করেছে। দলের সেরা ব্যাটাররা রানের মধ্যেই আছেন। আসরে মিচেল ১৯৭, গাপটিল ১৮০, উইলিয়ামসন ১৩১ ও কনওয়ে ১২৯ রান করেছেন। তবে ফাইনালের মঞ্চে কনওয়ের সার্ভিস পাবে না নিউজিল্যান্ড। নিজের ভুলে হাত ভেঙে ফাইনাল থেকে ছিটকে পড়েন কনওয়ে।

সেমিফাইনালে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১৪তম ওভারে আউট হয়ে হতাশায় নিজের ব্যাটে হাত দিয়ে আঘাত করে হাত ভেঙে ফেলেন কনওয়ে। ফলে বিশ্বকাপের ফাইনালে কনওয়েকে পাচ্ছে না নিউজিল্যান্ড। ফাইনালের আগে কনওয়েকে হারানোটা বড় ধাক্কা মনে করছেন  নিউজিল্যান্ড কোচ গ্যারি স্টিড। তিনি বলেন, ‘এমন সময় তার ছিটকে পড়াটা হতাশার। তাকে আমরা মিস করবো।, তবে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।’

টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে এগিয়ে অস্ট্রেলিয়াই। ১৪ ম্যাাচে মুখোমুখি হয়ে ৯বার জিতেছে অসিরা। পাঁচ জয় অসিদের।

আর বিশ্বকাপের মঞ্চে একবার দেখা হয় অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের। সেটিতে জয় পেয়েছিলো কিউইরা। ২০১৬ সালে সুপার টেনে গ্রুপ-২এর ম্যাচে ৮ রানে জিতেছিলো নিউজিল্যান্ড।

এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ দেখা হয়েছিলো নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার। নিউজিল্যান্ড সফরে ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে জিতে অসিরা।

নিউজিল্যান্ড দল: কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), টড অ্যাস্টল, ট্রেন্ট বোল্ট, মার্ক চ্যাপম্যান, এডাম মিলনে, মার্টিন গাপটিল, কাইল জেমিসন, ড্যারিল মিচেল, জেমস নিশাম, গ্লেন ফিলিপস, মিচেল স্যান্টনার, টিম সেইফার্ট, ইশ সোধি ও টিম সাউদি।

অস্ট্রেলিয়া: অ্যারন ফিঞ্চ (অধিনায়ক), অ্যাস্টন অ্যাগার, প্যাট কামিন্স, জস হ্যাজেলউড, জস ইংলিস, মিচেল মার্শ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, কেন রিচার্ডসন, স্টিভেন স্মিথ, মিচেল স্টার্ক, মার্কুস স্টয়নিস, মিচেল সুয়েপসন, ম্যাথু ওয়েড, ডেভিড ওয়ার্নার এবং অ্যাডাম জাম্পা