এবার গ্রহাণুর গায়ে স্পেসক্রাফট ভাঙবে নাসা!
সাতরং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:১৯ পিএম, ৫ নভেম্বর ২০২১ শুক্রবার আপডেট: ০৫:৪৯ পিএম, ৫ নভেম্বর ২০২১ শুক্রবার
'ডিপ ইম্প্যাক্ট' সিনেমাটার কথা মনে আছে? (স্পয়লার না চাইলে দ্বিতীয় অনুচ্ছেদ থেকে পড়ুন)। পৃথিবীর দিকে ধেয়ে আসছে বিশাল ধূমকেতু। তাকে থামানোর কতই না চেষ্টা! মিসাইল দেগে, ধূমকেতুর গায়ে নিউক্লিয়ার বোমা ফাটিয়েও দিক পাল্টানো গেলনা তার। শেষে স্পেসশিপকে সেই ধূমকেতুর গায়ে সজোরে ধাক্কা দিয়ে তবেই না পৃথিবীকে বাঁচানো গেল।
সিনেমার সেই বুদ্ধিকেই এবার কাজে লাগাতে চাইছে মার্কিন মহাকাশ সংস্থা নাসা। নতুন একটি পরীক্ষায় এবার স্পেসক্রাফটকে গ্রহাণুর ওপর সরাসরি নিক্ষেপ করবে সংস্থাটি।
আমরা প্রায়ই দেখি বিভিন্ন গ্রহাণু, পাথর, উল্কাপিণ্ড পৃথিবীর পাশ দিয়ে ধেয়ে যায়। অনেক সময় পৃথিবীকে লক্ষ্য করেও ছুটে আসে এসব অপার্থিব উপাদান। কিছু খুবই ছোট টুকরা পৃথিবীতে পতিত হয় কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পৃথিবীর বায়ুমন্ডলে ঢোকার পর পুড়ে ছাই হয়ে যায় এগুলো। কিন্তু এমন যদি হয় যে অনেক বড় গ্রহাণু, উল্কাপিণ্ড, বা ধূমকেতু পৃথিবীতে পৌঁছার আগেই ধ্বংস হলো না? তখন কিন্তু পৃথিবীর মানবসভ্যতা বিলুপ্ত হওয়ারও শঙ্কা থাকে।
এই চিন্তাকে মাথায় রেখেই নাসা তাদের দ্য ডাবল অ্যাস্টেরয়েড রিডিরেকশন টেস্ট (ডিএআরটি) মিশনটি প্রস্তুত করেছে। এই মিশনের আওতায় একটি স্পেসক্রাফট ঘণ্টাপ্রতি ২৪০০০ কিলোমিটার গতিবেগে 'ডাইমর্ফোস' নামের একটি গ্রহাণুকণাকে আঘাত করবে।
স্পেসএক্স-এর ফ্যালকন-৯ রকেটে করে আগামী ২৩ নভেম্বর ক্যালিফোর্নিয়া থেকে উৎক্ষেপণ করা হবে স্পেসক্রাফটটি। এই মিশনের পেছনে খরচ হচ্ছে ৩৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার।
বিজ্ঞানীরা জানতে চাইছেন এভাবে সংঘর্ষ ঘটিয়ে ওই উল্কাপিণ্ডের দিক পৃথিবী থেকে পরিবর্তন করা সম্ভব কিনা। ওই ধাক্কার পরিমাণ কতটুকু সেটা বুঝতে চাওয়াও এ মিশনের অন্যতম উদ্দেশ্য। টেস্ট-সাবজেক্ট ৫২৫ ফুট লম্বা 'ডাইমর্ফোস' বর্তমানে পৃথিবী থেকে কয়েক মিলিয়ন মাইল দূরে অবস্থান করছে এবং এটির পৃথিবীতে আঘাত হানার কোনো সম্ভাবনা নেই।
তবে ২০২২ সালের সেপ্টেম্বরে 'ডাইমর্ফোস' পৃথিবী থেকে ৬.৮ মিলিয়ন দূরে অবস্থান করবে এবং তখন নাসার স্পেসশিপ ওই গ্রহাণুকণার ওপর আছড়ে পড়বে।
ধারণা করা হচ্ছে, এর ফলে গ্রহাণুটির গতিবেগ এক শতাংশ কমে যাবে। সাদা চোখে এটি তেমন কিছু মনে না হলেও এতে করে গ্রহাণুর কক্ষপথ পরিবর্তন করা সম্ভব বলে জানান বিজ্ঞানীরা।