অনলাইনে এত তালেবান সমর্থক!
কবির য়াহমদ, সাংবাদিক ও লেখক
প্রকাশিত: ১২:৩৩ এএম, ১৯ আগস্ট ২০২১ বৃহস্পতিবার আপডেট: ১২:৩৩ এএম, ১৯ আগস্ট ২০২১ বৃহস্পতিবার
উগ্র জঙ্গিবাদী গোষ্ঠী তালেবানরা আফগানিস্তানের ক্ষমতার কাছাকাছি যাওয়ার পর বাংলাদেশের অনলাইন ব্যবহারকারীদের একাংশের মধ্যেও এর রেশ পড়েছে। অনলাইনে ব্যাপক উল্লাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তাদের অনেকের ব্যাখ্যায় মুসলমানরা ক্ষমতায় যাচ্ছে। উল্লাসের গতিপ্রকৃতি দেখে মনে হয় আফগানিস্তানে এতদিন ‘ভিন্ন ধর্মাবলম্বী’ কেউ দেশশাসন করছিল। অথচ বাস্তবতা হচ্ছে দেশত্যাগী প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনিও মুসলমান ছিলেন, এবং তার সরকারের সবাইও একই ধর্মাবলম্বী। যে উগ্রবাদী গোষ্ঠী ক্ষমতা দখলের কাছাকাছি পৌঁছেছে তারাও ধর্মমতে একই ধর্মের অনুসারী। তাহলে কেন এই উল্লাস? কেন তালেবানদের প্রতি অনেকের এমন সমর্থন?
তালেবানরা উগ্রবাদী গোষ্ঠী। আফগানিস্তানে তিন-চতুর্থাংশ অঞ্চলে তারা ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সালে ক্ষমতায় ছিল। এরপর নর্দার্ন অ্যালায়েন্স এবং ন্যাটোর যৌথ অভিযানে ২০০১ সালে তাদের দুর্গের পতন হয়। ক্ষমতায় থাকাকালে তালেবান গোষ্ঠী গণহত্যা, মানবপাচার, নারীর প্রতি সহিংসতা, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ধর্মপালের স্বাধীনতা হরণসহ হত্যা-নির্যাতন, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের ধ্বংস সাধন, বিনোদনমূলক কর্মকাণ্ড নিষিদ্ধসহ সভ্যতা বিবর্জিত নানা কার্যকলাপে লিপ্ত ছিল। নারীদের রক্ষা করার নামে তারা
নারীর ওপর নানা বিধিনিষেধের খড়গ চাপিয়েছিল। ধর্মের নামে নারীরা ছিল তাদের টার্গেট। তাদেরকে যৌনদাসী বানিয়ে রাখাসহ পাকিস্তানের যৌন পল্লিতে বিক্রি করে দেওয়ার মত ঘৃণ্য কর্মকাণ্ড চালাত তারা। নারীকে একা ঘরের বাইরে বেরুতে নিষিদ্ধ করে নারী শিক্ষার ওপর বিধিনিষেধ চাপিয়েছিল। তারা লাইব্রেরির বইপুস্তক পুড়িয়েছিল, বাদ্যযন্ত্র পুড়িয়েছিল, খেলাধুলা নিষিদ্ধ করেছিল, শিশুদের জন্যে পোলিও টিকাও নিষিদ্ধ করে ওই টিকাদানের সঙ্গে সম্পর্কিত স্বাস্থ্যকর্মীদের হত্যার মত ঘৃণ্য কাজও করেছিল। তালেবানি ওই শাসনামলে নারীরা অন্তঃপুরবাসিনী ছিলেন। তারা শিক্ষাদীক্ষা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। তাদের কোন স্বাধীনতাই ছিল না।
দুই দশক আগের ওই তালেবানের হাত থেকে মুক্ত হওয়ার পর পরিবর্তিত বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার মত উপযুক্ত হওয়ার চেষ্টা করে আফগানিস্তান। তালেবানি শাসনমুক্ত আফগানিস্তানের শাসকেরা দুর্নীতির বাইরে না থাকলেও দেশের প্রভূত উন্নতি সাধিত হয়। নারীর ক্ষমতায়নসহ নারীরা ক্রমে তাদের অধিকার পেতে শুরু করে, ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের ওপর তালেবানি দেওয়া বিধিনিষেধ উঠে যায়। বিবিসির ওয়ার্ল্ড অ্যাফেয়ার্স এডিটর জন সিম্পসনের ভাষ্যমতে, ‘তালেবানকে হটানোর পর যেসব সরকার আফগানিস্তানে ক্ষমতায় আসে, তাদের এবং পশ্চিমা দেশগুলোর হয়তো অনেক ব্যর্থতা ছিল। কিন্তু কাবুল তালেবানকে বিতাড়নের পর কাবুল এবং অন্যান্য শহরে বাণিজ্যিক প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছিল। জীবনযাত্রার মান বেড়েছিল। রাস্তায় বেড়েছিল গাড়ির ভিড়। স্কুলগুলো প্রাণ ফিরে পেয়েছিল, বিশেষ করে মেয়েদের স্কুল। তালেবানের অধীনে মেয়েদের লেখাপড়া নিষিদ্ধ ছিল। তালেবান আমলে গান ছিল নিষিদ্ধ, কিন্তু সর্বত্র আবার শোনা যাচ্ছিল গান। নতুন নতুন ভবন তৈরি হচ্ছিল সর্বত্র।’
