১৯ এনজিওর ‘নিরাপদে ইশকুলে ফিরি’ ক্যাম্পেইন
শিশুদের স্বাস্থ্যবিধি নিশ্চিতে প্রচারণার আওতায় ১০ হাজার স্কুল
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৬:৫৮ পিএম, ২৬ অক্টোবর ২০২১ মঙ্গলবার
শিশুদের আচরণগত পরিবর্তন এবং স্কুলে স্বাস্থ্যবিধি মানার সচেতনতা তৈরিতে সরকারের সাথে সম্মিলিতভাবে প্রচারাভিযান চালাচ্ছে ‘নিরাপদে ইশকুলে ফিরি’ ক্যাম্পেইন। বিভিন্ন বার্তার মাধ্যমে দেশব্যাপী সচেতনতা প্রচারণা ছাড়াও দেশের ৫৬ জেলায় ১০ হাজারের বেশি স্কুলে ক্যাম্পেইন পরিচালনাকারী সংস্থাগুলো শিশুদের কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষিত থাকার বিভিন্ন অভ্যাস তৈরিতে সাহায্য করছে।
গত ১২ সেপ্টেম্বর সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার আগে থেকেই সরকারসহ সকল অংশীদারের মুখ্য অগ্রাধিকার ছিল, নিরাপদ পরিবেশে সচেতন মানসিকতা নিয়ে শিশুদের স্কুলে ফেরা নিশ্চিত করা। এই বিবেচনা থেকেই গত ১০ ফেব্রুয়ারি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক ১৯টি উন্নয়ন সংস্থা বাংলাদেশ সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে ‘নিরাপদ ইশকুলে ফিরি’ প্রচারাভিযান শুরু করে।
শিশুদের চলমান স্কুলে ফেরা কার্যক্রম এবং তাদের শিক্ষা গ্রহণকে নিরাপদ করতে এখন জনসংযোগের সকল মাধ্যম ব্যবহার করে দেশব্যাপী সচেতনতা তৈরিতে সরকারের পাশাপাশি কাজ করছে এই ক্যাম্পেইন। মঙ্গলবার (২৬ অক্টোবর) জাতীয় প্রেসক্লাবে একটি সংবাদ সম্মেলনে প্রচারাভিযানের চলমান কার্যক্রম ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা গণমাধ্যমের কাছে তুলে ধরে এতে যুক্ত উন্নয়ন সংস্থাগুলো।
সংবাদ সম্মেলনে প্রচারাভিযানের পক্ষে ব্র্যাকের সিনিয়র ডিরেক্টর কেএএম মোরশেদ জানান, এই প্রচারের বার্তাগুলো এমনভাবে সাজানো হয়েছে যাতে যেকোনো মাধ্যমে, যে কোনো উপায়ে সব শিশু এবং তাদের পরিবারের কাছে পৌঁছাতে পারে। এছাড়া ক্যাম্পেইনের বার্তাগুলো শিশুদের আচরণগত পরিবর্তন অর্থাৎ কোভিড-১৯ থেকে সুরক্ষিত থাকতে নিয়মিত হাত ধোয়া, মাস্ক পরা, নিরাপদ দূরত্বে থাকা ইত্যাদি অভ্যাস তৈরিতে সাহায্য করছে।
ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের কমিউনিকেশন ম্যানেজার দেবাশীস রঞ্জন সরকারের সঞ্চালনায় সংবাদ সম্মেলনে সারাদেশে প্রচারণা চালাতে ক্যাম্পেইনের অধীনে নির্মিত বিভিন্ন কন্টেন্ট সাংবাদিকদের কাছে তুলে ধরেন সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের মিডিয়া অ্যান্ড কমিউনিকেশন সিনিয়র ম্যানেজার নুসরাত আমীন। এর মধ্যে অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ডদল জলের গানের তৈরি স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক একটি গান বিজ্ঞাপনচিত্র হিসেবে দেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলো ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অচিরেই প্রচার করা হবে।
স্ট্রমি ফাউন্ডেশনের কান্ট্রি কোওর্ডিনেটর মিজানুর রহমান বলেন, এই এলায়েন্স মূলত সরকারের সাথে তৃণমূলের মধ্যে সেতুবন্ধন হিসেবে কাজ করছে যাতে করে প্রান্তিক মানুষের চাহিদা এবং বার্তা সরকারের কাছে এবং সরকারের বিভিন্ন বার্তা তৃনমূলে যথাযথভাবে পৌছানো সম্ভব হয়।
করোনাকালীন পারিবারিক, সামাজিক কিংবা আর্থিক সংকটের কারণে শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পড়া শিশুদের নিয়মিত স্কুলে ফিরিয়ে আনার ক্ষেত্রে সরকার, এনজিও এবং গনমাধ্যমকে সমন্বিত উদ্যোগ এবং পরিকল্পনা নিয়ে একসাথে কাজ করার আহবান জানান এডুকো বাংলাদেশের হেড অফ এডুকেশন গোলাম কিবরিয়া।
করোনার কারনে গত দেড় বছরে স্কুলশিক্ষা কার্যক্রমে বড় ধরণের ব্যাঘাত ঘটেছে তবে তা কাটিয়ে উঠতে এবং শিক্ষার্থীদের স্কুলমুখী করতে শিক্ষার প্রয়োজনীয়তা নিয়ে গণমাধ্যমে নিয়মিত প্রচারণা চালাতে অনুরোধ করেন সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ এর কান্ট্রি ডিরেক্টর অনো ভ্যান ম্যানেন।
এই প্রচারাভিযানের প্রত্যেক সদস্য সমন্বিতভাবে শিক্ষাখাতে যার যতটুকু সম্পদ আছে তা সুষম বন্টনের মাধ্যমে স্কুল সুরক্ষিত করার এই কার্যক্রমে এগিয়ে এসেছে বলে জানিয়েছেন ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশের কমিউনিকেশন, অ্যাডভোকেসি ডিরেক্টর টনি মাইকেল গোমেজ।
এসময় সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশের অ্যাডভোকেসি এন্ড ক্যাম্পেইন সিনিয়র ম্যানেজার সামিয়া আহমেদ এবং ব্র্যাকের হেড অফ মিডিয়া এন্ড এক্সটার্নাল রিলেশন্স রাফে সাদনান আদেল উপস্থিত ছিলেন।
প্রচারাভিযান পরিচালনাকারী উন্নয়ন সংস্থাগুলো হচ্ছে- ব্র্যাক, গণসাক্ষরতা অভিযান, ঢাকা আহছানিয়া মিশন, এডুকো বাংলাদেশ, এফআইভিডিবি, ফ্রেন্ডশিপ, হ্যাবিট্যাট ফর হিউম্যানিটি বাংলাদেশ, হ্যান্ডিক্যাপ ইন্টারন্যাশনাল- হিউম্যানিটি অ্যান্ড ইনক্লুশন, জাগরনী চক্র ফাউন্ডেশন, প্ল্যান ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ, রুম টু রিড বাংলাদেশ, সেভ দ্য চিলড্রেন ইন বাংলাদেশ, সাইটসেভারস বাংলাদেশ, সিসেমি ওয়ার্কশপ বাংলাদেশ, স্ট্রমী ফাউন্ডেশন, টিচ ফর বাংলাদেশ, ভিএসও, ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ এবং ইপসা।