ল্যাবে উৎপন্ন হচ্ছে পরিবেশবান্ধব কফি!
সাতরং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৪:১৮ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০২১ সোমবার
সম্প্রতি ল্যাবে তৈরি পরিবেশবান্ধব কফি উদ্ভাবনের ঘোষণা দিয়েছেন ফিনিশীয় বিজ্ঞানীরা । কফি বিন নয়, বরং কোষ কালচারের মাধ্যমে আসল কফির অনুরূপ গন্ধ এবং স্বাদ নিয়ে তৈরি হয়েছে এই কফি, এমনটাই দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা।
দ্য গার্ডিয়নে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, কৃত্রিম এই কফি প্রস্তুত গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন হেইকো রিশার। তিনি ফিনল্যান্ডের ভিটিটি টেকনিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের উদ্ভিদ জৈবপ্রযুক্তি বিভাগের দলনেতা। ল্যাবে উৎপাদিত কফির স্বাদ সম্পর্কে তিনি বলেন, "এটি বর্ণনা করা কঠিন; আমার কাছে মনে হয়েছে, এর স্বাদ কফি এবং ব্ল্যাক টির মাঝামাঝি"।
কফিটি এখনও পান করতে পারেননি এই গবেষক। কারণ ল্যাবে তৈরি এই উদ্ভাবনটি এখনও জনসাধারণের ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত নয়। খানিকটা কফি মুখে নিয়ে, এর স্বাদ অনুভব করেই তিনি ফেলে দিয়েছেন। রিশারের আশা, আগামী চার বছরের মধ্যে ভিটিটি'র ল্যাব উদ্ভাবিত এই কফি ইউরোপ ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অনুমোদন পাবে এবং বাণিজ্যিক পণ্য হিসেবে জনসাধারণের জন্য তা বাজারে উন্মুক্ত করা হবে।
কফি শিল্প জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ। কফির ক্রমবর্ধমান চাহিদার ফলে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে চলছে বন উজাড়; যা জীববৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধনের পাশাপাশি প্রকৃতিতে কার্বন নিঃসরণেও অবদান রাখছে।
এছাড়া, কফি উৎপাদনকারীরা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে চরম আবহাওয়ার নানাধরণের প্রভাবের সঙ্গেও লড়াই করে চলেছেন। পরিবেশবিদদের মতে, জলবায়ু সংকটের কারণে ২০৫০ সালের মধ্যে কফি চাষের জন্য ব্যবহৃত জমির অর্ধেকই হয়ে যেতে পারে অনুৎপাদনশীল।
কফি শিল্পের এই চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতেই মূলত, বিজ্ঞানীরা কফি বিন ছাড়াই কফি তৈরি ও বাণিজ্যিকীকরণের চেষ্টা করছেন।
ভিটিটি'র দাবি, তাদের উৎপাদিত কফিতে রয়েছে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান। তাছাড়া, তাদের এই উৎপাদন প্রক্রিয়াতে ব্যবহার করা হয়না কোনো ধরনের কীটনাশক। ফলে এই কফি খুব সহজেই স্থানীয় বাজারে উৎপাদন করা যেতে পারে, যা পরিবেশের জন্য পরিবহনজনিত নির্গমনও কমাতে সহায়তা করবে।
তবে, ল্যাবে উৎপাদিত কফির ক্ষেত্রে প্রধান সন্দেহের বিষয় হলো, ঠিক কতজন মানুষ কফি বিন ছাড়া কৃত্রিম উপায়ে তৈরি এই কফি পানে ইচ্ছুক হবেন!