অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

মৃত্যুঝুঁকিতে চলছে লঞ্চ

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ২২ দিনে ৩ লঞ্চ দুর্ঘটনা

কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু, মুন্সীগঞ্জ

প্রকাশিত: ০৬:২৭ পিএম, ১৮ অক্টোবর ২০২০ রোববার   আপডেট: ১২:২৮ এএম, ২০ অক্টোবর ২০২০ মঙ্গলবার

শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ২২ দিনের ব্যবধানে ৩টি লঞ্চ দুর্ঘটনা থেকে অল্পের জন্য প্রানে বেঁচে গেছে প্রায় ৬৮৪ লঞ্চযাত্রী। সর্বশেষ গত ১৬ অক্টোবর এম ভি মালেক দরবেশ-১ নামের একটি যাত্রীবাহি লঞ্চ অল্পের জন্য বেঁচে গেলে প্রাণে রক্ষা পায় ২৬৪ লঞ্চযাত্রী। উজান থেকে নেমে আসা পলি আর তীব্র গতির স্রোতের কাছে অসহায় হয়ে পড়েছে বিআইডব্লিউটিএ, বিআইডব্লিউটিসি ও লঞ্চ মালিক সমিতি। 

গত আড়াই মাসে প্রায় ১২ লাখ ঘন মিটার পলি মাটি ড্রেজিং করে অপসারন করলেও দেশের অন্যতম শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ফেরি ও লঞ্চ চলাচল স্বাভাবিক করতে পারেনি বিআইডব্লিউটিএ। ফলে ফেরি চালু ও বন্ধের খেলায় আটকা পড়েছে গুরুত্বপূর্ণ নৌরুটটি। এমনকি স্রোতের সাথে কিছুতেই যেন পেরে উঠছে না যাত্রীবাহী লঞ্চগুলো। একবার ডানে একবার বামে, কখনো আবার ডুবে যাওয়ার প্রবল আশঙ্কা নিয়ে পদ্মার মাঝখানে স্রোতের তোড়ে একই স্থানে যাত্রীবোঝাই লঞ্চগুলো ঘুরছে। নাব্যতা আর স্রোতের কারণে গত আড়াই মাস ধরে এমন অচলাবস্থা চলছে শিমুলিয়া-কাঠাঁলবাড়ী নৌরুটে। ফলে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে লঞ্চগুলো।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৭ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় লৌহজং টার্নিংয়ের পশ্চিম দিকে কাঁঠালবাড়ি যাওয়ার পথে ২০০ যাত্রী নিয়ে এমভি শ্রেষ্ঠ-২ নামের একটি লঞ্চ দুর্ঘটনায় পড়ে। এর দুই সপ্তাহ পর গত ১১ অক্টোবর শিমুলিয়া-কাঠাঁলবাড়ী নৌরুটের লৌহজং টার্নিংয়ের কাছে ড্রেজারের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ১২০ যাত্রীসহ এম ভি শাহ পরান নামের লঞ্চটির তলা ফুটো হয়ে ডুবে যাওয়ার উপক্রম হয়। এ সময় তাৎক্ষনিকভাবে সারেং বুদ্ধি খাটিয়ে লঞ্চটি পাশের পদ্মার চরে ভিড়িয়ে দিলে প্রাণে বেঁচে যান ১২০ যাত্রী।

বিআইডব্লিউটিএ’র সহকারী পরিচালক শাহাদাত হোসেনেএসব নৌ-দুর্ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, গত ১১ অক্টোবর মাঝিকান্দি থেকে লঞ্চটি শিমুলিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে বেলা ১১টার দিকে পদ্মাসেতু অতিক্রম করে মূল পদ্মায় ঢোকার মুখে ড্রেজার বংশীর সাথে ধাক্কা লেগে লঞ্চটির তলা ফেটে যায়। তিনি জানান, সর্বশেষ গত ১৬ অক্টোবর সকাল ৯টার দিকে ২৬৪ যাত্রী নিয়ে এম ভি মালেক দরবেশ-১ নামের একটি যাত্রীবাহি লঞ্চ শিমুলিয়া ঘাট থেকে ধারণক্ষমতার চেয়ে অতিরিক্ত যাত্রী নিয়ে মাঝিকান্দি-কাঠাঁলবাড়ী ঘাটের উদ্দেশ্যে রওনা হয়ে যায়। পথিমধ্যে মূল পদ্মা অতিক্রম করে পদ্মাসেতুর নিচ দিয়ে যাওয়ার সময় নাব্যতা সঙ্কটের কারনে লঞ্চটির তলদেশ মাটিতে ঠেকে গিয়ে তলা ফেটে যায় এবং লঞ্চটি কাত হয়ে পানি ঢুকতে থাকে। এই পরিস্থিতিতে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে চিৎকারের শব্দ শুনে কোস্টগার্ডের কম্পজিট স্টেশনের সদস্যরা দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে যাত্রীদের উদ্ধার করেন। তা না হলে ব্যাপক প্রাণহানীর শংকা ছিল।