ঢাবির শ্রেণিকক্ষে ফিরেছে প্রাণ
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ১১:০৫ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০২১ রোববার আপডেট: ১১:১৬ এএম, ১৭ অক্টোবর ২০২১ রোববার
করোনা পরিস্থিতিতে দেড় বছর বন্ধ থাকার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আজ রবিবার (১৭ অক্টোবর) থেকে সশরীরে ক্লাস শুরু হয়েছে। সকাল থেকেই শিক্ষার্থীরা উৎসব মুখর পরিবেশে শ্রেণিকক্ষে ঢুকতে শুরু করে।
সকাল থেকে থার্মাল স্ক্যানার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মেপে শিক্ষার্থীদের প্রবেশ করানো হয়। এসময় তাদের হাতে সেনিটাইজারও দেন সংশ্লিষ্টরা। স্বাস্থ্যবিধি মানার নির্দেশনাও দেয়া হয় তাদের। তবে শ্রেণিকক্ষের তুলনায় শিক্ষার্থী বেশি হওয়ায় অনেক রুমেই নিরাপদ দূরত্ব মানা সম্ভব হয়নি।
কলা অনুষদের বাংলা বিভাগে ক্লাস করতে আসা দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মারিফুল হাসান জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে বেশিদিন বন্ধুদের সাথে মিশতে পারিনি, বিশ্ববিদ্যালয় জীবন উপভোগের আগের সব বন্ধ হয়ে যায়। অনেক দিন পর সবার সাথে দেখা, আড্ডা দেয়া, সামনে থেকে লেকচার শুনতে পেরে ভালো লাগছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী কমিটি সিন্ডিকেট সভায় স্বাভাবিক শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। শনিবার (১৬ অক্টোবর) বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।
এর আগে, গত ৭ অক্টোবর বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি সভায় সশরীরে ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ৫ অক্টোবর অনার্স চতুর্থ বর্ষ ও মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের জন্য এবং ১০ অক্টোবর সব আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য হলগুলো খুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তও হয় সভায়।
আজ থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘স্বাস্থ্যবিধি’ মেনে চলবে সশরীরে পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম। তবে সশরীরে ক্লাসের পাশাপাশি কোনও বিভাগ বা ইনস্টিটিউট চাইলে সর্বোচ্চ ৪০ শতাংশ ক্লাস অনলাইনেও নিতে পারবে। বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, অনলাইন ও অফলাইন সমন্বয়ে শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা যাবে। এক্ষেত্রে ন্যূনতম ৬০ ভাগ ক্লাস সশরীরে নিতে হবে। সেশনজটে কাটাতে ছয় মাসের সেমিস্টার চার মাসে সম্পন্ন করার কথাও বলা হয়েছে।
মানতে হবে যেসব নিয়ম
বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীরে উপস্থিত হয়ে ক্লাস ও পরীক্ষায় অংশ নিতে মানতে হবে বেশ কিছু নিয়ম। এগুলোর মধ্যে রয়েছে ‑
* সকলকে বাধ্যতামূলকভাবে নিয়মিত ও সার্বক্ষণিক মাস্ক নাক-মুখ ঢেকে পরিধান করতে হবে।
* স্বাস্থ্যবিধি পালনের জন্য সাবান দিয়ে হাত ধোয়ার ব্যবস্থা করতে হবে।
* স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী পরস্পরের কাছ থেকে কমপক্ষে ১ মিটার (৩ ফুট) শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
* শ্রেণিকক্ষে স্বাস্থ্যবিধি অনুযায়ী শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা করতে হবে।
* ল্যাবে কাজের ক্ষেত্রে ল্যাবরেটরির ধারণ ক্ষমতা, বসার ব্যবস্থা, কাজের বিন্যাস এবং যাতায়াতের পথযুক্ত নকশা তৈরি করতে হবে ও সর্বত্র প্রদর্শন করতে হবে।
* সমস্ত নির্দেশনাবলী শিক্ষার্থীদের আগেই জানাতে হবে।
* শিক্ষার্থীদের ছোট ছোট দলে ভাগ করে ল্যাবে প্রতিটি শিক্ষার্থীর অবস্থান চিহ্নিত করতে হবে।
* ব্যবহৃত পিপিই যথাযথ ব্যবস্থাপনা ও অপসারণের ব্যবস্থা করতে হবে।
* পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং শৌচাগারগুলো নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে।
* কোভিড-১৯ লক্ষণ থাকলে বাসা বা হলের কক্ষে থাকতে হবে ও কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে।
* লক্ষণযুক্ত ব্যক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহনে চলাচলের সময় অবশ্যই সার্বক্ষণিক মাস্ক পরতে হবে।
* বাসে ওঠার আগে দেহের তাপমাত্রা পরিমাপ বাধ্যতামূলক করতে হবে।
* বাস এবং অন্যান্য যানবাহনে প্রবেশ ও বহির্গমন পথে ভিড় এড়িয়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে।
* যানবাহনে প্রবেশ ও বহির্গমণের জন্য আলাদা দরজা নির্ধারণ করতে হবে।
* শুধু ক্লাস থাকলেই নিয়মিত ছাত্র-ছাত্রীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের যানবাহন ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রবেশ এবং প্রস্থান করতে পারবে।
* সম্ভব হলে গণপরিবহন ব্যবহার পরিহার করতে হবে।