অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

করোনায় রাজস্ব আদায়ে ১৪ হাজার কোটি টাকা পিছিয়ে এনবিআর

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট

প্রকাশিত: ০৯:৫৯ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০২০ রোববার   আপডেট: ১২:১১ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০২০ বৃহস্পতিবার

করোনার আঘাতটা কড়া করেই লেগেছে দেশের রাজস্ব খাতে। নতুন অর্থবছরের প্রথম তিন মাস (এক চতূর্থাংশ) পার করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গুনছে রাজস্ব আদায়ে প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার ঘাটতি। 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড ( এনবিআর) সূত্র জানায়, চলতি ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৬৩ হাজার ৭১৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা। যার বিপরীতে রাজস্ব আদায় হয়েছে ৪৯ হাজার ৯৮৯ কোটি ৭২ লাখ টাকা। ঘাটতি থেকে গেছে ১৩ হাজার ৭২৪ কোটি ৬ লাখ টাকা। 

সূত্র মতে, চলতি অর্থবছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তিন মাসে সবচেয়ে বেশি রাজস্ব আদায় হয়েছে ভ্যাট থেকে। এ খাতে আদায় হয়েছে ১৮ হাজার ১১১ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। আর শতাংশ হিসাবে সাফল্য দেখিয়েছে আয়কর ও ভ্রমণ খাত। 

আয়কর খাতে লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে:

  • ৮৫.০৯ শতাংশ রাজস্ব আদায় করতে সক্ষম হয়েছে এনবিআর। 
  • সেপ্টেম্বর পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৮ হাজার ৭১০ কোটি ১১ লাখ টাকা। 
  • আদায় হয়েছে ১৫ হাজার ৯১৯ কোটি ৫৪ লাখ টাকা।   

আমদানি ও রপ্তানি পর্যায়ের শুল্ক খাতে পিছিয়ে পড়েছে সংস্থাটি। এই খাতে

  • লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ২১ হাজার ৮০৬ কোটি ৫৩ লাখ টাকা 
  • আদায় হয়েছে ১৫ হাজার ৯৫৮ কোটি ৭১ লাখ টাকা। 
  • অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে এ খাতে সবচেয়ে বেশি ঘাটতি হয়েছে 
  • যার পরিমান ৫ হাজার ৮৪৭ কোটি ৮২ লাখ টাকা। 

তবে আশার দিক হচ্ছে, মাসভিত্তিক বিবেচনায় অর্থবছরের প্রথম দুই মাসে (জুলাই-আগস্ট) এর তুলনায় রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি অপেক্ষাকৃত কমেছে। হিসাব বলছে: 
প্রথম দুই মাসে সবমিলিয়ে ৩০ হাজার ১৬২ কোটি ৭৫ লাখ টাকার রাজস্ব আদায় হয়েছে, যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৪০ হাজার ৯৪৭ কোটি ৪৯ লাখ টাকা। বাকি ২৩ হাজার কোটি টাকার লক্ষমাত্রা সামনে রেখে সেপ্টেম্বরে আদায় হয়েছে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা। 

২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে: 

  • জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের রাজস্ব লক্ষ্যমাত্রা ৩ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা,
  • মূল্য সংযোজন কর বা ভ্যাট থেকে- ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৭৩ কোটি টাকা, 
  • আয়কর ও ভ্রমণ কর থেকে ১ লাখ ৫ হাজার ৪৭৫ কোটি এবং 
  • আমদানি শুল্ক থেকে ৯৫ হাজার ৬৫২ কোটি টাকা। 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের ( এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল মজিদের সঙ্গে এ বিষয়ে কথা হলে তিনি রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রাটি অস্বাভাবিকভাবে বেশি করা ছিলো বলে মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, লক্ষ্যমাত্রা বড় বলে তার চার ভাগের একভাগের অংকটা বড়। ফলে ঘাটতি বড় হবেই। আমি এটাকে অঙ্কের মারম্যাচ ছাড়া আর কিছু দেখি না। 

যেহেতু লক্ষ্যমাত্রাটা বেশ বেশি করা ছিলো আর করোনার কাল যেহেতু চলছে সুতরাং কম তো হবেই। ফলে ঘাটতির পরিমাণটা অতিরিক্ত অস্বাভাবিক দেখাচ্ছে, বলেন এনবিআর'র এই সাবেক প্রধান। 

তিনি আরও বলেন, এখানে দেখার বিষয় আছে এনবিআর এক্ষেত্রে গা ভাসিয়ে দিচ্ছে কিনা? সেখানে অর্থনীতির অচলাবস্থা বলে তার আশ্রয় নিচ্ছে কিনা। 

করোনার কারণে ভ্যাট ও কাস্টমস ডিউটিতে পরোক্ষ কর কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, কিন্তু আয়কর আদায়ে ঘাটতিতে করোনার উপর দোষ দেয়া যাবে না। 

রাজস্ব আদায়ের ঘাটতি সম্পর্কে জানতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিমের মতামত জানার চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।