অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

৫০০ বছরের ছোট সোনামসজিদ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৬:২৫ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২০ সোমবার   আপডেট: ০৩:২৪ পিএম, ২৭ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার

একটি মসজিস, ইতিহাস তার ৫০০ বছরের । ছোট সোনা মসজিদ। রাজশাহী ধরে চাঁপাইনবাবগঞ্জ শহরে ঢুকতেই বিশ্বরোডের মোড়। সেখান থেকে ছোট সোনা মসজিদ ৩৮ কিলোমিটারের পথ। 

ছোট সোনামসজিদের নির্মাণকাল ১৪৯৩ থেকে ১৫১৯ সাল। মধ্যযুগে বাংলার স্বাধীন সুলতান আলাউদ্দিন হোসেন শাহের রাজত্বকালে ছোট সোনামসজিদ নির্মাণ করা হয়। নির্মাতা হিসেবে ওয়ালী মুহাম্মদের নাম পাওয়া যায়। প্রতিবছর দেশ-বিদেশের হাজারো দর্শনার্থী মসজিদটি দেখতে আসেন।


 
মধ্যযুগের সুলতানি আমলের গৌড় নগরীর ঐতিহাসিক স্থাপনাটিকে গৌড়ের রত্ন বলা হয়। সূর্যের আলো পড়লেই সোনামসজিদ সোনার মতো ঝলমল করে উঠতো, মসজিদের বাইরের দিকে সোনালী রঙের আস্তরণ ছিল। এজন্যই এর নাম হয়ে যায় সোনামসজিদ। 

মসজিদটি ইট দিয়ে তৈরি। তার ওপর পাথরের একটি স্তর বসানো আছে। বাইরের পরিমাপ ৮২ ফুট বাই সাড়ে ৫২ ফুট, ভেতরের পরিমাপ ৭০ ফুট ৪ ইঞ্চি বাই ৪০ ফুট ৯ ইঞ্চি। উচ্চতা প্রায় ২০ ফুট। মধ্যবর্তী তিনটি নামাজের স্থানে খিলান করা চার খণ্ড ছাদ তৈরি করে মাঝখানে এনে মিলিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার দুপাশের প্রতি অংশে আছে ছয়টি করে গোলাকার গম্বুজ। 

ছোট সোনামসজিদের চারদিকে চারটি বুরুজ বা স্তম্ভ রয়েছে। এগুলোর ভূমি অস্টকোনাকৃতির। বুরুজগুলোর ছাদের উচ্চতা কার্ণিশ পর্যন্ত। মসজিদের সামনে পাঁচটি এবং ডানে ও বায়ে দুই পাশে তিনটি করে দরজা আছে। প্রতিটি দরজার কিনারায় আছে বেশ চওড়া করে খোদাই করা কারুকাজ। দরজার পাশের দেয়ালগুলোতেও খোদাই করা কারুকাজ রয়েছে। 

উত্তর দেয়ালের পশ্চিমের দরজাটির জায়গায় রয়েছে সিঁড়ি। এই সিঁড়িটি উঠে গেছে মসজিদের অভ্যন্তরে উত্তর-পশ্চিম দিকে দোতলায় অবস্থিত একটি বিশেষ কামরায়। মসজিদের গঠন অনুসারে ধারণা করা হয়ে থাকে, এটি নারীদের নামাজের স্থান ছিল। তবে অনেকের মতে এটি ছিল সুলতান বা শাসনকর্তার নিরাপদে নামাজ আদায়ের জন্য আলাদা একটি কক্ষ। 

দৃষ্টিনন্দন মসজিদটির প্রবেশপথের পাথরের তোরণটিও সৃদৃশ্য কারুকার্যময়। এই তোরণের সামনেই রয়েছে সেই আমলের সারি সারি কবর। সবই বাঁধানো। দুটি কবর বড় কালো পাথর দিয়ে বাঁধানো। কবরবগুলো কাদের তা জানা যায়নি। কথিত আছে মসজিদ নির্মাতার কবর রয়েছে এর মধ্যে।
 
এখানেই আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের দুই বীর সন্তানের কবর। দক্ষিণ কোণে সীমানা প্রাচীরের ভেতরেই বীরশ্রেষ্ঠ ক্যাপ্টেন মহিউদ্দিন জাহাঙ্গির ও মুক্তিযুদ্ধে ৭ নম্বর সেক্টরের অধিনায়ক মুক্তিযোদ্ধা মেজর নাজমুল হকের কবর।