‘খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে চারজন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ হাস্যকর’
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৭:১৬ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২০ সোমবার আপডেট: ০৭:৩১ পিএম, ১৯ অক্টোবর ২০২০ সোমবার
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারজন শিক্ষকের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর ঘটনা হাস্যকর ও অগ্রহণযোগ্য বলে বিবৃতি দিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকদের সংগঠন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক। বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ৬০ জন শিক্ষক। সোমবার (১৯ অক্টোবর) সংবাদ মাধ্যমে পাঠানো বিবৃতিতে তারা বলেন, সম্প্রতি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন অত্যন্ত অগ্রহণযোগ্য ও হাস্যকরভাবে চারজন শিক্ষককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দিয়েছেন এই অজুহাতে যে, ওই শিক্ষকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের সুনাম ক্ষুণ্ণ করেছেন। আসলে তারা যা করেছিলেন তা হলো, ২০২০ এর জানুয়ারি মাসে খুলনা বিশ্ববিদ্যলয়ের প্রশাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের যৌক্তিক দাবির পক্ষে শিক্ষকদের পক্ষ থেকে একাত্মতা প্রকাশ করা।এটা যেকোনো সচেতন শিক্ষকের কর্তব্য বলে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক নেটওয়ার্ক মনে করে।
বিবৃতি বলা হয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মেলবন্ধনেই জ্ঞানের চর্চা অগ্রসর হয়ে থাকে। আর এই বিষয়টি খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনের অজানা কিনা তা ভেবে তারা বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হচ্ছেন। খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের সেই সময়ের আন্দোলনে উঠে আসা দাবিগুলো ছিলো- আবাসন সংকটের সমাধান, বেতন-ফিস কমানো,চিকিৎসা ও স্বাস্থ্যের উৎকর্ষ সাধন, অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে অবকাঠামো নির্মান ইত্যাদি। শিক্ষার্থীদের উত্থাপিত এই দাবিগুলোর কোনটাই অন্যায় কোন দাবি নয়, বরং তা ন্যায়সংগত এবং এসব তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার। যেকোন বিবেকবান মানুষ শিক্ষার্থীদের এই দাবির পক্ষে থাকবেন, আর শিক্ষকরা সেটাই করেছেন।
বিবৃতিতে তারা বলেন, খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের এই আন্দোলন হয়েছিলো ১ জানুয়ারি ২০২০। সে ঘটনার পর প্রায় তিন মাস বিশ্ববিদ্যালয় খোলা ছিল। এখন প্রায় ৯ মাস পর উক্ত শিক্ষকদের বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হলো। এছাড়া এআন্দোলনে আরও অনেক শিক্ষক সমর্থন জানালেও সুনির্দিষ্টভাবে এই চারজনকে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে যা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নেতৃত্বে বর্তমান প্রশাসনের এই আচরণ অত্যন্ত প্রতিহিংসাপরায়ণ, ন্যাক্কারজক এবং হীন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবী করা হয় বিবৃতিতে। কারণ দর্শানোর নোটিশ প্রত্যাহার ও উক্ত শিক্ষকদের আর কোন হেনস্থা না করার আহ্বান জানানো হয় বিবৃতিতে।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ, অধ্যাপক স্বাধীন সেন, চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মাইদুল ইসলাম, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক জাকিয়া সুলতানা মুক্তা ও আরিফুজ্জামান রাজিব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাসির আহমেদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আরাফাত রহমান, সৌভিক রেজা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ফাহমিদুল হক, কাবেরী গায়েন, গীতিআরা নাসরিন, সহকারী অধ্যাপক সামিনা লুৎফাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ৬৩ জন শিক্ষক।