১৪ শিক্ষার্থীর চুল কেটে দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক
অপরাজেয় বাংলা ডেস্ক
প্রকাশিত: ০২:২৮ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার আপডেট: ০২:৩১ পিএম, ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২১ মঙ্গলবার
সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ১৪ ছাত্রের মাথার চুল কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠছে
সিরাজগঞ্জে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ১৪ ছাত্রের মাথার চুল কেটে দিয়েছেন বলে অভিযোগ উঠছে। এ ঘটনায় এক ছাত্র আত্মহত্যার চেষ্টাও করেছেন। অভিযুক্ত শিক্ষক বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগেরচেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর, তার নাম ফারহানা ইয়াসমিন।
উপজেলার দ্বারিয়াপুরের শাহ মখদুম ছাত্রাবাসে সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) রাত ৮টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রের আত্মহত্যা চেষ্টার খবর ছড়িয়ে পড়লে সোমবার রাতেই ক্যাম্পাসে প্রতিবাদ-মিছিল করেন শিক্ষার্থীরা। ওই শিক্ষকের অপসারণ দাবি করেন তারা।
পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার সোহরাব আলীসহ অন্য শিক্ষক ও কর্মচারীরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও মঙ্গলবার (২৮ সেপ্টেম্বর) সকালে ফের বিক্ষোভ শুরু হয়।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ,গত রবিবার দুপুরে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের প্রথম বর্ষের রাষ্ট্রবিজ্ঞান পরিচিতি বিষয়ের পরীক্ষা ছিল।
হলে ঢোকার সময় ১৪ ছাত্রের মাথার চুল কাঁচি দিয়ে কেটে দেন ওই বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন একই বিভাগের শিক্ষক রাজিব অধিকারী ও জান্নাতুল ফেরদৌস।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সোমবার দুপুরে ওই বিভাগের বাংলাদেশের ইতিহাস বিষয়ে পরীক্ষা হওয়ার কথা ছিল। পরীক্ষা শুরুর আগে লাঞ্ছিত পরীক্ষার্থী ও তাদের সহপাঠীরা ঘটনার প্রতিবাদে পরীক্ষা বর্জন করে বিক্ষোভ করতে শাহজাদপুর পৌর শহরের বিসিক বাসস্ট্যান্ড এলাকায় জড়ো হন।
শাহজাদপুর মহিলা ডিগ্রি কলেজ এখন রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী ক্যাম্পাস-১ হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে। তারা ওই ক্যাম্পাসের ফটকের সামনে জড়ো হন। এ সময় ফারহানা ইয়াসমিন তাদের সবাইকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে পরীক্ষায় ফেল করিয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে পরীক্ষার হলে যেতে বাধ্য করেন।
এ ঘটনায় লাঞ্ছিত একাধিক শিক্ষার্থীর ভাষ্য,কয়েক দিন আগে ক্লাস চলার সময়ে ফারহানা ইয়াসমিন চুল বড় রাখার বিষয়ে ছাত্রদের বকাঝকা করেন। তার ভয়ে সবাই পরের দিনই চুল ছোট করেন। পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে থেকেই দরজার সামনে ওই শিক্ষক কাঁচি হাতে দাঁড়িয়ে ছিলেন। যাদের চুল মুঠোর মধ্যে ধরা গেছে, তাদের মাথার সামনের বেশ খানিকটা চুল তিনি কাঁচি দিয়ে কেটে দিয়েছেন। এ
ই অপমান সহ্য করতে না পেরে তাদের অনেকে নাওয়াখাওয়া ছেড়ে দিয়েছেন। অনেকে পড়ালেখার পাঠ চুকিয়ে বাড়ি চলে যাওয়ার চিন্তাভাবনা করছেন। ঘটনাটি রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিলে তা ছড়িয়ে পড়ে।
অভিযোগের বিষয়ে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বাংলাদেশ অধ্যয়ন বিভাগের চেয়ারম্যান ও সহকারী প্রক্টর ফারহানা ইয়াসমিন বলেন, ‘এ ধরনের কোনো বিষয় আমার জানা নেই। এ ধরনের ঘটনা ঘটেনি, তাও বলছি না। তবে কয়েক দিন আগে কিছু ছাত্র আমার কাছে এসে পরীক্ষা পিছিয়ে দিতে বলেছিল। আমি এতে রাজি হইনি। হয়তো সেই রাগে এ ধরনের অপপ্রচার চালাচ্ছে তারা।’
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) আবদুল লতিফ গণমাধ্যমকে বলেছেন এ বিষয়ে শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে কোনো লিখিত অভিযোগ তিনি পাননি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছেন উপাচার্য।