তবে ১৫ আগস্টের কাবুল পতনের পর আফগানিস্তানের সেই অগ্রযাত্রায় যতিচিহ্ন যে পড়বে সে আশঙ্কা করা হচ্ছে, কারণ তালেবান উগ্রবাদীরা দেশকে পেছনে নিয়ে যাবে। ঔদার্য আর সহনশীলতার বিপরিতমেরুর বাসিন্দা তারা। তাদের ফের ক্ষমতা পুনর্দখলে আফগানরা নিশ্চিতভাবেই পেছনের দিকে হাঁটবে। উগ্রপন্থার মাধ্যমে ধর্মীয় স্বৈরতন্ত্রের এই অনুসারীদের ক্ষমতা দখলের পাঠ সমাপ্তির পর আফগানরা দেশ ছেড়ে পালাচ্ছে। গণমাধ্যমের খবর অনুযায়ী প্রাণনাশের শঙ্কায় দেশ ছাড়তে মরিয়া হয়ে ওঠেছে আফগানরা। বিমানবন্দরে ভিড় বেড়েছে, সীমান্তে ভিড় বেড়েছে। যদিও পাকিস্তান ও ইরান ইতোমধ্যেই তাদের সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে।
তালেবানদের ক্ষমতা দখল যখন আফগানদের কাছে দুঃসহ বিভীষিকাসম তখন উগ্রবাদী এই গোষ্ঠীর অভাবনীয় সাফল্যে বাংলাদেশের একটা বিশাল জনগোষ্ঠীর মধ্যে ব্যাপক উল্লাস লক্ষ্য করা যাচ্ছে। যার প্রকাশ ইতোমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লক্ষ্য করা যাচ্ছে। আফগানিস্তানের নাগরিকেরা যেখানে তালেবানদের ভয়ে তটস্থ সেখানে বাংলাদেশের নির্দিষ্ট একটা আদর্শিকশ্রেণির মানুষের এই প্রতিক্রিয়া উল্লেখের মত। তাদের এই উল্লাসের পেছনে মূল কারণ যে তাদের নিজের ব্যাখ্যায় ধর্মীয় তা বলাই বাহুল্য। ধর্মের নামে দেশকে পিছিয়ে দিয়ে হলেও তারা কথিত খেলাফতের সমর্থক হিসেবে নিজেদের উপস্থাপন করছে। এদের অনেকেই বয়সের হিসাবে হয়ত তালেবানিদের আগের শাসনামল সম্পর্কে অবগত নয়, অথবা তৎকালের প্রযুক্তি ব্যবহারের সীমিত সুযোগের কারণে সে শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে সম্যক ধারণা রাখে না, অথবা ধারণা রাখলেও কথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন তাদের স্বাভাবিক চিন্তাচেতনার ক্ষেত্রকে রুদ্ধ করে দিয়েছে। সে কারণে তারা মানুষ ও মানবিক পরিচয়ের চাইতে কথিত খেলাফতের স্বপ্নে বিভোর হয়ে আছে।
এই সমর্থনের কারণ প্রগতির চাইতে প্রতিক্রিয়াশীলতার বিকাশ, যা গত ক’বছরে বাংলাদেশে ব্যাপকভাবে সম্পন্ন হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক, দু’ভাবেই। বাংলাদেশে ধর্মীয় উগ্রবাদের বিস্তারে কিছু ধর্মীয় বক্তার ব্যাপক প্রভাব তালেবানিদের সমর্থনে প্রভাবক হিসেবে কাজ করেছে। কওমিভিত্তিক মাদ্রাসার শিক্ষকদের প্রভাবে প্রভাবিত সেখানকার শিক্ষার্থীরা। সেই শিক্ষকদের যারা ধর্মীয় বক্তা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছেন তাদের প্রভাবও উল্লেখযোগ্য। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ইউটিউবে গত কয়েক বছর ধরে কিছু ইসলামি বক্তার লক্ষ্যই যেন ছিল নারীকে অপমান আর কথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠার নামে উগ্রবাদী আদর্শের প্রচার। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের বহুল ব্যবহারের মাধ্যমে তারা খুব সহজেই পৌঁছে গেছে মানুষের হাতে-হাতে এবং সেখান থেকে একটা বিশেষ শ্রেণির মানুষের অন্তরেও। ধর্মের প্রতি সংবেদনশীল অধিকাংশ মানুষই, আর এই ধর্মের নামে যখন উগ্রবাদী মতাদর্শের প্রচারের কারণে খুব সহজেই মানুষ বিভ্রান্ত হয়েছে, এবং হচ্ছে।
