অপরাজেয় বাংলা :: Aparajeo Bangla

সরকারি স্কুলের শ্রেণিকক্ষ ধান ব্যবসায়ীর দখলে! 

সুজন মোহন্ত, কুড়িগ্রাম 

প্রকাশিত: ০৪:৫৯ পিএম, ৫ আগস্ট ২০২১ বৃহস্পতিবার   আপডেট: ০৫:০০ পিএম, ৫ আগস্ট ২০২১ বৃহস্পতিবার

করোনার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগ নিয়ে কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার সাতদরগাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কয়েকটি শ্রেণিকক্ষ দখল করে নিয়েছেন এক ধান ব্যবসায়ী । সেগুলো এখন  ধানের গুদাম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে। এমনকি শ্রেণিকক্ষের ভেতর ধান মাপা বাটখারা বসিয়ে রীতিমত ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়েছে বিদ্যালয়টি।

বুধবার (৪ আগস্ট) সরেজমিন উপজেলার থেতরাই ইউনিয়নে অবস্থিত সাতদরগাহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, বিদ্যালয়টির তিনটি শ্রেণিকক্ষে শিশুদের বসার বেঞ্চ গুটিয়ে রেখে সেখানে ধান মজুত রাখা হয়েছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, করোনাকালীন সময়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার সুযোগে প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলামের ভাগ্নে ধান ব্যাবসায়ী কামরুজ্জামান নিজের ব্যবসারধান সংরক্ষণের জন্য বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ ব্যবহার করে আসছেন। তবে এ ব্যাপারে অবগত নন বলে দাবি করেছেন বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান।

বৃহস্পতিবার (৫ আগস্ট) সকালে এ নিয়ে প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা ছিল না। শারীরিক অসুস্থ্যতার জন্য আমি কিছু দিন বিদ্যালয়ে যেতে পারিনি। পরে জানতে পেরে আমি নিজে উপস্থিত থেকে বুধবার (৪ আগস্ট) রাতেই ধান সরানোর ব্যবস্থা নিয়েছি।’

বিদ্যালয় শ্রেণি কক্ষ ধান ব্যবসায়ী ব্যবহার করতে পারেন কিনা, এমন প্রশ্নের জবাবে প্রধান শিক্ষক বলেন,‘ আমি জানতে পারছি কামরুজ্জানের বাড়ির ধানে পোকার আক্রমন হওয়ায় তারা সেগুলো শুকানোর জন্য বিদ্যালয় মাঠ ব্যবহার করছিলেন। এর মধ্যে বৃষ্টি শুরু হলে তারা শ্রেণি কক্ষে ধানগুলো রেখেছিলেন।’

তবে প্রধান শিক্ষকের এমন দাবির সত্য নয় বলছেন স্থানীয়রা। কয়েকজন জানান, বেশ কয়েক সপ্তাহ থেকে ওই বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ধান মজুদ করে তা বিক্রি করে আসছেন ধান ব্যাবসায়ী কামরুজ্জামান। এমনকি শ্রেণি কক্ষের ভেতর তিনি ধান মাপার পাল্লাও স্থাপন করেছেন।

স্থানীয় সংবাদকর্মী সুভাষ চন্দ্র জানান, বুধবার (৪ আগস্ট) তিনি নিজে ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে তিনটি শ্রেণিকক্ষে ধান মজুদ দেখেছেন। কক্ষের ভিতর ধান মাপার পাল্লাও দেখেছেন তিনি। পরে এ নিয়ে প্রধান শিক্ষকের সাথে মোবাইলে কথা হলে সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি দ্রুত ধান সরানোর জন্য ওই ব্যবসায়ীকে বলেন।

এ ব্যাপারে জানতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. শহীদুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন,‘ করোনাকালীন সময় বিদ্যালয় বন্ধ থাকলেও সরকারি নির্দেশ মতে বিদ্যালয় খোলার জন্য সার্বক্ষণিক প্রস্তুতি রাখতে বলা হয়েছে। এরপরও বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষে ধান মজুদ রাখতে দেওয়া ওই প্রধান শিক্ষকের সম্পূর্ণ দায়িত্বে অবহেলার শামিল। আমি ওই রোস্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা (এটিইও) ও প্রধান শিক্ষকের সাথে এখনই কথা বলছি। এ নিয়ে প্রধান শিক্ষককে তলব করা হবে।