ক্রমশ কমছে নাতিশীতোষ্ণ দিন, বাড়ছে বিপদ!
সাতরং ডেস্ক
প্রকাশিত: ০৫:২১ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ শনিবার আপডেট: ০৫:২১ পিএম, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ শনিবার
আগে শরতেই শীতের পরশ পাওয়া যেত। বাংলা কবিতাতেও আছে-- 'এসেছে শরৎ হিমের পরশ লেগেছে হাওয়ার 'পরে'। কিন্তু এসব দিন আজ অতীত। যা নিয়ে আবহাওয়াবিদেরাও উদ্বিগ্ন।
শরৎ-হেমন্ত আর শীত-বসন্তের সংযোগসময়টা নিয়েই মোটামুটি নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া বিরাজ করে। এর মধ্যে শরৎ বা বসন্ত কোনওটিকেই আজকাল আর ভাল করে অনুভব করা যায় না।
শরৎ এখন দরদর ঘামে ভেজা তীব্র দহনের দিন। বর্ষার ভ্যাপসানি থেকে তার মুক্তি নেই। ক্যালেন্ডারের পাতায় শরৎ শেষ হয়ে হেমন্ত অনেকটা গড়িয়ে গেলে এবং পুরোপুরি শীত পড়ার আগে বাতাসে হাতে গোনা কয়েকটি দিনের জন্য একটা অল্প গরম হালকা ঠাণ্ডার মেজাজ আসে। আবার শীত শেষ হয়ে বসন্ত এলে তীব্র গরম পড়ার আগে ক'দিন একটু মনোরম আবহাওয়া থাকে।
তবে এসব এখন ক্রমশই গল্পকথায় পর্যবসিত হচ্ছে। কানে শোনা বস্তু হয়েই থেকে যাচ্ছে। কেননা আজকালকার আবহাওয়ায় আর এই ধরনের মনোরম দিনের দেখা মেলাই ভার।
না, এমনটা যে শুধু বাংলাদেশেই হচ্ছে তা নয়। সারা পৃথিবীর বিভিন্ন অঞ্চলের জলবায়ুতেই এটা খেয়াল করা যাচ্ছে।
সম্প্রতি এক মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়ের রিপোর্টেও বলা হয়েছে, বিশ্বে নাতিশীতোষ্ণ দিনের সংখ্যা ক্রমেই কমছে। হিসেব অনুসারে, বছরে ৭৪ দিন এই আবহাওয়া থাকার কথা। শতাংশের বিচারে যা বছরের মোট দিনের আনুমানিক ২০ শতাংশ। যদিও, পরিস্থিতি যেদিকে এগোচ্ছে তাতে, একুশ শতক শেষ হওয়ার আগেই বছরে এই নাতিশীতোষ্ণ দিনসংখ্যা কমে দাঁড়াবে মাত্র ৮-১০ দিনে!
নাতিশীতোষ্ণ দিন কী?
পরিবেশ বিজ্ঞানীদের মতে, নাতিশীতোষ্ণ দিন বলতে বোঝায় বছরের সেই দিনগুলিকে যখন তাপমাত্রা মনোরম থাকে। দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ১৮-৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ঘোরাফেরা করে। উচ্চ তাপমাত্রাযুক্ত বা উচ্চ শীতের দিনের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষায় বছরে এমন দিনের সংখ্যা থাকা উচিত কমপক্ষে ৭৪ দিন বা তার বেশি।
কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতিতে এমন দিনের সংখ্যায় ভাটা পড়েছে। ২০১৬ সালে এমন দিনের সংখ্যা ছিল মাত্র ৪! ২০১৭ সালে তা কিছুটা বেশি থাকলেও, ২০১৮ সালে তা কমে হয় ১০। ২০১৯ সালে নাতিশীতোষ্ণ দিনের সংখ্যা ছিল ১২। তবে, ২০২০ সালে করোনার প্রকোপে দীর্ঘদিন লকডাউন থাকায় পৃথিবীর গড় তাপমাত্রায় কিছুটা হ্রাস পায়। যদিও, লকডাউনের পরই তা ফের আগের অবস্থাতে ফিরে গেছে।
পরিবেশ বিজ্ঞানীরা বলছেন, মূলত বিশ্ব উষ্ণায়নের জন্যই এরকম হচ্ছে। লকডাউন-পর্বে দূষণ কম থাকায় প্রকৃতি নিজেকে অনেকটা গুছিয়ে নিতে পেরেছে। তাই দূষণ কমেছে। তাই নাতিশীতোষ্ণ দিনের সংখ্যাও কম ছিল। কিন্তু দূষণ বাড়তেই বদলে যাচ্ছে ছবি।