অলিভ অয়েলের মিথ্যা ঘোষণায় এলো মিল্ক পাউডার
মন্ত্রণালয়ের ভুয়া ওয়েবসাইট, ভুয়া সিপিতে খালাসের চেষ্টা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৭:১৯ পিএম, ২৫ অক্টোবর ২০২০ রোববার আপডেট: ১২:১২ এএম, ২৯ অক্টোবর ২০২০ বৃহস্পতিবার
অলিভ অয়েলের মিথ্যা ঘোষণা দিয়ে আনা হয়েছে শিশুদের মিল্ক পাউডার। আর সে জালিয়াতি ঢাকার জন্য করা হয়েছে আরেক জালিয়াতি। রীতিমতো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে চেষ্টা করা হয়েছে মিথ্যা ঘোষণায় আনা পণ্য খালাস করে নেওয়ার।
তবে শেষ রক্ষা হয়নি। ক্লিয়ারেন্স পারমিট (সিপি) জালিয়াতি করে ফেঁসে যাচ্ছে ঢাকার একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ও চট্টগ্রামের একটি সিএন্ডএফ প্রতিষ্ঠান। নির্ভরযোগ্য সূত্র জানিয়েছে, এই জালিয়াতিতে যুক্ত আমদানিকারক ও সিঅ্যান্ডএফ এজেন্টের বিরুদ্ধে আইসিটি অ্যাক্ট ও ফৌজদারী দণ্ডবিধির অধীনে মামলা দায়েরের প্রস্তুতি নিচ্ছে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউজ।
আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানটির নাম মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজ ও সিএন্ডএফ এজেন্টের নাম খান এন্টারপ্রাইজ বলে নিশ্চিত হয়েছে অপরাজেয় বাংলা।
কাস্টমস হাউসের দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, মেসার্স সিয়াম এন্টারপ্রাইজের নামে গত ১০ জানুয়ারির ইনভয়েসে ১৩ হাজার ৫২০ কেজি চীনাবাদাম ও ৪ হাজার ৫১০ কেজি অলিভ অয়েল ঘোষণায় একটি চালান আসে বন্দরে। কিন্তু চালানটির শতভাগ 'কায়িক পরীক্ষা' করে দেখা যায় চীনা বাদাম বা অলিভ অয়েল নয় বরং ২১ হাজার ৬০ কেজি বেবি মিল্ক পাউডার আনা হয়েছে। যা নেসলে লেকটোগ্রো ফরমুলেটেড মিল্ক পাউডার ফর চিলড্রেন ব্র্যান্ডের।
সূত্র আরো জানায়, মিথ্যা ঘোষণায় আমদানি করা চালানটি খালাসের জন্য খান এন্টারপ্রাইজ সিঅ্যান্ডএফ প্রতিষ্ঠান হিসেবে কাস্টম হাউসে বিল অব এন্ট্রি দাখিল করা হয়। চট্টগ্রামের শেখ মুজিব সড়কের প্রগ্রেসিভ টাওয়ারে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যালয়।
এদিকে, আমদানি নীতি আদেশ ২০১৫-১৮ এর অনুচ্ছেদ ১৭ অনুযায়ী শর্তযুক্ত পণ্য হওয়ায় চালানটি লক করে দেয় কাস্টমস কর্তৃপক্ষ। এছাড়াও আমদানিকারক প্রতিষ্ঠানকে ৭৬ লাখ টাকা জরিমানাও করে এই কর্তৃপক্ষ।
এরপর নতুন জালিয়াতির আশ্রয় নেয় প্রতিষ্ঠান দুটি। রীতিমতো বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের ভুয়া ওয়েবসাইট খুলে ফেলে এবং তাতে দাখিলকৃত সিপির কপি আপলোড করে দেয় জালিয়াত চক্র।
দায়িত্বশীল সূত্রে জানা যায় ঘটনার ধারাবাহিকতা। গত ১১ ও ১৩ অক্টোবর বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিপি বিষয়ক দুটি চিঠি দাখিল করে আমদানিকারক। দুটি চিঠির একটি ছিলো বিএসটিআই’র ছাড়পত্র এবং অপরটি কমিশনারের বিচারাদেশ অনুযায়ী শুল্ককর ও জরিমানা দেওয়া সাপেক্ষে চালানটি খালাসের সিপি।
দাখিল করা সিপি এবং অন্যান্য দলিল যাচাইকালে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দেওয়া সিপি'র লেটারহেডে ওয়েবসাইটের ঠিকানা www.mincomgov.com দেখা যায়। যাচাইকারীরা সেটি ব্রাউজ করে তাতে দাখিল করা সিপি’র কপিও দেখতে পান। তবে আরও যাচাইয়ের জন্য কাস্টমসের পক্ষ থেকে সিপিতে স্বাক্ষরকারী উপসচিবের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হলে জানা যায় দাখিল করা সিপি ভুয়া। এমনকি চিঠিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যে ওয়েবসাইটের ঠিকানা দেয়া হয়েছে সেটিও ভুয়া। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অফিশিয়াল ওয়েবসাইট হচ্ছে-www.mincom.gov.bd অথচ চিঠিতে তা ছিলো www.mincomgov.com