অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

সাম্প্রদায়িক হামলা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ঢাবি শিক্ষক সমিতির স্মারকলিপি

বিশ্ববিদ্যালয় করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৯:২৮ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার   আপডেট: ১০:৫২ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার

দেশের বিভিন্ন স্থানে সাম্প্রতিক সময়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের পূজামণ্ডপ, প্রতিমা, মন্দির, আশ্রম, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি (ডুটা)। এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছেন সমিতির নেতারা। 

মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) সমিতির নির্বাহী পরিষদের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ কয়েকজন সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁনের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে এসব দাবি জানিয়েছেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেটের দুই জন সদস্যও এই প্রতিনিধি দলে ছিলেন। 

শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. মো. রহমত উল্লাহ ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. নিজামুল হক ভূইয়ার নেতৃত্বে শিক্ষকদের প্রতিনিধি দলটি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান। অন্যদের মধ্যে ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রব্বানী, শিক্ষক সমিতির যুগ্ম-সম্পাদক ড. আবদুর রহিম, সমিতির নির্বাহী সদস্য অধ্যাপক ড. চন্দ্রনাথ পোদ্দার, অধ্যাপক ড. কেএম সাইফুল ইসলাম খান, সিন্ডিকেট সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির ও অধ্যাপক ড. আবুল মনসুর আহমেদ প্রমুখ। 

ঢাবি শিক্ষক সমিতি ও সিন্ডিকেট সদস্যদের এই প্রতিনিধি দলটি এর আগে সাম্প্রতিক সাম্প্রদায়িক হামলার একাধিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। বিষয়টি উল্লেখ করে স্মারকলিপিতে বলা হয়,  কুমিল্লায় চৌমুহনীতে বিজয়া দশমীর দিন এ ধরনের ঘটনার আশঙ্কায় স্থানীয় প্রশাসনের অনুরোধে সকাল ১১টা থেকে সাড়ে ১১টার মধ্যেই প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়। তা সত্ত্বেও জুমার নামাজের পর বিভিন্ন মন্দির, আশ্রম ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে সন্ত্রাসী আক্রমণের ঘটনা ঘটে। স্থানীয় প্রশাসন সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নিলে হয়তো এ ধরনের পরিস্থিতি এড়ানো যেতো। আক্রমণ শুরুর পরেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও প্রশাসন সক্রিয় হলে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতো বলে এলাকাবাসী মনে করেন। স্থানীয় প্রশাসনে সমন্বয়হীনতা এবং মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির অনৈক্যের সুযোগে ষড়যন্ত্রকারীরা নির্বিঘ্নে এ হীন পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হয়েছে। এ ঘটনায় সর্বস্তরের জনগণের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।

স্মরকলিপিতে এ ধরনের অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড ও অস্থিতিশীলতার পুনরাবৃত্তি রোধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি চারটি জরুরি পদক্ষেপ গ্রহণের জোর দাবি জানায়। দাবি গুলো হলো:
- আশঙ্কা থাকা সত্ত্বেও সংশ্লিষ্ট স্থানে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নেওয়ার এবং হামলার সময়ে স্থানীয় প্রশাসনের সমন্বয়হীনতার যে অভিযোগ উত্থাপিত হয়েছে, তা তদন্ত করা। এক্ষেত্রে কারো কোনো অবহেলা বা শিথিলতা থাকলে তা চিহ্নিত করে জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা।

- হামলার ঘটনায় নিহতদের পরিবার, ক্ষতিগ্রস্ত পূজামণ্ডপ, আশ্রম, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের যথাযথ ক্ষতিপূরণ দেওয়া, এ ধরনের ঘটনাগুলো রাষ্ট্রদ্রোহিতার সামিল বিধায় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে বিচারের ব্যবস্থা করা। 

- সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ ধরনের আক্রমণের সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে দ্রুততম সময়ের মধ্যে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করা। ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের নামে যেকোনো সহিংসতা এবং মুক্তিযুদ্ধের চেতনা পরিপন্থি যেকোনো অপতৎপরতা রোধে সর্বাত্মক সতর্কতা এবং আইনের শাসন নিশ্চিত করার উদ্যোগ গ্রহণ করা।