নারীবিদ্বেষ কিংবা নারীকে অন্তঃপুরবাসিনী করে রাখার যে প্রবণতা সেটা পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার প্রকাশ। ধর্মের নামে এরা এই পুরুষতান্ত্রিকতাকে উসকে দিয়েছে। এতে বিভ্রান্তজনের সংখ্যা বেড়েছে। এই বিভ্রান্তি, ধর্মের নামে মগজধোলাই করার অপচেষ্টা যখন প্রাতিষ্ঠানিক ও অপ্রাতিষ্ঠানিক এবং ব্যক্তিগত পর্যায়ে জোর প্রচারে তখন এরা জনপ্রিয় হয়েছে। নিজেরা ধর্মের অনুশীলনে না থাকলেও এদেশের বিভ্রান্তজনের সকলেই কথিত খেলাফত প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে। তালেবান জঙ্গিরা যখন আফগানিস্তানের ক্ষমতা দখলের চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছায় তখন তারা আমাদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে তাদের বিজয়ের চিহ্ন দেখাতে শুরু করেছে। দেখতে অদ্ভুত হলেও এটাই ঘটছে আমাদের অনলাইন প্ল্যাটফর্মে।
উগ্রবাদী গোষ্ঠী তালেবানদের জন্যে যা ছিল কাবুল বিজয় আদতে তা কাবুলের পতন, কারণ এর মাধ্যমে ওখানে উগ্রবাদের প্রাতিষ্ঠানিকতার পথ রচনা হয়েছে। কাবুল পতনের পর তালেবানরা মঙ্গলবার তাদের প্রথম সংবাদ সম্মেলন করেছে। সংবাদ সম্মেলনে তারা নারীর মর্যাদা নিয়ে ইতিবাচক কথা বলেছে, নারী শিক্ষা নিয়ে ইতিবাচক কথাও বলেছে। বলেছে, নারীর অধিকার নিয়েও, এবং এও বলেছে এটা করা হবে ধর্মের বিধিবিধানের প্রতি সঙ্গতি রেখে। ধর্মীয় বিধিবিধানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নারীর মর্যাদা দান, নারীর অধিকারকে স্বীকৃতি, নারী শিক্ষার প্রতি বাধা না হয়ে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার এবং নারীর ক্ষমতায়ন নিয়ে তাদের যে সকল বক্তব্য এগুলো সাধারণ অর্থে সুন্দর শোনালেও প্রকৃত অর্থে ওগুলো যে তাদের মনের কথা নয় সেটা নিকট ভবিষ্যতেই প্রমাণ হবে। কারণ আমরা দেখে এসেছি দুই দশক আগের তালেবান শাসন, আমরা দেখে আসছি নারীর প্রতি তাদের প্রতিক্রিয়া ও চিন্তাধারা; এগুলো বাদ দিয়ে তারা হুট করে এভাবে ইউ-টার্ন নিয়ে নেবে বা নিতে পারবে সেটা অসম্ভব তাদের জন্যে। নারীর প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি এবং নারী অধিকারকে সম্মান দেওয়া যতটা না মুখের বিষয় তারচেয়ে বেশি অনুশীলনের। এই অনুশীলনের মধ্যে তারা ছিল না, তাই হুট করে এই অনুশীলন তাদের পক্ষে সম্ভবও হবে না।
সংবাদ সম্মেলনে তালেবানদের নারীর প্রতি ইতিবাচক যে দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের যে কথা বলা হচ্ছে এগুলো তাদের মৌলিক পরিবর্তন নয়, এগুলো রীতিমত প্রেসক্রিপশন অথবা কৌশল। কারণ অবৈধভাবে এবং উগ্রপন্থার মাধ্যমে ক্ষমতা দখলের পর বৈশ্বিক স্বীকৃতির জন্যে এই উগ্রবাদী গোষ্ঠীকে অনেক কিছুই বলতে হবে। বলতে শুরুও করেছে তারা। নারীর অধিকার, নারীর মর্যাদা নিয়ে উগ্রবাদী ধারার মানুষেরা সচরাচর যা বলে তা করে না। আর যা করে সেটা অগ্রহণযোগ্য, যদিও তাদের কাছে ওটাই নারীর মর্যাদা। তারা নারীর মর্যাদাকে এভাবেই সংজ্ঞায়িত করে, ওভাবেই অনুশীলন করে।
