সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী
১২ সেপ্টেম্বর থেকেই শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০৫:৩৬ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ রোববার আপডেট: ০৬:২৪ পিএম, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২১ রোববার
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে ১২ সেপ্টেম্বর
প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তর পর্যন্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলছে ১২ সেপ্টেম্বর। ওই দিন থেকেই শ্রেণিতে পাঠদান শুরু হবে। এছাড়া এসএসসি, এইচএসসি ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস সপ্তাহে প্রতিদিন হবে, বাকি সব শ্রেণিতে ক্লাস হবে একদিন করে। এছাড়া ছাত্র-শিক্ষক সবাইকে মাস্ক পরাসহ সব ধরনের স্বাস্থ্যবিধি মেনে শ্রেণিকক্ষে উপস্থিত হতে হবে। এছাড়া, প্রতিষ্ঠান খোলার আগে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান পাঠদান উপযোগী আছে কি না তা যাচাই করতে নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী।
রবিবার (৫ সেপ্টেম্বর) শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা নিয়ে সচিবালয়ে আন্তমন্ত্রণালয় বৈঠকে এসব সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
- ১২ সেপ্টেম্বর (রবিবার) থেকে শ্রেণিকক্ষে ক্লাস শুরু
- এসএসসি, এইচএসসি ও পঞ্চম শ্রেণির ক্লাস সপ্তাহে প্রতিদিন
- অন্যান্য ক্লাস হবে সপ্তাহে একদিন
- ক্লাসের সময়সীমা চার থেকে পাঁচ ঘন্টা
- মাস্ক পরা ছাড়া কেউ শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে পারবে না
- পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হাওয়া পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি হবে না
এ বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে শিক্ষামন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে বিকেল সোয়া ৩টায় উচ্চপর্যায়ের বৈঠক শুরু হয়। সভাশেষে প্রেস ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী এসব কথা বলেন।
**স্কুল-কলেজ খোলার প্রস্তুতি: মাউশির ১৯ নির্দেশনা
**শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের বৈঠক আজ
**‘প্রাথমিকভাবে স্কুল-কলেজে সপ্তাহে একদিন ক্লাস’
**উচ্চমাধ্যমিক পর্যন্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলছে ১২ সেপ্টেম্বর
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, সংক্রমণের হার দ্রুত কমছে। আগের অভিজ্ঞতা বলছে নভেম্বর ও ডিসেম্বরে সংক্রমণের হার কম থাকে। আর টিকা কার্যক্রম যে গতিতে চলছে সে বিবেচনায় প্রাথমিক, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১২ সেপ্টেম্বর থেকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান শুরু করা যাবে।
মন্ত্রী বলেন মাস্ক পরা ছাড়া কেউ শ্রেণিকক্ষে প্রবেশ করতে পারবে না। শিক্ষার্থী, শিক্ষকের সঙ্গে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে জড়িত সকলকে মাস্ক পরতে হবে। একেবারে কমবয়সী যারা, তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না তা শিক্ষকদের খেয়াল রাখতে হবে।
চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা করে ক্লাস নেয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী। বলেন, ধীরে ধীরে ক্লাসের সময়সূচি স্বাভাবিক করা হবে। তিনি বলেন, কারো বাড়িতে কারো মধ্যে যদি করোনাভাইরাসের উপসর্গ থাকে তার ক্লাসে আসার দরকার নেই। আর পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হাওয়া পর্যন্ত অ্যাসেম্বলি হবে না।
যাদের বয়স ১২ বছর তাদেরকেও ভ্যাকসিনেশনের আওতায় নিয়ে আসতে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী। বলেন, টিকা প্রাপ্তি ও কারিগরি ব্যবস্থাপনা শেষ হলে এই প্রক্রিয়া শুরু হবে।
জেএসসি ও পিএসসি পরীক্ষা নিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘জেএসসি, পিএসসি সব পরীক্ষা নেয়ার প্রস্তুতি আছে। পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।
দেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত হয় ২০২০ সালের ৮ মার্চ। প্রাণঘাতী ভাইরাসটির বিস্তার রোধে ১৭ মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। এরপর দফায় দফায় বাড়ানো হয় ছুটির মেয়াদ। সর্বশেষ ১১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটির মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলার পক্ষে মত দেয় করোনাসংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিও। কমিটি বলছে, সংক্রমণ সর্বোচ্চ শনাক্ত থেকে ৭০ শতাংশ কমেছে। ধীরে ধীরে করোনার টিকাপ্রাপ্তি নিশ্চিত হচ্ছে। এ জন্য সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে এবং জনস্বাস্থ্যবিষয়ক বেশ কিছু সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া সাপেক্ষে এখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়া যায়।
জাতিসংঘ শিশু তহবিল বা ইউনিসেফের গত ২৪ আগস্ট প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোভিড-১৯-এর কারণে স্কুল বন্ধের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় দীর্ঘতম দেশ। দীর্ঘ বন্ধের ফলে প্রাক্-প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা স্তর পর্যন্ত চার কোটির বেশি শিক্ষার্থী ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।