সংক্রমণ পরিস্থিতি ও টিকা-দুইয়ের ওপর নির্ভর করবে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
প্রকাশিত: ০২:৪০ পিএম, ১৫ আগস্ট ২০২১ রোববার আপডেট: ০৩:১০ পিএম, ১৫ আগস্ট ২০২১ রোববার
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান কবে নাগাদ খোলা হতে পারে সে বিষয়ে পরিষ্কার করে বলা যাচ্ছে না: শিক্ষামন্ত্রী
করোনাভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সরকার সবসময়ই ভাবছে এবং পরিকল্পনাও করছে। কিন্তু কবে নাগাদ খোলা হতে পারে সে বিষয়ে পরিষ্কার করে বলা যাচ্ছে না। এসব কথা বলেছেন শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি।
তিনি জানান, সংক্রমণ হার কমে যাওয়া আর সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হলেই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার ব্যাপারে এগুনো যাবে। ব্যাপকহারে করোনারোধী টিকা কার্যক্রম শুরু হওয়ায় শনাক্ত হার ৫ শতাংশে না নামলেও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া হতে পারে বলে ইঙ্গিত দেন শিক্ষামন্ত্রী।
রবিবার (১৫ আগস্ট)রাজধানীর সেগুন বাগিচায় আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইন্সটিটিউটে এক অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন শিক্ষামন্ত্রী।
দেশে করোনা শনাক্ত হয় গত বছরের ৮ মার্চ। ভাইরাসের বিস্তার রোধে গত বছরের ১৭ মার্চ থেকে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে সরকার। পরে দফায় দফায় তা বাড়িয়ে আগামী ৩১ আগস্ট পর্যন্ত করা হয়েছে।
জনজীবন স্বাভাবিক রাখা এবং অর্থনীতির চাকা সচল রাখার লক্ষ্যে এরই মধ্যে নানা ধরনের বিধিনিষেধ তুলে নিয়েছে সরকার। এর পরিপ্রেক্ষিতে চালু হয়েছে শিল্প কারখানা,গণপরিবহন এবং খুলে দেয়া হচ্ছে পর্যটন কেন্দ্রগুলো।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলবে কবে, এমন প্রশ্নে দীপু মনি বলেন, ‘আমরা সবসময় ভাবছি, আজকে নতুন করে ভাববার কিছু নেই, আমরা আগে থেকেই ভাবছি, পরিকল্পনা করছি। আর সেগুলো বাস্তবায়ন করছি। যেখানে যতটুকু সম্ভব, পরিস্থিতি যতখানি এলাও করছে আমরা তা বাস্তবায়ন করার চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘এখন করোনার যে সংক্রমণের হার, মৃত্যুর হার। সমস্ত কিছু মিলিয়ে যে অবস্থা, সে বিবেচনায় কবে নাগাদ আমরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দিতে পারব সেটি বলার কোনো সুযোগ আমাদের কাছে নেই আসলে।
‘করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর হার এখন নিম্নগামী। কাজেই আমরা আশা করি, সবাই যদি যথাযথভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলি তাহলে মৃত্যুর হার আরও নেমে যাবে। বিশেষজ্ঞরা যেমন বলেন যে শনাক্ত হার শতকরা ৫ ভাগ বা তার কম হলে তখন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেয়া যায়।’
তিনি বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও ঘোষণা দিয়েছেন আমাদের শিক্ষার্থীদের বিশেষ করে ১৮ বছরের ঊর্ধ্বে যারা আছেন তাদের সকলকে যাতে আমরা টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পারি। শিক্ষক কর্মচারীদের টিকা দেয়ার কাজ প্রায় সম্পন্ন করে ফেলেছি আমরা।
‘আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী যারা তাদের অধিকাংশকেও টিকা দেয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। কাজেই বাকি শিক্ষার্থীদেরও যদি আমরা টিকার আওতায় নিয়ে আসতে পারি, সেক্ষেত্রে সংক্রমণের হার শতকরা ৫-এ না নামুক, একটা যথেষ্ট পরিমাণে নামলেই আমরা একটা সিদ্ধান্ত নেব।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের গত বছরের অভিজ্ঞতা বলে নভেম্বর-ডিসেম্বরে সংক্রমণ অনেক কমে গিয়েছিল। এ বছরও যদি সেটা হয় তাহলে সে সময়ে আমরা ভেবেছি এসএসসি ও এইচএসসি পরীক্ষা নিতে পারব ইনশাআল্লাহ। সে অনুযায়ী আমরা পরীক্ষার সময় সূচি সবকিছু ঠিক করেছি। আর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও খুলে দেয়া সম্ভব হবে। তবে সবকিছুই নির্ভর করছে করোনা পরিস্থিতির ওপর।’
তিনি বলেন, ‘খোলার পরে বিশেষ করে মাধ্যমিকের যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান রয়েছে সেখানে একবারে যে ৬ দিন কিংবা পাঁচ দিনের জন্য নিয়ে যাব তা না, আমরা ধাপে ধাপে নিয়ে যাব।’
কত সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীরা পুরোপুরি টিকার আওতাভুক্ত হবে এমন প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীর সংখ্যা কিন্তু অনেক। যদি শুধু জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ধরি, সেখানেই প্রায় ২৮ লাখ। অন্যান্য সব বিশ্ববিদ্যালয় আছে সেখানে সাত-আট লাখ শিক্ষার্থী আছে।
তিনি বলেন ‘এখন টিকা দেয়ার ব্যাপক কার্যক্রম শুরু হয়েছে। আমরা সেই অর্থে খুবই কম দিতে পেরেছি। এই দেয়া কত সময় লাগতে পারে তা এই মুহূর্তে বলতে পারছি না। কারণ শিক্ষার্থীদের অগ্রাধিকারের বাইরে আরও নানা গ্রুপ আছে। তবে সারা দেশে টিকা কেন্দ্রে যে উপচে পড়া ভিড় সেটা আমাদের আশান্বিত করে। আমরা খুব শীঘ্রই সবাইকে টিকার আওতায় নিয়ে আসব।’