দেশে-দেশের ‘স্বাধীনতাকামী যোদ্ধারা’ আমাদের সহজাত সমর্থন পাবে, কিন্তু উগ্রবাদীদের ক্ষেত্রে ‘না’। তালেবানদের স্বাধীনতাকামী বলার সুযোগ নেই। ধর্মীয় উগ্রবাদে বিশ্বাসী তারা। সোভিয়েত বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধজয়ের পর নব্বই দশকে তাদের সামনে সুযোগ এসেছিল নিজেদের স্বাধীনতাকামী এবং আফগানপ্রেমি হিসেবে প্রমাণ করার, কিন্তু সেটা না করে তারা ধর্মীয় উগ্রবাদের প্রসার ও অনুশীলনের মধ্যে ছিল। তারা দেশটিতে অভ্যন্তরীণভাবে সন্ত্রাসের বিকাশের সঙ্গে সঙ্গে সারাবিশ্বে সন্ত্রাসের বিস্তার ঘটিয়েছে। আল কায়েদা, আইএসসহ বিশ্বব্যাপী সন্ত্রাসবাদী সংগঠনগুলোর তারাও এর ভগ্নাংশ। তালেবানদের কাছ থেকে প্রশিক্ষিত এবং এদেশের কিছু তালেবান মতাদর্শের লোক বাংলাদেশে নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদ নামের জঙ্গি সংগঠনের জন্ম দিয়েছে। বাংলাদেশে জঙ্গিবাদের যে সমস্যা সেটা এই তালেবান মতাদর্শের দেখানো পথ ধরেই।
বাংলাদেশে নব্বই দশকে হোক আর এই সময়ে হোক ‘আমরা সবাই তালেবান, বাংলা হবে আফগান’ শীর্ষক স্লোগান কিংবা কথিত খেলাফতের যে স্বপ্ন সেটা তালেবানদের উপস্থিতি ও বিকাশ থেকেই। এখনও সুযোগ পেলেই রাষ্ট্রদ্রোহমূলক এই স্লোগান শোনা যায় নানাজনের-নানা সংগঠনের কাছ থেকে। এই স্লোগানদাতাদের সকলেই যে মাদ্রাসাভিত্তিক শিক্ষা গ্রহণকারী তা না, প্রচলিতধারার শিক্ষাব্যবস্থার অধীনের অনেকেই এই মতাদর্শকে ধারণ করে। এ পর্যন্ত দেশে যত জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেছে তাদের সকলে যে মাদ্রাসাভিত্তিকশিক্ষা থেকে আসা সেটা দৃশ্যমান হয়নি। হলি আর্টিজানের জঙ্গি হামলার সঙ্গে জড়িতদের পরিচিতি বলছে মাদ্রাসাই কেবল নয় বেসরকারি পর্যায়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতেও এদের উপস্থিতি রয়েছে। অর্থাৎ তালেবান মতাদর্শের মানুষেরা সবখানে রয়েছে।
তালেবানদের পুনরুত্থানকে এক হাজার মাইলের স্থানিক দূরত্বে বসেও যারা ‘কলেমার পতাকার বিজয়’ হিসেবে দেখতে চায় আফগানিস্তানে প্রাণনাশের শঙ্কায় থাকা মানুষদের পড়িমরি করে পালানোর দৃশ্যও তাদের আন্দোলিত করে না। বিপন্ন ও অসহায় মানুষদের মুখ তাদের খেলাফতের স্বপ্নকে সামান্য ছুঁয়ে যায়নি। মগজধোলাইয়ের এই প্রতিক্রিয়া এমনই আসলে! তাই তারা অনলাইনে উল্লসিত। সংখ্যায় তারা যতই হোক তারা যে দেশদ্রোহী তা বলাই যায়, কারণ ধর্মরাষ্ট্র ধারণাকে অস্বীকার করেই একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশ। জাতিতে আমরা যখন বাঙালি তখন বাংলাদেশি বাঙালিত্বকে অস্বীকার করে নিজেদের তালেবান ভেবে বাংলাদেশকে আফগানিস্তান বানানোর স্বপ্ন অগ্রহণযোগ্য, অপ্রাসঙ্গিক এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধও। তাই তালেবানদের জয়ে উল্লসিতদের এই উল্লাসকে হালকাভাবে না দেখে গুরুত্ব দিয়েই দেখা দরকার।
দেশপ্রেমের চেতনাবিরুদ্ধ যারা তারা সংখ্যায় কত তা না গুনে তাদের ধৃষ্টতা ও রাষ্ট্রদ্রোহকে আমলে নেওয়া উচিত।